শিল্প
তাইওয়ান সঙ্কট: সিলিকন শিল্পের কেন্দ্রে যুদ্ধের পদধ্বনি
২০২১ সালের জুলাই মাস। বিশ্ব তখন চিপের তীব্র সঙ্কটে হাবুডুবু খাচ্ছে। এমন এক সময়ে, প্রযুক্তি জগতের কেন্দ্রবিন্দু টিএসএমসি-এর চেয়ারম্যান মার্ক লিউকে এক বিশ্লেষক একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলেন: "চীন যখন তাইওয়ানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকি দেয়, তখন আপনার গ্রাহকরা কি উদ্বিগ্ন হন না?"
করোনা মহামারি থেকে ভূ-রাজনীতির চ্যালেঞ্জ
২০২১ সালের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে এক বিশেষ জুম মিটিং ডাকলেন। বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তি ও উৎপাদন কোম্পানির উনিশজন সিইওকে উদ্দেশ্য করে তিনি হাতে তুলে নিলেন বারো ইঞ্চি লম্বা এক সিলিকন ওয়েফার। তিনি বললেন, আমেরিকা ‘বড় ও সাহসী’ বিনিয়োগ না করলে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে। তাই ‘আমাদের খেলাটা আরও শক্তভাবে খেলতে হবে’।
স্মার্টফোনের বাজার কি চোরাকারবারিদের কাছেই জিম্মি থাকবে
মোবাইল হ্যান্ডসেট বাজারের চিহ্নিত চোরাকারবারিরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান কার্যালয় অবরোধের নামে জিম্মি করে অচলাবস্থার সৃষ্টি করছে। রাস্তা অবরোধ করে, শত শত নাগরিককে চরম দুর্ভোগে ফেলে চোরাচালানের অবাধ সুযোগ বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছে! সত্যিই বাংলাদেশ বড়ই অদ্ভুত জায়গা। সম্ভবত, এটি বিশ্ব রেকর্ড! বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দেশে এক দল চোরাবাকারবারিরা এভাবে রাস্তায় জড়ো হয়ে জনজীবন অচল করার তথাকথিত কর্মসূচী বাস্তবায়নের ধৃষ্টতা দেখাতে পারেনি।
চিপ নিয়ে চীন-মার্কিন লড়াই: ক্রেতা যখন প্রতিদ্বন্দ্বী
২০১৫ সাল। ইন্টেলের সিইও ব্রায়ান ক্রজানিচ তখন সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসসিয়েশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁর নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওয়াশিংটনে, যেখানে তিনি ট্যাক্স কমানো কিংবা নিয়ম-কানুন শিথিল করার মতো চিরাচরিত ব্যবসায়িক দাবিগুলোই জানাতেন। কিন্তু ওই বছর তিনি আর ব্যবসায়িক সুবিধা চাইলেন না, সরাসরি বললেন, “চীন যেভাবে আমাদের চিপ ইন্ডাস্ট্রি দখল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, সেটা আমেরিকার জন্য বিপজ্জনক। এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।”
হুয়াওয়ের উত্থান
হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেইকে দেখলে প্রথমটায় তাঁকে সিলিকন ভ্যালির শান্ত-স্বভাবের কোনো নির্বাহীর মতোই মনে হয়। কিন্তু তাঁর কোম্পানির বৈশ্বিক প্রভাব এই সরল চেহারার থেকে অনেক গুণ বড়। বিশ্বের অসংখ্য দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক - যা আমাদের প্রতিদিনকার ভয়েস কল, মেসেজ আর ডেটা বহন করে - তার বিরাট অংশই দাঁড়িয়ে আছে হুয়াওয়ের ইকুইপমেন্টের ওপর। বহু জায়গায় হুয়াওয়ের নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে মোবাইল ফোনের সেবা পাওয়া প্রায় অসম্ভব।
চীনের চিপ যুদ্ধ: শি জিনপিংয়ের আহবান থেকে প্রযুক্তি হস্তান্তর
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাস। সুইজারল্যান্ডের দাভোসের মঞ্চে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যখন বিশ্বের নেতাদের সামনে দাঁড়ালেন, তখন তাঁর কণ্ঠে ছিল শুধুই শান্তির বার্তা। সদ্য ক্ষমতা নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন 'আমেরিকা ফার্স্ট'-এর ডাক দিচ্ছেন, শি তখন বৈশ্বিক বাণিজ্যে 'পারস্পরিক লাভের' কথা বললেন - গণমাধ্যম তাঁকে দিল 'গ্লোবালাইজেশনের রক্ষক' খেতাব। কিন্তু সেই আপাত শান্ত এবং উদার ঘোষণার আড়ালে ভেতরে ভেতরে চলছিল এক ভিন্ন পরিকল্পনা।
ইনটেল কীভাবে উদ্ভাবন ভুলে গেল?
কয়েক দশ ধরে সেমিকন্ডাক্টর জগতে ইনটেল ছিল নিরঙ্কুশ সম্রাট, মার্কিন প্রযুক্তি শক্তির প্রতীক। তাদের আবিষ্কার করা মাইক্রোপ্রসেসর ও বিখ্যাত x86 আর্কিটেকচার ছিল পিসি থেকে ডেটা সেন্টার - সবকিছুর প্রাণ।
ডেটা সুরক্ষার নামে ডিজিটাল বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি?
গত ৬ নভেম্বর সরকার দুটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে, যা দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ডেটা ব্যবস্থাপনা, গোপনীয়তা এবং ডেটা বিনিময় কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনবে। এগুলো হলো Personal Data Protection Ordinance (PDPO) এবং National Data Governance Ordinance (NDGO)।
টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ খসড়া ২০২৫ এর বিশ্লেষণ
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া জনমতের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে এ খসড়ায়। সেখানে বলা হয়েছে, এমন একটি 'আধুনিক' টেলিকম ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই আইন যা ডিজিটাল যুগের বাস্তবতাকে স্বীকৃতি দেয়। রেডিও স্পেকট্রাম এবং সাবমেরিন ক্যাবল থেকে শুরু করে OTT, AI এবং IoT পর্যন্ত সবকিছুই আইনের ধারায়, উপ ধারায় বিস্তৃত আছে। কিন্তু একটু গভীরভাবে পর্য়বেক্ষণ করলে এই অধ্যাদেশ ঘিরে তিনটি বড় প্রশ্ন সামনে আসে। প্রশ্নগুলো হচ্ছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি প্রকৃতপক্ষে কতটা স্বাধীন হবে, মন্ত্রণালয় বাস্তবিকভাবে কতটা তত্ত্বাবধান করতে পারবে, এবং লাইসেন্সিং ঠিক কোথায় শেষ হবে এবং নজরদারির নতুন অধ্যায় শুরু হবে ?
অ্যাপল সিলিকন
স্টিভ জবসের হাতে গড়া অ্যাপলের কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে এমন সব পণ্য, যা দেখতে সুন্দর, স্পর্শে আরামদায়ক এবং কাজে নিখুঁত। তাদের এই ‘দেখা, অনুভূতি ও কাজের মান’ নিয়ে অ্যাপল বরাবরই ছিল ভীষণ যত্নশীল। কিন্তু খুব কম লোকই জানেন যে আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাককে চালিত করা সেই অতি ক্ষুদ্র চিপগুলো অ্যাপল নিজেই ডিজাইন করে। বস্তুত, টিএসএমসির নেতৃত্বে বিশ্বজুড়ে যে 'ফ্যাবলেস বিপ্লব' হয়েছিল, অ্যাপল ছিল সেই সেমিকন্ডন্ডাক্টর দুনিয়ার অন্যতম প্রধান বিজয়ী।