পাকিস্তান
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে প্রভাব ফেলবে
২০২৫ সালের ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১০৮টি দেশের ওপর ১১ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত পারস্পরিক শুল্ক (Reciprocal Tariff) আরোপের ঘোষণা দেন। এটি বিশ্বের সব দেশের জন্যই এক ধরনের ধাক্কা হিসেবে এসেছে তা দেশটির বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ যতই হোক না কেন কিংবা সেই দেশের অর্থনীতির আকার যত বড় বা ছোট হোক না কেন। এখনো পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মোট রপ্তানি ছিল ৩ দশমিক ১২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানি ছিল ৪ দশমিক ১১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই সেবা খাতে কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে। প্রমাণস্বরূপ ২০২৪ সালে সেবা রপ্তানি ছিল ১ দশমিক ১৫ ট্রিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল শূন্য দশমিক ৮৪১ ট্রিলিয়ন ডলার। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোথাও সেবা খাতকে উল্লেখ করেনি অথচ বিশ্বব্যাপী সেবা রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে এবং ভবিষ্যতের বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য
আমাদের যত যত সমস্যা ও ব্যর্থতা তার পেছনে যে দারিদ্র্য রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে কী? যেমন, পরিবার পরিকল্পনা। ছোট পরিবার সুখী পরিবার-এটা সত্য; কিন্তু তারও চেয়ে বড়ো সত্য হচ্ছে ধনী পরিবার মানেই ছোট পরিবার। পরিবার ছোট হলেই যে সুখী হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অসুখ-বিসুখ, ঝগড়া-কলহ, মনোমালিন্য, অধিক আদরে ছেলে-মেয়ে নষ্ট-ইত্যাদি সমস্যা থাকতেই পারে। থাকেই। অনেকে তো বিয়েই করতে পারেনি, নিজেই নিজের পরিবার এবং পরিবার পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে আদর্শ বটে; কিন্তু তেমন পুরুষ কিংবা মহিলা, বিশেষ করে মহিলা, নিজেকে আদর্শ মানুষ কিংবা স্বর্গসুখ ভোগকারী ব্যক্তিত্ব বলে মনে করেন এমনটা মনে হয় না।
বামপন্থিদের বিভাজন: আদর্শের সংঘাত ও নেতৃত্বের লোভ, না ক্ষমতার বাস্তবতা?
কিছুদিন আগের কথা- বামপন্থিরা জাতীয় সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দাবিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ করে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’-এর ব্যানারে। কর্মসূচির মূল স্লোগান ছিল- ‘মা মাটি মোহনা, বিদেশিদের দেব না’। অতীতেও বামপন্থিরা জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এসব আলোচনা করতে বিশদ লেখা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এককভাবে আওয়ামী লীগের হাতে ছিল- এ কথা অনেকবার বলা হয়েছে। এটিকে আপনি চাইলে ‘আওয়ামী বয়ান’ বলতে পারেন; কিন্তু এটা ইতিহাসের একমাত্র সত্য নয়। প্রবাসী সরকার গঠিত হয়েছিল মূলত আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে, তবে সেই সরকারের পাশাপাশি ছিল একটি উপদেষ্টা কমিটিও, যার প্রধান ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। আরও ছিলেন কমরেড মণি সিংহ, মোজাফফর আহমেদ এবং কংগ্রেস নেতা মনোরঞ্জন ধর। একমাত্র মনোরঞ্জন ধর বাদে বাকি সবাই ছিলেন বামপন্থি। এ থেকেই স্পষ্ট হয়- বামপন্থিদের অবস্থানকে অবহেলা করা ইতিহাসের প্রতি অবিচার।
ইরানে ইসরায়েলি হামলার ছায়ায় মধ্যপ্রাচ্যের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
২০২৫ সালের জুন মাসে মধ্যপ্রাচ্য যেন তার দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতার এক নতুন, আরও রক্তক্ষয়ী এবং অনিশ্চিত অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েল কর্তৃক পরিচালিত এই স্মরণকালের বৃহত্তম ও সর্বাত্মক বিমান হামলা কেবল ইরানের সামরিক কাঠামোকেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়নি, বরং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক গভীর আদর্শিক, কূটনৈতিক এবং রাষ্ট্রনৈতিক সংকট। এই হামলার তাৎপর্য কেবল বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়- বরং এটি এক সুপরিকল্পিত, বহুস্তরবিশিষ্ট এবং প্রতীকী আঘাত, যা ইরানের রাষ্ট্রব্যবস্থার অস্তিত্ব, আত্মপরিচয় এবং আঞ্চলিক নেতৃত্বের দাবি পর্যন্ত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
রোহিঙ্গা সংকট: প্রত্যাবাসনের গোলকধাঁধা
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় হুমকির নাম রোহিঙ্গা সংকট যেখানে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে করিডোর বিতর্ক এবং ভারতে নিবন্ধিত কিছু রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ-ইন বা ঠেলে দেয়ার মতো ঘটনা। তার সঙ্গে গত মার্চ মাসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের নিজভূমি রাখাইনে প্রত্যাবাসনের যে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে এক লাখ ৮০ হাজার মানুষকে মিয়ানমারে ফেরত নেয়া হতে পারে এমন খবর প্রকাশিত হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো দূরাশায় পরিণত হয়। উপরন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গত ৯ মাসে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে এসেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের কাঁধে রোহিঙ্গাদের বোঝা যেমন ক্রমশই বাড়ছে তেমনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ইস্যুটি ঘুরপাক খাচ্ছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির গোলকধাঁধায় যেখান থেকে বাংলাদেশের আশু মুক্তির কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
ইংরেজি বিদ্যায় বাঙালির হালচাল
বাঙালি ইংরেজি শিখতে শুরু করেছে কবে থেকে? নিশ্চয়ই যখন থেকে ইংরেজি শিক্ষাটা তার বৈষয়িক স্বার্থের অনুকূল রূপে দেখা দিয়েছে। সে সময়টা অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধ। ১৭৫৭-তে পলাশীর ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার অবসান ঘটলো যদিও, তবু এদেশে ইংরেজের রাজত্ব গুছিয়ে নিতে কয়েক বছর সময় লেগেছিল অবশ্যই। তাই, তখনই ইংরেজের ভাষা এ দেশে রাজভাষা হয়ে ওঠেনি এবং বাঙালি সন্তানদের পক্ষেও রাজানুগ্রহ লাভের জন্য ইংরেজি ভাষা রপ্ত করার প্রয়োজন দেখা দেয়নি। ১৭৭৪ সালে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বোঝা গেল যে, পুরোনো কেতায় আর জীবন চলবে না; ইংরেজ আর এখন শুধু বণিক নয়- রীতিমতো বণিকরাজ, সে বণিকরাজের প্রসাদভোগী হওয়ার জন্য তার ভাষাটা আয়ত্ত করা প্রজাকুলের একান্ত প্রয়োজন।
ভারত পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যুদ্ধের সম্ভাবনা
৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত চার দিন শুধু উপমহাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যেই ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করেছে। এই চার দিন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি যে মিসাইল, ড্রোন ও বিমান হামলা চলেছে তা দুই পরমাণু শক্তিধর দেশকে ফুল স্কেল ওয়ারের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী এত আতঙ্ক সত্ত্বেও যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম তিন দিনে দুপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাউকে দেখা যায়নি। তখন ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ের বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই কোনো আপোষের চিহ্ন ছিল না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের এক উক্তি বিশ্বব্যাপী শান্তিপ্রিয় মানুষকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বলেছিলেন, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ আমাদের বিজনেস নয়।
আগামী বাজেটে কৃষি খাতের অগ্রাধিকার প্রয়োজন
নয়া বাজেট আসন্ন। আগামী জুন মাসের ২ তারিখ উপস্থাপিত হতে পারে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। এখন বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে জানা গেছে যে, আগামী বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের মূল বাজেটের তুলনায় তা হবে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম টাকার অঙ্কে বাজেটের আকার হ্রাস পাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এ বাজেট হবে সংকোচনমূলক। চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজস্ব আহরণের ধীরগতি ও বাজেট বাস্তবায়নে সক্ষমতার অভাবহেতু একটি আঁটসাঁট বাজেটই আমাদের কাম্য।
রেবতী মোহন বর্মণ: স্কুলজীবন থেকে আজীবনের বিপ্লবী
রেবতী মোহন বর্মণ নামটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে একটি অমর বইয়ের কথা মনে পড়বে আমাদের, বইটির নাম ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।’ বইটির লেখক কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা, আজন্ম বিপ্লবী ও সমাজ সংস্কারক। বইটি আর লেখকের নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য। যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থি রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয়। ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের ওপর অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করে। যে কারণে তিনি ঘাতক ব্যাধি কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হন। ১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত, পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সঙ্গে কলম বেঁধে রচনা করেন ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।’
পিট সিগার: যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদী চরিত্র
বিশ শতকে পৃথিবীব্যাপী এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়েছিলেন আমেরিকান কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী পিট সিগার। লোকসংগীতের প্রচণ্ড অনুরাগী এক গায়ক ছিলেন পিট।