দেশ ও রাজনীতি
ধর্ষণ-সংস্কৃতির শিকড় সমাজেই
আজকের বাংলাদেশে কিংবা উপমহাদেশের কোথাও ধর্ষণের ঘটনা শুনলে কেউ আর চমকে ওঠেন না। খবরের কাগজের পাতায় কিংবা টিভি স্ক্রলে লেখা থাকে- ‘ধর্ষণ’, ‘দলবদ্ধ ধর্ষণ’, ‘ধর্ষণের পর হত্যা’- এই শব্দগুলো যেন আমাদের চেনা অভিধানের অংশ হয়ে উঠেছে। একটা ধর্ষণ ঘটলে সরকারকে দোষ দেয়া হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাঠগড়ায় তোলা হয়, কেউ কেউ প্রশাসনের ওপর রাগ ঝাড়েন। এই দায় চাপানোর মধ্যে যেন এক ধরনের আত্মতুষ্টিও কাজ করে- ‘দেখো, আমরা প্রতিবাদ করছি’, ‘আমরা দায় নিচ্ছি না’।
সংস্কার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করুন
‘সংস্কার সংস্কার সংস্কার’- অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এভাবে তিনবার উচ্চারণ করে সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তিনি সবাইকে সংস্কার নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে আহ্বান জানিয়েছেন, সংস্কার নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা-পর্যালাচনা করতে তিনি বারবার অনুরোধ করেছেন। সংস্কারের তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকে তিনি চটজলদি অনেক সংস্কার কমিশনও গঠন করে দিয়েছিলেন। কমিশনগুলো তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে, কয়েকটি কমিশনের সুপারিশের ওপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতও নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। এই মতামতের ভিত্তিতে তৈরি হবে ‘জুলাই চার্টার’, যাতে থাকবে রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর; কিন্তু এসব কর্মকাণ্ড অবাস্তব ও বাস্তবায়ন অযোগ্য স্বপ্ন। বাম আর ডানের আদর্শের পার্থক্য উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরুর দূরত্বের সমান। তাই ‘জুলাই চার্টার’ দিয়ে যে সংস্কার হবে তা হবে খুবই সীমিত, তা দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের উদ্ভব ঠেকানো যাবে না।
শহীদ আবু সাঈদ: ব্যর্থ নও তুমি, ব্যর্থ নয় তোমার আত্মার চিৎকার
আবু সাঈদ ২০০১ সালে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মকবুল হোসেন, মাতা মনোয়ারা বেগম। আবু সাঈদের ৬ ভাই ও ৩ বোন। ৯ ভাইবোনের মধ্যে আবু সাঈদ সবার ছোট। আবু সাঈদ স্থানীয় জাফরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর স্থানীয় খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। পরে তিনি ২০২০ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তিনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ২০২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। টগবগে তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তাকে ঘিরে তার এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখতেন। সেই সাঈদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া অসহ্য কষ্টের।
গোপালগঞ্জে গুলি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলো কেন?
বাংলাদেশের ৬৩টি জেলাও যদি আওয়ামী লীগশূন্য হয়ে যায়, তারপরও বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান এবং তার সমাধি যেখানে, সেই গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ থাকবে এবং বেশ শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে- এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে। যে কারণে গোপালগঞ্জকে বলা হয় ‘আওয়ামী লীগের দুর্গ’। সেই দুর্গ বা ঘাঁটিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা হলো, সেটি বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনায় কার কতটুকু লাভ-ক্ষতি হলো, সেই অঙ্কও অনেকে কষছেন। তবে রাজনৈতিকভাবে যারাই লাভবান হোন না কেন, যারা নিহত হলেন তাদের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুপরিজনের চেয়ে বেশি ক্ষতি আর কারও হয়নি। আর যারা নিহত হলেন তারা এখন জাগতিক জীবনের সব লাভ-ক্ষতির ঊর্ধ্বে।
বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য
আমাদের যত যত সমস্যা ও ব্যর্থতা তার পেছনে যে দারিদ্র্য রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে কী? যেমন, পরিবার পরিকল্পনা। ছোট পরিবার সুখী পরিবার-এটা সত্য; কিন্তু তারও চেয়ে বড়ো সত্য হচ্ছে ধনী পরিবার মানেই ছোট পরিবার। পরিবার ছোট হলেই যে সুখী হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অসুখ-বিসুখ, ঝগড়া-কলহ, মনোমালিন্য, অধিক আদরে ছেলে-মেয়ে নষ্ট-ইত্যাদি সমস্যা থাকতেই পারে। থাকেই। অনেকে তো বিয়েই করতে পারেনি, নিজেই নিজের পরিবার এবং পরিবার পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে আদর্শ বটে; কিন্তু তেমন পুরুষ কিংবা মহিলা, বিশেষ করে মহিলা, নিজেকে আদর্শ মানুষ কিংবা স্বর্গসুখ ভোগকারী ব্যক্তিত্ব বলে মনে করেন এমনটা মনে হয় না।
স্বদেশের মুসলিম নাগরিকদের ‘বিদেশি’ বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে ভারত
[স্বদেশের মুসলিম নাগরিকদের ‘বিদেশি’ বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে ভারত। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই আলোচনা হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকার বরাবর চিঠিও পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ চাচ্ছে বিষয়টির কূটনৈতিক সমাধান; কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তেমন আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। বরং দিন দিন তাদের ‘পুশ-ইন’ বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে গত ২৪ জুন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ভিউজ বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির সংক্ষিপ্তরূপ প্রকাশ করা হলো।]
রোহিঙ্গা: এই ক্যান্সার নিরাময়ের ওষুধ কী?
শরীরের কোনো অংশে যদি ক্যান্সার হয় এবং এটা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা না পড়ে তাহলে এই রোগ সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। একটা পর্যায়ে আর চিকিৎসা করা যায় না। অর্থাৎ চিকিৎসা কাজ করে না। কিছুদিন ভোগার পর আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। আর যদি প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্ত করা যায় তাহলে চিকিৎসায় সেরে ওঠেন আক্রান্ত ব্যক্তি। অনেক ধকল আর অর্থ ব্যয় হলেও অন্তত প্রাণটা বেঁচে থাকে।
জুলাই সনদ যেন রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি না করে
গণ-অভ্যুত্থান নিজেই একটি বড় প্রাপ্তি। যে অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগের মতো একটি নিকৃষ্ট ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠীর পতন হলো, তার চেয়ে বড় প্রাপ্তি এ দেশের জনগণের জীবনে খুব কমই আছে।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন কতটা বাস্তবসম্মত?
উন্নয়নশীল দেশের চূড়ান্ত তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য যে তিনটি আবশ্যিক শর্ত পরিপালন করতে হয় বাংলাদেশ তার সবগুলোই বেশ ভালোভাবে পূরণ করেছে। এরপর কয়েক বছর পর্যবেক্ষণে ছিল বাংলাদেশ।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অন্তরালে গাজার বাস্তবতা
নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণহত্যা, ক্ষুধা, বাস্তুচ্যুত- এমন মর্মান্তিক বিশেষণগুলো যেন এখন শুধু গাজার জন্যই বরাদ্দ। গত বিশ মাস ধরে নারী-শিশু নির্বিশেষে উপত্যকাটির মানুষের ওপর চলছে বর্বর হত্যাযজ্ঞ। গাজায় যে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চলছে তা একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে হজম করা বেশ কঠিন। এমন হৃদয়বিদারক চিত্র একটি-দুটি নয়। হাজার হাজার। যা করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট ইসরায়েল। লাখ লাখ মানুষ সেখানে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। যাদের খাদ্য নেই, থাকার জায়গা নেই। আত্মীয়স্বজনের খোঁজ নেই। এক অমানবিক ও মর্মান্তিক জীবন পার করছেন গাজাবাসী। তারা যেন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছেন। এ পর্যন্ত কত মানুষ নিহত হয়েছেন তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। প্রতিনিয়তই মৃত মানুষের মিছিল ভারী হচ্ছে।