দেশ ও রাজনীতি

বিজয়ের মাসে বাংলাদেশ: মৌলবাদী উত্থান কিংবা বিজয়ের চেতনার নবজাগরণ
ডিসেম্বর এলেই বাংলাদেশের হৃদয়ে এক অদ্ভুত আলো জ্বলে ওঠে—বিজয়, শোক আর গৌরব মিলেমিশে তৈরি হয় এক অপ্রতিরোধ্য আবেগ। ১৯৭১-এর বিজয় শুধু একটি যুদ্ধের সমাপ্তি নয়, বরং ছিল এক জাতির অস্তিত্ব রক্ষার জয়, এক সভ্যতার মুক্তি। প্রতি বছর ডিসেম্বর তাই আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের গল্প, শত বাধা পেরিয়ে জন্ম নেওয়া একটি লাল-সবুজ পতাকার গর্ব। তবে বর্তমান বাস্তবতায় প্রশ্ন জাগে—বিজয়ের ৫৩ বছর পর আমরা কি সেই চেতনা ঠিকভাবে ধারণ করতে পারছি? নাকি সময়ের স্রোতে, রাজনৈতিক অস্থিরতায় এবং সামাজিক বিভাজনে সেই আলো ক্ষীণ হয়ে আসছে? কয়েকটি সাম্প্রতিক ঘটনা যেন এ প্রশ্নটিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
বাংলায় সুফিবাদ, পালাগান, রাজনৈতিক বিরোধ এবং একজন আবুল সরকার
‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’ এবং ‘আমি তোমার দুটি চোখের দুটি তারা হয়ে থাকব’... আশির দশকে যাদের জন্ম বা বেড়ে ওঠা এন্ড্রু কিশোরের কণ্ঠে এসব গান তাদের হৃদয় মথিত করে গেছে। আজও মথিত করে, আকুল করে। কালজয়ী এসব গান ১৯৮৪ সালে নির্মিত বাংলা ছায়াছবি 'নয়নের আলো'র। আমাদের প্রজন্মের অনেকেই সেই সিনেমার কথা মনে করতে পারবে।
ভবিষ্যৎ রাজনীতি কাদের হাতে?
‘বাংলাদেশের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে, তারা অন্তর্গতভাবেই অগণতান্ত্রিক এবং এখানে শাসকশ্রেণির পড়ালেখা ও বিদ্যাশিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্ন।’ ইংরেজি দৈনিক নিউএজের সম্পাদক নুরুল কবির যেদিন এই বক্তব্য দেন, তার ঠিক আগের দিন দেশের ইতিহাসে প্রথম কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। প্রয়াত রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে নুরুল কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত গণতন্ত্র বলতে যা বোঝায় তা কখনো ছিল না।’
আত্মঘাতী অন্তর্ঘাতের মূল্য অনেক বড় হতে পারে
সোমবার সকালে একটি ভিডিও ক্লিপ দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছিলাম। দূর থেকে করা ভিডিওতে দেখা যায় আগুনের শিখা লম্বা গাছপালা ছাড়িয়ে আকাশে উঠেছে। রাতের আকাশে লেলিহান আগুনের শিখা। হঠাৎ মনে হলো ভিডিওটা ইউক্রেন বা গাজার নয়তো? ভুল ভাঙলো একটু পর। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে জানলাম, এটা ভিনদেশের ধ্বংসযজ্ঞ নয়। ঢাকার উপকণ্ঠে সাভারে অবস্থিত সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দিয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বীভৎসতা চিত্র আরও পরিষ্কার হতে থাকে।
আশা থেকে অনিশ্চয়তার পথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
প্রধান উপদেষ্টা ১৩টা দেশে ১৪ বার ঘুরেছেন- শুনলেই মনে হয়, দারুণ কিছু ঘটেছে। কিন্তু এসব সফরের আসল ফল কোথায়? বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো বাণিজ্য, বড় বিনিয়োগ, কিংবা উল্লেখযোগ্য চুক্তি- কিছুই চোখে পড়ে না।
তারেক রহমানকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে
আমরা এমন একটি সময় পার করছি, যখন বাংলাদেশ ইতিহাসে একটা গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২৪ সালে একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনের অবসান হয়েছে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যেমন মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায় রয়েছে, তেমনি রয়েছে ক্ষমতার অন্ধকার গলিতে হারিয়ে যাওয়া ন্যায়ের আর্তনাদ। স্বাধীনতার পর অর্ধশতাব্দী পার হয়ে আজও এ দেশ খুঁজছে একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র, যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ কাজ করবে জনগণের কল্যাণে, আর রাজনীতি হবে নীতি ও নৈতিকতার প্রতিফলন; কিন্তু এ দেশের মানুষ একাধিকবার প্রত্যক্ষ করেছে নির্বাচনি প্রহসন, ভোটকেন্দ্র দখল, জালভোট ও সহিংসতার মতো ঘটনা। জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপনির্বাচন এবং স্থানীয় পর্যায়ের অসংখ্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এমনকি এ-সংক্রান্ত রাজনৈতিক বিরোধ বাংলাদেশে স্থায়ী রূপ লাভ করেছে। ক্রমেই নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটি অনেক সময়ই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
অবহেলিত শিক্ষার দুরবস্থা বাড়ছে
চলতি ২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা এইচএসসি এবং সমমান পরীক্ষার ফল সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে; ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ১২ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়, এদের মধ্যে অর্ধেক মেয়ে। গতবারের চেয়ে পাসের হার ১৮ শতাংশ কম। গতবারের তুলনায় কম পাস করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই হচ্ছে। কারণ ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ পরীক্ষার্থীর অনুত্তীর্ণ হওয়া গ্রহণযোগ্য ফলাফল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। ১২ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫ লাখ ফেল করলে প্রশ্ন উত্থাপিত হবেই।
রং বদলানোই কি জামায়াতের শক্তি?
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পর দেশে তৃতীয় কোনো শক্তি গড়ে উঠেনি। জাতীয় পার্টি মূলত আওয়ামী লীগের বি টিম হিসেবেই কাজ করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর জনপরিসরে এরকম আওয়াজ আছে যে, জামায়াত হয়তো এবার সরকার গঠন করবে। বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে হয়তো তারই ইঙ্গিত।
‘জুলাই সনদ’ ইস্যুতে রাজনৈতিক সংশয় কাটাতে করণীয়
অনেক আশা নিয়ে দেশটা স্বাধীন হলো। গুটিকয় পরিবার ছাড়া স্বাধীনতার জন্য সবাই মূল্য দিয়েছে; কিন্তু স্বাধীনতার ফল পকেটে পুরেছে কিংবা আঁচলে বেঁধেছে হাতেগোনা কিছু পরিবার ও গোষ্ঠী।
বৈষম্য নিরসনে কতটা পথ পেরোল বাংলাদেশ?
জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বয়স ইত্যাদির ভিত্তিতে কারও প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণকেই বৈষম্য বলে। বৈষম্যের সঙ্গে মঙ্গল-অমঙ্গলের সম্পর্ক থাকা বাধ্যতামূলক নয়।