দক্ষিণ এশিয়া
দেশের রাজনীতিবিদরা কেন গণমানুষের সংস্কৃতির স্তর উন্নত করতে চায় না?
এটা সবাই বলবেন যে, সংস্কৃতির মান উঠছে না বটে, তবে নামছে কিন্তু ঠিকই। ওদিকে আবার সংস্কৃতির কথা যে বলা হয় না তা নয়, তবে তেমন গুরুত্ব দিয়ে বলা হয় না যেভাবে বলা দরকার। আসলে সংস্কৃতি কিন্তু সভ্যতার চেয়েও বড় এবং গভীর। সংস্কৃতি বড় তার বিস্তৃতির দিক থেকে। কারণ সংস্কৃতির ভেতর অনেক কিছু, প্রায় সবকিছুই থাকে। অর্থনীতিই থাকে ভিত্তিতে; কিন্তু ভূগোল, মানবিক সম্পর্ক, প্রকৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া, মূল্যবোধ, আচার-আচরণ, শিক্ষা, খাদ্যাভ্যাস, শিল্প-সাহিত্য কোনো কিছুই বাদ থাকে না। সভ্যতাও কিন্তু সংস্কৃতিরই অংশ। এককথায় সংস্কৃতি হচ্ছে একটি জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয়। এ পরিচয় অন্য যে কোনো পরিচয়ের তুলনাতে অধিক বিশ্বাসযোগ্য। শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলা হয়ে থাকে, প্রকৃত মেরুদণ্ড কিন্তু শিক্ষা নয়, সংস্কৃতিই। শিক্ষা নিজেই সংস্কৃতির অংশ হওয়ার দাবিদার।
জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশন, ডিম নিক্ষেপ ও সচেতন নাগরিকদের কয়েকটি প্রশ্ন
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে বসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (UNGA) বার্ষিক অধিবেশন। পৃথিবীর প্রায় সব রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা সরকারপ্রধান সেখানে সমবেত হন। রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজেদের দেশের অবস্থান, সংকট ও অগ্রাধিকার তুলে ধরেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন এবং নানা বৈঠকে অংশ নেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই সফর ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব সরকারই এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।
হঠাৎ কেন নেপালে তরুণদের রক্তাক্ত বিক্ষোভ, রহস্য কী?
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নেপাল ভৌগোলিক বৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য সুপরিচিত হলেও রাষ্ট্র হিসেবে এর যাত্রাপথ মোটেও মসৃণ নয়। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটি নানা রাজনৈতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গেছে। কখনো রাজতন্ত্র, কখনো গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা, আবার কখনো সামরিক প্রভাব- নানা ধাপ অতিক্রম করতে হয়েছে। ২০০৮ সালে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হওয়ার পর নেপালবাসী এক নতুন ভবিষ্যতের আশায় বুক বেঁধেছিল। জনগণের প্রত্যাশা ছিল, বহু বছরের অস্থিরতার পর এবার দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হবে, দুর্নীতি কমবে, উন্নয়ন হবে সমভাবে সবার জন্য, আর রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবে স্বচ্ছতা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেই প্রত্যাশা এখনো পূরণ হয়নি।
প্রত্যেক নাগরিকের জন্য শক্তিশালী মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করা প্রয়োজন
সংযোগ: একটি অপরিহার্য প্রয়োজন, বিলাসিতা নয় বাংলাদেশের ডিজিটাল যাত্রা শুধু প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধি নয়। ডিজিটাল যাত্রার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত দেশের মানুষ। দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষকে ডিজিটাল সেবায় সমান প্রবেশাধিকার, সমান সুযোগ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশে ডিজিটাল যাত্রা এগিয়ে চলেছে।
বিএনপি কেন পিআরের বিরুদ্ধে?
পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে বিএনপি হেরে যাবে আর জামায়াত ক্ষমতায় আসবে- এরকম ধারণা হয়তো অনেকের মনে আছে। সত্যি কি তা-ই এবং বিএনপি কি এ কারণেই পিআর পদ্ধতির বিরোধী?
তদারকি না করে আর্থিক খাতে অতিরিক্ত লাইসেন্স প্রদানই আসল সমস্যা
২০২৫ সালে প্রায় ৪৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের জিডিপি নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম অধিক-লাইসেন্সপ্রাপ্ত আর্থিক খাতের দেশ। বর্তমানে দেশে রয়েছে ৬১টি তফসিলি ব্যাংক, ৩৮টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ৭৫০টিরও বেশি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, এর পাশাপাশি ১৩টি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ৯টি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার এবং ১২টি পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর। এসব প্রতিষ্ঠান চারটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে পরিচালিত- বাংলাদেশ ব্যাংক, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। তবুও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আশানুরূপ হয়নি। নগরাঞ্চলের একটি বড় অংশসহ জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো আনুষ্ঠানিক আর্থিক সেবার বাইরে।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের বিকল্প নেই
শিক্ষার ভিত্তি প্রাথমিক শিক্ষা। আর দেশের প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা কী তা একটি মাত্র তথ্যেই জানা যায়- দেশে অর্ধেক প্রাথমিক স্কুলেই প্রধান শিক্ষক নেই। আজ ১৬ জুলাই (বুধবার) সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৬৫ হাজারের বেশি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৩৪ হাজারের বেশি পদই শূন্য। অর্থাৎ প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে সাড়ে ২৪ হাজারের মতো সহকারী শিক্ষকের পদও ফাঁকা।
এক কিডনির গ্রাম
এতই মর্মান্তিক এই খবর যে, শুনলেই চমকে উঠবেন এমন ভয়ানক ব্যাপারও ঘটে এই দুনিয়ায়! তাও এই বাংলাদেশে! পৃথিবীতে যুদ্ধ-হানাহানি-রক্তপাত হয় যা মানুষকে ব্যথিত করে। যুদ্ধে-দুর্ভিক্ষে-বন্যায়-খড়ায়-নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে-দুর্বিপাকে অসংখ্য মানুষ মারা যায় তাও মানুষকে কাঁদায়; কিন্তু যদি শুনেন একটি গ্রাম চিহ্নিত হয় ‘এক কিডনির গ্রাম’ হিসেবে তাতে আপনি শুধু হতবাকই হবেন না, মানুষের এই সভ্যতা নিয়েই আপনি চিন্তিত হবেন।
দেশে শ্রম আইন থাকতে বাস্তবায়নে অবহেলা কেন?
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির নেপথ্যের তিন চালিকাশক্তি হলো- কৃষিতে উচ্চ ফলনশীল ধান, শ্রমনিবিড় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প এবং বিদেশে কর্মসংস্থান থেকে রেমিট্যান্স। আবার এ তিনের মুখ্য চালক শ্রম এবং শ্রমজীবী মানুষ। তবে উন্নয়নের হিস্যায় এ শ্রমজীবী মানুষের ভাগ খুবই কম। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, অর্থনৈতিক কোনো ক্ষেত্রেই মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশের শ্রমিক-কর্মচারীরা এখনো বাঁচার মতো মজুরি, আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ অনুযায়ী অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারসহ অন্যান্য ন্যায়সংগত অধিকার, সামাজিক মর্যাদা ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।
চীন-ভারত ঘনিষ্ঠতা, ট্রাম্পের উদ্বেগ ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণ
২০২৫ সালে এসে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এমন এক মোড় নিয়েছে যেখানে ‘কৌশলগত অবিশ্বাস’ নতুন ধরনের ‘অস্থায়ী মিত্রতা’ তৈরি করছে। চীন ও ভারতের মধ্যকার ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা, মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ব্যবহৃত হওয়া, আর দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব- এই সমীকরণগুলো দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। চীন ও ভারতের মধ্যে ২০২০ সালের গ্যালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিল তিক্ত; কিন্তু বিগত এক বছরে ব্রিকস (BRICS) শীর্ষ বৈঠক, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO), এবং দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত আলোচনা চীন-ভারত সম্পর্ককে নতুন এক ‘পরিকল্পিত সহাবস্থান’-এ পরিণত করছে।