ময়মনসিংহ
বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা যত করা হবে, ততই তিনি উজ্জ্বল হবেন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সামনাসামনি প্রথম দেখি ১৯৬৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, তখন আমি কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আইয়ুব খান তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, মোনায়েম খান গভর্নর। বঙ্গবন্ধু সেদিন কিশোরগঞ্জে গিয়েছিলেন। কিশোরগঞ্জের রংমহল সিনেমা হলে বঙ্গবন্ধু বক্তৃতা করছিলেন সামান্য কিছু মানুষ নিয়ে, সেই মানুষের সংখ্যাটা একশ হতে পারে। তার সঙ্গে সেদিন ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। প্রথম তাকে দেখা, সাদা হাওয়াই শার্ট পরিহিত, প্যান্ট, ব্যাক ব্রাশ করা চুল, লম্বা মানুষ।
নির্বাচনের আগেই লুট হওয়া সব অস্ত্র উদ্ধার করুন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন থানা-ফাঁড়িতে উচ্ছৃঙ্খল জনতা ও সহিংসকারীদের আক্রমণের ফলে পুলিশের যেসব অস্ত্র, গোলাবারুদ লুট হয়, তার সব এখনো উদ্ধার করা যায়নি। অনেক অস্ত্র রয়ে গেছে হামলাকারীদের হাতে। গত এক বছর ধরেই এ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, এসব অস্ত্র ব্যবহার করে খুনাখুনি, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ করছে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে অপরাধ বিশ্লেষকরা এরই মধ্যে সতর্ক করেছেন, দেশে অপরাধ বৃদ্ধির বড় কারণ অবৈধ এসব অস্ত্রের ব্যবহার। বিশেষ করে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার ও মাদক কারবারে অবৈধ অস্ত্র বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম শহরে এসব অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ভুল স্বীকারে ক্ষমা হতে পারে না, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি
‘কমন সেন্স’ এর সাধারণ বাংলা অর্থ হলো স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি। যে কোনো বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরই সেটা থাকা জরুরি। তা নাহলে সব কাজেই সে গোলমাল পাকিয়ে ফেলে। যারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন তাদের কমনসেন্স থাকা আরো বেশি জরুরি। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য বোধহয় ওই সাধারণ বিচারবুদ্ধিটুকু হারিয়ে ফেলেছেন। তারা মাঝে মাঝে এমন কিছু ‘কাণ্ড’ করেন যা শুনলে হতভম্ব হয়ে যেতে হয়। যেমন গতকালের একটি সংবাদ আমাদের বিমূঢ় করে দিল।
সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি নিয়ে বিতর্কের অবসান চাই
ময়মনসিংহে শিশু একাডেমির নতুন একটি ভবন বানানোর জন্য ভেঙে ফেলা হচ্ছে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি- ঘটনাটি বেশ কদিন ধরেই সংবাদমাধ্যমের আলোচনার বিষয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। সত্যজিৎ রায় বাংলা সাহিত্য-চলচ্চিত্রের দিগ্বিজয়ী ব্যক্তিত্ব, তার পিতা সুকমার রায়, পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়ও ছিলেন বাংলা ভাষাসাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, শিশু সাহিত্যের পথিকৃৎ।
রোহিঙ্গা: এই ক্যান্সার নিরাময়ের ওষুধ কী?
শরীরের কোনো অংশে যদি ক্যান্সার হয় এবং এটা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়ে তাহলে এই রোগ সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। একটা পর্যায়ে আর চিকিৎসা করা যায় না। অর্থাৎ চিকিৎসা কাজ করে না। কিছুদিন ভোগার পর আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। আর যদি প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় তাহলে চিকিৎসায় সেরে ওঠেন আক্রান্ত ব্যক্তি। অনেক ধকল আর অর্থ ব্যয় হলেও অন্তত প্রাণটা বেঁচে থাকে।
হাজার কোটি টাকা ব্যয়েও কেন নাব্যতা ফেরানো যায়নি
বাংলাদেশের অনেক নদীরই খনন প্রয়োজন। অনেক নদী নাব্য সংকটে ভুগছে। ফলে দেখা যায় একদিকে শুকনো মৌসুমে সেসব নদীতে নৌ চলাচল করতে পারে না অন্যদিকে বর্ষা এলেই নদীগুলো উপচে পড়ে বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাম্প্রতিক এক জরিপে জানা গেছে, দেশের বেশিরভাগ নদীই নাব্য সংকটে ভুগছে। দীর্ঘদিন ধরে নাব্য সংকটে ভুগছে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদ। নাব্য সংকট দূর করতে ২০১৯ সালে খনন শুরু করেছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ছয় বছরের খননে পানি প্রবাহ তো বাড়ানো যায়নি, উল্টো অন্তত তিন স্থানে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে নদের গতিপথ। কোথাও অপরিকল্পিতভাবে নদের মধ্যেই ড্রেজিংয়ের বালু ফেলে, আবার কোথাও জমি দখল করার জন্য মূল প্রবাহ সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে নদীভাঙনে বাড়িঘর ও ফসলি জমি হারিয়েছে শত শত মানুষ।
দূষণের নতুন আতঙ্ক প্রাণঘাতী ‘পিফাস’
দেশে নতুন প্রাণঘাতী এক দূষণের নাম ‘পিফাস’। বিভিন্ন শিল্পকারখানা থেকে নির্গত ফ্লোরিন ও কার্বন (যৌগ) মিলে সৃষ্টি হয় এই মারাত্মক দূষণ। বেশ কয়েকটি জরিপে বলা হয়েছে- ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী এলাকায় পিফাস ছড়িয়ে পড়েছে ভয়াবহ আকারে। ধীরে ধীরে তা আরও বিস্তৃত এলাকায় ছড়াতে পারে। গবেষকরা বলছেন, প্রাণঘাতী এই দূষণ দ্রুত বন্ধ না করা গেলে ক্যান্সার, চর্মরোগ, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, থাইরয়েডসহ বড় ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়বে মানুষ।
রেবতী মোহন বর্মণ: স্কুলজীবন থেকে আজীবনের বিপ্লবী
রেবতী মোহন বর্মণ নামটি উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে একটি অমর বইয়ের কথা মনে পড়বে আমাদের, বইটির নাম ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।’ বইটির লেখক কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নির্মাতা, আজন্ম বিপ্লবী ও সমাজ সংস্কারক। বইটি আর লেখকের নামটি যেন অবিচ্ছেদ্য। যে বইটি ১৯৫২ সাল থেকে এ উপমহাদেশের বামপন্থি রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয়। ব্রিটিশ-ভারতের জেলে থাকাকালীন ব্রিটিশ সরকার রেবতী বর্মণের ওপর অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করে। যে কারণে তিনি ঘাতক ব্যাধি কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হন। ১৯৪৯ সালে নিজ জন্মভূমি ভৈরবে বসে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত, পচন ধরা আঙুলে রশি দিয়ে হাতের সঙ্গে কলম বেঁধে রচনা করেন ‘সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ।’
বাংলাদেশে থাকতে হলে মুক্তিযুদ্ধ মেনেই থাকতে হবে
স্বাধীনতা যুদ্ধ সবসময়ই আমার কাছে ইমোশনাল ব্যাপার। যুদ্ধে গিয়েছি। যুদ্ধের বেদনা নিয়ে আমি সবসময় চলি। চোখের সামনে ভাসছে- সাথী পড়ে গেছে। গুলি খেয়েছে। তার মধ্যে লাফ মেরে উপরে উঠেছে। আমাকে বলেছে- ‘মামা, মাকে দেইখো আর তো।’ কেউ রইলো না। মায়ের একমাত্র সন্তান পাগল হয়ে মরছে। গাঙ সাঁতরাইয়া পার হইছি, পাকিস্তানি বাহিনীর গুলি খাইছি। পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করে একদিনে ১৫ হাজার লোক মারছে বুড়িগঙ্গাতে। বুড়িগঙ্গা লাল হয়ে গেছে। ১০ হাজার লোক মারছে জিঞ্জিরাতে। এক দিনে ২৫ হাজার লোক মারা গেছে শুধু কেরানীগঞ্জে। ২ মে জিঞ্জিরা-কেরানীগঞ্জে একটা বাড়িঘরও ছিল না, সব পুড়ে ফেলেছে পাকিস্তানি বাহিনী। সেই মুক্তিযুদ্ধে নদী সাঁতরিয়ে রাইফেলটা নিয়ে পার হয়েছি। শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করেছে, বাঙ্কারে ক্রলিং করে যাইতেছে। কারও পা গেছে। কারও চোখ গেছে। কারও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ গেছে। কেউ সম্ভ্রম হারিয়েছে। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছে- তারপর পাকিস্তানি বাহিনী পালিয়েছে।
সুন্দরবন ঘেঁষে অবৈধ রিসোর্ট তৈরি বন্ধ করুন
আমাদের দুর্বিনীত দুর্নীতিগ্রস্ত আচরণ কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে, তার উদাহরণের শেষ নেই। আমরা নদী-খাল ভরাট করে দখল করেছি, পাহাড় কেটে সমতল বানিয়েছি, বন-জঙ্গল কেটে সাফ করে যা ইচ্ছা তা-ই বানিয়েছি। আমাদের চরিত্রের ভেতর লোভ, অসততা আর আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে প্রচণ্ড অব্যবস্থাপনা। ফলে নিজের লাভের জন্য দেশ-জাতি-পরিবেশের কথাও আমরা মাথায় রাখি না। যে কোনো সুযোগে যে কোনো জায়গা দখলের হাত বাড়িয়ে দিই, তাতে যে নিজের পায়ের নিজে কুড়াল মারি সে কথাও খেয়াল রাখি না।