ন্যাটো
জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের ১৫১টি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার পরও কেন এমন বাস্তবতা
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় নতুন করে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছর হতে চলল, গাজায় নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটির ২১ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সম্প্রতি গাজার বৃহত্তম শহর গাজা নগরীতে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। উদ্দেশ্য একটাই, জনবহুল এই নগরী পুরোপুরি খালি করে দখলে নেওয়া। এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ও জাগিত নিধন বন্ধে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
জাতিসংঘ : ভাঙনের প্রান্তে নাকি সংস্কারের দ্বারপ্রান্তে?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে মানবতার শান্তি, ন্যায় ও নিরাপত্তার আশায় ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের জন্ম। এর লক্ষ্য ছিল- একটি বৈশ্বিক মঞ্চ তৈরি করা, যেখানে সকল রাষ্ট্র সমানভাবে অংশ নেবে এবং বিরোধ মীমাংসা হবে আলোচনার মাধ্যমে, কেউ কথা রাখেনি। কিন্তু প্রায় আট দশক পর প্রশ্ন উঠছে- জাতিসংঘ কি তার উদ্দেশ্য পূরণ করতে পেরেছে, নাকি এটি আজ ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে?
ট্রাম্প পুতিন বৈঠক: সফল ও বিফলের হিসাব
১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সময় মধ্য রাতে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে যে বৈঠক হলো, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম লিখছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো সুরাহা হয়নি, কোনো সমঝোতা হয়নি, পুতিন-ট্রাম্প আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে ইত্যাদি। বৈঠকের ঘোষণার পর থেকেই এ বিষয়টি ছিল টক অব দি ওয়ার্ল্ড; কিন্তু এ আলোচনার এজেন্ডা কী ছিল, লক্ষ্য কী ছিল সেটা কেউ পরিষ্কার করে বলছেন না। প্রধানত ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা বটে; কিন্তু কোনো সমঝোতা বা চুক্তির কথা ছিল না।
ভারত পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যুদ্ধের সম্ভাবনা
৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত চার দিন শুধু উপমহাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যেই ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করেছে। এই চার দিন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি যে মিসাইল, ড্রোন ও বিমান হামলা চলেছে তা দুই পরমাণু শক্তিধর দেশকে ফুল স্কেল ওয়ারের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী এত আতঙ্ক সত্ত্বেও যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম তিন দিনে দুপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাউকে দেখা যায়নি। তখন ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ের বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই কোনো আপোষের চিহ্ন ছিল না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের এক উক্তি বিশ্বব্যাপী শান্তিপ্রিয় মানুষকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বলেছিলেন, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ আমাদের বিজনেস নয়।
ভূরাজনৈতিক এবং ভূঅর্থনৈতিক উত্তেজনা এবং ঝুঁকি নিয়ে একটি গভীর পর্যালোচনা
বর্তমান বিশ্ব একটি অভূতপূর্ব ভূরাজনৈতিক এবং ভূঅর্থনৈতিক অস্থিরতার দিকে এগিয়ে চলেছে, যা পরিবর্তনশীল জোট, সম্পদ প্রতিযোগিতা এবং অর্থনৈতিক বিভাজনের দ্বারা চিহ্নিত। বিশ্বব্যাপী এসবের প্রভাব কীরকম হতে পারে তার একটি বিশদ বিশ্লেষণ নিচে দেওয়া হলো
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন ফাটলে রূপ নিচ্ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দান থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের শুরু। আত্মপ্রকাশ ঘটে ভূরাজনৈতিক ব্লকের। যুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে সমাজতান্ত্রিক ব্লক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাড়-বাড়ন্তে উদ্বেগ বাড়তে থাকে ওই ব্লকের। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। শুরু হয় একে অপরের মধ্যকার বহুমাত্রিক প্রতিযোগিতা। উভয় ব্লকেরই দাবি ছিল, বিপরীত ব্লক তাদের ভেতরকার ঐক্য ধ্বংস করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল যেমন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে অবস্থান নিতে পারত না, তেমনি সোভিয়েত ট্যাঙ্কগুলোও প্রুশিয়ান ময়দানে প্রবেশ করতে পারত না যুক্তরাষ্ট্রের কারণে। তখন ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করার এই প্রক্রিয়াকে তখন ‘ডিকাপলিং’ বলা হতো। উভয় ব্লকের কয়েক দশকের দ্বন্দ্ব যা করতে পারেনি, তা এখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভয় দেখাচ্ছেন, নাকি সত্যি?
সবেমাত্র ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এরই মধ্যে তিনি তার ক্ষমতাবলে বহু আদেশ দিয়ে এবং আগামীতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের ইচ্ছা ব্যক্ত করে বিশ্বব্যাপী অনেকের পিলে চমকে দিয়েছেন। রীতিমতো হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। ইতোমধ্যেই তিনি এতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা অনেকের কাছেই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। বিগত দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেই এভাবে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি; অন্য দেশকে হুমকি দেননি। সমালোচকরা কেউ কেউ তাকে উগ্র জাতীয়তাবাদী হিসেবে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তার অতি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেয়া এবং গাজার অধিবাসীদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করা, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করা, যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে একাধিকবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে ‘গভর্নর’ বলে উল্লেখ করেছেন; পরবর্তীতে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের ওপর উচ্চহারে ট্যারিফ ধার্য করা, ইউএসএইড বন্ধ করে দেয়া, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিপোর্ট করা, ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে নেয়া, পানামা ক্যানেলের দখল পুনরুদ্ধার করা, ইউক্রেনের খনিজসম্পদের বিনিময়ে সামরিক সাহায্য দেয়া এবং সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের গোয়েন্দা তথ্যে প্রবেশের অধিকার বন্ধ করাসহ আরও অনেকগুলো বিষয়।
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বিশ্ববাসীকে যে বার্তা দিল
দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার এই ফেরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরই তার ঘোষিত ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ মূলনীতি বাস্তবায়ন শুরু করবেন। ট্রাম্পের এই এজেন্ডা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির খুঁটিনাটি তো পরিবর্তন করবেই, পাশাপাশি এর ফলে আমেরিকার সীমানার বাইরে বসবাস করা কোটি মানুষের জীবনও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হবে। প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোর ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হতে পারে তা নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। নির্বাচনি প্রচারণার সময় বিভিন্ন বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন যে, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক দিনের মধ্যে শেষ করতে পারবেন। যদিও সেটি ঠিক কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কখনোই খোলাসা করেননি তিনি।

ট্রাম্প যুগের শুরু কি নিউ ওয়ার্লড অর্ডার?
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমান যুগে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের সঙ্গে প্রতিটি দেশের সম্পর্ক রয়েছে। আর এই সম্পর্ক কোনো দেশের সঙ্গে কোনো দেশের ভালো, আবার কোনো দেশের সঙ্গে কোনো দেশের বৈরী। অর্থাৎ কোনো না কোনোভাবে প্রতিটি দেশেরই, বিশেষ করে বড় দেশগুলোর সঙ্গে স্বার্থ জড়িয়ে আছে। সেই অনুযায়ী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতি এবং সামরিক শক্তির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রায় প্রতিটি দেশের বাণিজ্যিক, সামরিক এমনকি আদর্শিক সম্পর্ক বা বিরোধিতা রয়েছে। এই সম্পর্কে আবার জোয়ার-ভাটাও দেখা যায়। মাঝখানে একটু বলে রাখা ভালো, যারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ পরিবর্তন আসে না, তারা সেকেলে চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত। এমন চিন্তা পুরোনো, শীতল যুদ্ধের সময়ের। তখন যুক্তরাষ্ট্রে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন, তাদের সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং সমাজতান্ত্রিক বলয়ের দেশগুলোর ব্যাপারে কোনো নীতির পরিবর্তন হতো না। কিন্তু বর্তমানে সেই বলয় ভেঙে গেছে। এমনকি চীনের মতো বিশাল সমাজতান্ত্রিক দেশও মুক্তবাজারের নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে।