জিডিপি
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন কতটা বাস্তবসম্মত?
উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য যে তিনটি আবশ্যিক শর্ত পরিপালন করতে হয় বাংলাদেশ তার সবগুলোই বেশ ভালোভাবে পূরণ করেছে। এরপর কয়েক বছর পর্যবেক্ষণে ছিল বাংলাদেশ।
কৃষি খাতের পুনর্মূল্যায়ন ও কৃষি কমিশন গঠন প্রসঙ্গে
উৎপাদনে আধুনিক উপকরণ ব্যবহার ও ভূমি উন্নয়নে এদের আগ্রহ থাকে কম। প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রাপ্তি ও কৃষি যন্ত্র সংগ্রহে এদের প্রবেশাধিকার কম। ফলে তাদের প্রতি ইউনিট জমির উৎপানে প্রবৃদ্ধির হার কম। অপরদিকে বড় ও মাঝারি কৃষকগণ ক্রমাগতভাবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষাবাদে। তারা ক্ষয়িষ্ণু কৃষক। চাষাবাদে তাদের বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে তাদের উৎপাদন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগ আহরণের জন্য অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন
বিনিয়োগ ব্যতীত কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন সম্ভব নয়। কোনো দেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ হলেও সেই সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। প্রাকৃতিক সম্পদকে রূপান্তর এবং ক্রমাগত পরিবর্তনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উপযোগিতা বাড়াতে হয়। বিশ্বে এমন অনেক দেশ আছে যারা প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ; কিন্তু সেই সম্পদ ব্যবহারের জন্য যে আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হয় তা নেই বলে বিদেশি কোম্পানির কাছে প্রাকৃতিক সম্পদ ইজারা দিতে হয়। বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নেয়। আফ্রিকার অনেক দেশে এমন পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করা গেছে। তাই মর্যাদাবান কোনো দেশ তার নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদ অন্য কোনো দেশের জিম্মায় দিতে চায় না।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ঝুঁকিতে বিশ্ব অর্থনীতি
সৃষ্টির সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাস আদম সন্তানের রক্তে রঞ্জিত। নিজেদের মহত্ব প্রকাশের দরুন বলি হয়েছে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ। ক্ষমতার অতি উচ্চ আকাঙ্ক্ষা বা অপরের ওপর নিজের কর্তৃত্ব স্থাপন করতে যুগে যুগে মরিয়া হয়ে ছিল শাসক শ্রেণি। যার ফল লাখ লাখ নিরীহ মানুষের রক্তে জমিন রঙিন হওয়া। যুদ্ধের সূচনা শাসক শ্রেণির হাতে হলেও প্রাণনাশ ঘটে অতি সাধারণ মানুষের। বর্তমান বিশ্বের ইতিহাসও এই ধারাবাহিকতার বাইরে নয়। এরই মধ্যে বিশ্ববাসী দুটো মহাযুদ্ধের ধ্বংসলীলার সাক্ষী হয়েছে।
আসন্ন বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে
বিশ্বব্যাপী জাতীয় বাজেটের অন্তত ২০ শতাংশ বা জিডিপির ৬-৮ শতাংশ শুধু শিক্ষার জন্য বরাদ্দের কথা বলা হয়; কিন্তু আমাদের দেশে বরাবরই প্রয়োজনের তুলনায় কম বরাদ্দ দেওয়া হয় শিক্ষা খাতে। বিশ্বের চ্যালেঞ্জিং অর্থনীতির মুখে আমাদের মতো বিশাল জনসংখ্যার দেশে বাজেট করা কঠিন কাজ। অর্থনীতির প্রচলিত নিয়মে একে বাঁধা যায় না। রাষ্ট্রের সামাজিক, অর্থনৈতিক, নৈতিক, মেধা মননের বিকাশের ক্ষেত্রে যে কয়েকটি খাত রয়েছে তার মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। এ খাতটি একটি রাষ্ট্রে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিকের মেধা, চিন্তা, শক্তি স্বাভাবিক জীবন বোধের জাগরণের সাথে সম্পৃক্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্যভাবে এ খাতের উন্নয়ন কল্পে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে তা থেকে রাষ্ট্র অনেক দূরে। বড় সমস্যা আমাদের শিক্ষার উন্নতি কল্পে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ খুবই কম। অথচ আমাদের পাশ্চাত্য দেশ ভারত, নেপাল, ভূটান, শ্রীলঙ্কায় শিক্ষা খাতে বরাদ্দের পরিমাণের চেয়ে বাংলাদেশে অত্যন্ত কম।
আগামী বাজেটে কৃষি খাতের অগ্রাধিকার প্রয়োজন
নয়া বাজেট আসন্ন। আগামী জুন মাসের ২ তারিখ উপস্থাপিত হতে পারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। এখন বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে জানা গেছে যে, আগামী বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের মূল বাজেটের তুলনায় তা হবে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম টাকার অঙ্কে বাজেটের আকার হ্রাস পাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এ বাজেট হবে সংকোচনমূলক। চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আহরণের ধীরগতি ও বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাবহেতু একটি আঁটসাঁট বাজেটই আমাদের কাম্য।
ভূরাজনৈতিক এবং ভূঅর্থনৈতিক উত্তেজনা এবং ঝুঁকি নিয়ে একটি গভীর পর্যালোচনা
বর্তমান বিশ্ব একটি অভূতপূর্ব ভূরাজনৈতিক এবং ভূঅর্থনৈতিক অস্থিরতার দিকে এগিয়ে চলেছে, যা পরিবর্তনশীল জোট, সম্পদ প্রতিযোগিতা এবং অর্থনৈতিক বিভাজনের দ্বারা চিহ্নিত। বিশ্বব্যাপী এসবের প্রভাব কীরকম হতে পারে তার একটি বিশদ বিশ্লেষণ নিচে দেওয়া হলো
বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করুন
পুঁজিবাজার একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির দক্ষতা প্রকাশ করে। জনগণ, সরকার ও পুঁজিপতিদের মধ্যে একটা সমন্বয় গড়ে তোলে। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই পুঁজিবাজারের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। এর জন্য রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কতিপয় রাঘববোয়ালদের বারবার দায়ী করা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করার জন্য অনেক ধরনের আলাপ-আলোচনা হয়েছে, অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে; কিন্তু কোনো পরিকল্পনাই শেষ পর্যন্ত কাজে লাগেনি।
মে দিবসে জোরালো হোক কর্মসংস্থানের দাবি
শ্রমিকের হাতুড়ির আঘাতে সভ্যতা এগিয়েছে। শ্রম দিলেই শ্রমিক- এটা যেমন ঠিক, আবার শ্রমিক বলতে প্রথমে শিল্প শ্রমিকের ধারণা চলে আসে; কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের বিস্তৃতি আরও অনেক ব্যাপক। কেননা পৃথিবীর সব মানুষই কোনো না কোনো কাজ করে আর যে কোনো কাজ করতে গেলেই প্রয়োজন হয় শ্রমের। এই নিরিখে পৃথিবীর সব মানুষকেই শ্রমিক বলা যায়। আবার মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী শ্রমিক শ্রেণি হলো সবচেয়ে আধুনিক এমন এক শ্রেণি, যারা সমাজবিপ্লবে নেতৃত্ব দেবে। কার্ল মার্কস কারখানার শ্রমিকদের বিপ্লবী শ্রেণি হিসেবে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন। কেননা তারা শৃঙ্খলমুক্ত স্বাধীন শ্রমিকশ্রেণি হিসেবে দাস ব্যবস্থার বিপরীতে উঠে এলেও তারা কারখানার এক ছাদের তলায়, একই স্বার্থে একটি সংঘটিত শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
দেশে শ্রম আইন থাকতে বাস্তবায়নে অবহেলা কেন?
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নেপথ্যের তিন চালিকাশক্তি হলো- কৃষিতে উচ্চ ফলনশীল ধান, শ্রমনিবিড় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প এবং বিদেশে কর্মসংস্থান থেকে রেমিট্যান্স। আবার এ তিনের মুখ্য চালক শ্রম এবং শ্রমজীবী মানুষ। তবে উন্নয়নের হিস্যায় এ শ্রমজীবী মানুষের ভাগ খুবই কম। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক কোনো ক্ষেত্রেই মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশের শ্রমিক-কর্মচারীরা এখনো বাঁচার মতো মজুরি, আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারসহ অন্যান্য ন্যায়সংগত অধিকার, সামাজিক মর্যাদা ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।