বিএনপি
পাঠদান বন্ধ করে বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়
বিদ্যালয় পাঠদানের জায়গা, রাজনৈতিক কর্মসূচির নয়; কিন্তু এমনই ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ইউনিয়নে। একই দিনে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। গতকাল (২৮ আগস্ট) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সদস্য নবায়ন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন। গত বুধবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কর্মসূচির কারণে পাঠদান বিঘ্নিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে কোনো প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করেনি।
বিএনপি কেন পিআরের বিরুদ্ধে?
পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে বিএনপি হেরে যাবে আর জামায়াত ক্ষমতায় আসবে- এরকম ধারণা হয়তো অনেকের মনে আছে। সত্যি কি তা-ই এবং বিএনপি কি এ কারণেই পিআর পদ্ধতির বিরোধী?
জাতীয় নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক কৌশলের ফাঁদে যেন না পড়ে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। সেই নির্বাচন যাতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশ্নাতীত গ্রহণযোগ্যতা পায় সেটাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। বিগত সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এ নিয়ে জনগণ বিগত সরকারের ওপর প্রচণ্ডরকম ক্ষুব্ধ ছিল। তাই তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে ব্যাপক সমর্থন দিয়েছিল। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন জরিপের সত্য-মিথ্যা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে ভোট দেবেন ১২ শতাংশ মানুষ। জামায়াতকে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিকে ভোট দেবেন ২ দশমিক ৮০ শতাংশ মানুষ। আর যদি আওয়ামী লীগ ভোটে অংশ নিতে পারে তাহলে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ তাদের ভোট দেবেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি পাবে শূন্য দশমিক ৩০ এবং অন্যান্য ইসলামী দল শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ ভোট। সম্প্রতি ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) একটি জরিপে উঠে এসেছে এই চিত্র। এতে গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণি-পেশার ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষের মতামতের প্রতিফলন ঘটেছে।
গুপ্ত রাজনীতির অপচর্চা
বাংলার রাজনীতিতে যেন নতুন এক নাট্যমঞ্চের জন্ম হয়েছে। একসময় রাজনীতি মানেই ছিল প্রকাশ্য লড়াই- কে কত জোরে স্লোগান দিতে পারে, কে কত বড় মিছিল নামাতে পারে, কে কতটা উঁচু কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ কিংবা ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে জনতাকে মাতিয়ে তুলতে পারে। তখন রাজনীতিকরা পরিচয় লুকাতেন না, বরং গর্ব করতেন- ‘আমি অমুক দলের কর্মী, আমি অমুক মতের অনুসারী।’ কিন্তু সময় বদলেছে। সেই সরল ঘোষণা আজ সেকেলে মনে হয়। রাজনীতির মঞ্চে এখন নতুন ঢেউ- প্রকাশ্যে যা নয়, আড়ালে সেটাই আসল; নাম তার গুপ্ত রাজনীতি।
পাথর উদ্ধার করা যাচ্ছে, লুটপাট ঠেকানো গেল না কেন?
সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর লুট হয়ে যাওয়ার পর সারা দেশে হৈচৈ পড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। এটা শুধু দেশের সরকারি সম্পদ লুট হয়ে যাওয়ার কারণে নয় নিশ্চয়ই, দেশের সৌন্দর্য চুরি হয়ে যাওয়ার কারণেও অনেকটা। অসংখ্য পর্যটক ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে গেছেন। সিলেটে যারাই ঘুরতে যান, যে দুচারটা স্থান অবশ্যই পরিদর্শন করেন তার মধ্যে সাদা পাথর একটি। যারা ইতোপূর্বে ভোলাগঞ্জ ঘুরে এসেছেন, ছবি তুলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সে সব ছবি আপলোড করে লিখেছেন- এসব এখন শুধুই স্মৃতি! মানুষের সম্পদ লুট করে নিলেও হয়তো এতটা আহত হয় না যতটা স্মৃতি লুট করে নিলে হয়। আজকের বাংলাদেশে সবই লুট হয়ে যাচ্ছে- সম্পদ, সৌন্দর্য ও স্মৃতি!
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতির অবসান হোক
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কথা দিয়ে লেখা শুরু করি; তিনি বলেছেন, ‘আমরা এমন নির্বাচন চাই, যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।’ তার মতে এই নির্বাচন হবে এমন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ যা জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা, মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার প্রতিটি কথায় বিন্যস্ত ছন্দের শৈল্পিক দোলা থাকা, শ্রোতা মুগ্ধ হয়, ভক্তের সংখ্যা বাড়ে; কিন্তু বিশ্বাস হয় না।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে গণআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি
পিতা চলে গেলেই পিতৃতান্ত্রিকতা যে বিদায় হয়, তা নয়। পিতৃতান্ত্রিকতার অবসান ঘটানোর জন্য একটি সামাজিক বিপ্লব আবশ্যক। আমাদের দেশে সে বিপ্লব আজও ঘটেনি। মানুষের সঙ্গে মানুষের অধিকারের সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণও যে সহসা ঘটবে এমন আশা নেই। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর নিশ্চয়তা-প্রাপ্তি দূরের সুখস্বপ্ন বটে। আর সামাজিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যেহেতু ব্যক্তি মালিকানার জায়গাতে সামাজিক মালিকানার প্রতিষ্ঠা ঘটেনি, তাই বৈষম্য উৎপাদনের প্রকৃত ক্ষেত্রটি অক্ষুণ্নই রয়ে গেছে।
এক বছরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আদৌ ‘সরকার’ হয়ে উঠতে পেরেছে কি?
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির ঠিক দুদিন আগে গত ৩ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণার জন্য আয়োজিত সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির একাধিক নেতার বক্তব্যে গত এক বছরে নানা ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তিজনিত নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশিত হয়। অথচ এনসিপিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান স্টেকহোল্ডার বা অংশীজন হিসেবে মনে করা হয়। সরকার নিজেও বিভিন্ন সময় বুঝিয়ে দিয়েছে যে, এই দলটির প্রতি তাদের বিশেষ পক্ষপাত বা সমর্থন রয়েছে। এর একটি কারণ হয়তো এই যে, এনসিপি গঠিত হয়েছে এমন কিছু তরুণের উদ্যোগে যারা জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন।
চাঁদাবাজি: এক উত্তরাধুনিক বিপ্লবী সংস্কৃতি
‘চাঁদাবাজি’- শব্দটি শুনলেই মনে এক মিশ্র অনুভূতি জাগে। যেন এটি বাংলার নিজস্ব এক লোকজ ঐতিহ্য যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘাম, রক্ত আর রাজপথের ধুলোয় মিশে আজকের আধুনিক সমাজে এক স্বতন্ত্র রূপ নিয়েছে। একসময় লাঙল ছিল কৃষকের অস্ত্র, আর এখন তার জায়গা দখল করেছে হল গেট চাঁদা, মিছিল চাঁদা, ইফতার পার্টি চাঁদা এবং নতুন সংযোজন- আন্দোলনের চাঁদা।