Views Bangladesh Logo
author image

রাহাত মিনহাজ

  • সহকারী অধ্যাপক

  • থেকে

রাহাত মিনহাজ: শিক্ষক, গবেষক, কলাম লেখক। শিক্ষকতার করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। বর্তমানে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত। খণ্ডকালীন উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে। সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন চ্যানেল ওয়ান, এটিএন বাংলা, যমুনা টিভি ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরে। ২০১৩ সালে পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের বজলুর রহমান স্মৃতি পদক, আরও পেয়েছেন আবুল মনসুর আহমদ প্রবন্ধ লিখন পুরস্কার ২০১৮। মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা নিয়ে লেখকের ১১টি বই প্রকাশিত হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে ‘সায়মন ড্রিং ও অন্যান্যের একাত্তর’, ‘নভেম্বর ক্যু’৭৫: অন্ধকার সময়ের সংবাদচিত্র’, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: সংবাদপত্রের আধেয় বিশ্লেষণ’ ও ‘পশ্চিম পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর বন্দি জীবন’ অন্যতম। শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখক মুক্তিযুদ্ধ ও গণমাধ্যম নিয়ে নানা ধরনের গবেষণায় নিয়োজিত আছেন। তাঁর দাপ্তরিক নাম মিনহাজ উদ্দীন। জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তরের শহর বগুড়ায়। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।
মৃত্যুঞ্জয়ী রুমির জন্য অপেক্ষা আজও ...
মৃত্যুঞ্জয়ী রুমির জন্য অপেক্ষা আজও ...

মৃত্যুঞ্জয়ী রুমির জন্য অপেক্ষা আজও ...

২৯ আগস্ট ১৯৭১। রাত আনুমানিক ১২টা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কড়া পাহাড়ায় ঢাকা শহরে তখন আতঙ্কিত নীরবতা। ওই দিন সন্ধ্যার পরই বাড়ি ফিরেছিলেন শাফী ইমাম রুমি। এসেই মাকে বলেছে তার বন্ধু, গেরিলা যোদ্ধা হাফিজ বাসায় থাকবে। ধীরে ধীরে রাতের আঁধার গাঢ় হচ্ছিল। ছোট ভাই জামির ঘরে বাজছিল রেডিও। বেতার তরঙ্গে হঠাৎ বেজে উঠল ‘একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি গানটি...’। চমকে উঠলেন রুমি। ভাবলেন কি হলো এ গানটা আজ কয়েকবার বেজেছে। নিশ্চয় কোথাও কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। অনেকটা বিষণ্ন মনে ঘুমাতে গেল বাড়ির সবাই। বাবা শরীফ ইমাম, মা জাহনারা ইমাম, ছোট ভাই জামি, রুমি ও আরও কয়েকজন।

বিভুরঞ্জনের শেষ বার্তায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতার করুণ কাহিনি
বিভুরঞ্জনের শেষ বার্তায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতার করুণ কাহিনি

বিভুরঞ্জনের শেষ বার্তায় বাংলাদেশের সাংবাদিকতার করুণ কাহিনি

কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ঘন শীতল কুয়াশার মতো আচ্ছন্ন করে। কিছু মৃত্যুর সংবাদ শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করে। কিছু মৃত্যুর সংবাদ বুকের ভেতর বাষ্প জমিয়ে প্রকৃতপক্ষেই বুকটাকে ভারী করে তোলো। সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের মৃত্যু সংবাদ বাংলাদেশের সাংবাদিকদের কাছে অনেকটা এমনই ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় গুণী এই সাংবাদিকের মৃত্যু সংবাদ শোনার আগে আমি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম তার শেষ ‘খোলা চিঠি’। যে চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের এক নিষ্ঠুর চিত্র তুলে ধরে গেছেন। জীবন শেষ করার বিদায়বেলায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এ জগৎটা কতটা ভ্রাতিবিলাশে আচ্ছন্ন, ফাঁপা, অতি আবেগি, অপেশাদার, যাতে তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে অনেক সাংবাদিকের জীবন।

জহির রায়হান হত্যাকাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অবসান হোক
জহির রায়হান হত্যাকাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অবসান হোক

জহির রায়হান হত্যাকাণ্ড নিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অবসান হোক

যুদ্ধের অন্যতম অপরিহার্য অনুষঙ্গ প্রচারণা। যুদ্ধ মানেই তথ্য সন্ত্রাস, তথ্য বিকৃতি। যুদ্ধ মানেই বিকৃত ও মিথ্যা তথ্যে মনোজগৎ দখলের নিরন্তর চেষ্টা। যুদ্ধ মানেই স্মৃতির বিরুদ্ধের বিস্মৃতির লড়াই। বিংশ শতাব্দীতে যুদ্ধ নিয়ে প্রচার-প্রচারণার অনন্য নজির স্থাপন করেছিলেন হিটলারের প্রোপাগান্ডা মিনিস্ট্রির (Reich Ministry of Public Enlightenment and Propaganda) প্রধান জোসেফ গোয়েবেলস, যার মূল দর্শন ছিল If you tell a lie big enough and keep repeating it, people will eventually come to believe it.

হত্যা মামলা ও মব সন্ত্রাস এখন সাংবাদিক নিপীড়নের নয়া হাতিয়ার
হত্যা মামলা ও মব সন্ত্রাস এখন সাংবাদিক নিপীড়নের নয়া হাতিয়ার

হত্যা মামলা ও মব সন্ত্রাস এখন সাংবাদিক নিপীড়নের নয়া হাতিয়ার

নজরদারি নিয়ে লেখা বিশ্বখ্যাত ডিস্টোপিয়ান বা কাল্পনিক অবিচার ও কর্তৃত্ববাদ নিয়ে লেখা উপন্যাস ১৯৮৪ এর লেখক জর্জ ওরওয়েল সাংবাদিকতা নিয়েও কালোত্তীর্ণ অনেক মত প্রকাশ করেছেন। সেগুলোর একটি হলো ‘সাংবাদিকতা হলো এমন কিছু প্রকাশ করা, যা অন্য কেউ প্রকাশ করতে চাইবে না। আর বাকি সব কিছু জনসংযোগ।’ আসলেই তাই, সাংবাদিকের কাজই চেপে

একাত্তরের নিঃসঙ্গ সারথি
একাত্তরের নিঃসঙ্গ সারথি

একাত্তরের নিঃসঙ্গ সারথি

রাত তখন আনুমানিক ১১টা। ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের বাড়ির লনে এলোমেলো পায়চারি করছেন তাজউদ্দীন আহমদ। চোখে মুখে প্রচণ্ড অভিমান, রাজ্যের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব চিন্তায়। সেনানিবাস থেকে পাকিস্তানি আর্মি তখন শহরের মূল টার্গেটগুলোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গোটা ঢাকা শহর নিস্তব্ধ। দেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে এক চরম ক্রান্তিকালে। যেখান থেকে পিছন ফেরার আর কোনো সুযোগ নেই। ইয়াহিয়া খানের ঢাকা ত্যাগের খবর পাওয়ার পরই রাতে ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে গিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি বঙ্গবন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ৩২ নম্বর ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। আশা করেছিলেন, আত্মগোপনে থেকে বঙ্গবন্ধু মুক্তি সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবেন।

নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা
নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা

নভেম্বর ১৯৭৫: ধোঁয়াশাপূর্ণ অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত ও খালেদ মোশাররফের প্রচেষ্টা

১৯৭৫ সালের নভেম্বরের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে ২০২৪ সালের পালাবদলের একটি মিল রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর রাতে খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর ৭ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো সরকার ছিল না। ২০২৪ সালেও শেখ হাসিনার পতনের পরও কয়েক দিন সরকারশূন্য ছিল। যে যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক না কেন ১৯৭৫ সালের নভেম্বর ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আবছা, রক্তাক্ত অধ্যায়। ইতিহাসের এই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে পরস্পরবিরোধী দাবি আর দোষারোপের শেষ নেই। প্রায় ৫০ বছর পর রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে দিনটিকে পালন বা উদযাপন করে আসছে। কেউ করে অসমাপ্ত বিপ্লবের আক্ষেপ, কারও কাছে দিনটি বিপ্লব ও সংহতির আবার কারও কাছে দিনটি মুক্তিযোদ্ধা হত্যার শোকাবহ দিন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পর্যায় ও রাজনৈতিক পরিসরে দিনটি ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে পালিত হয়েছে। এ সময় গণমাধ্যম ও রাষ্ট্রযন্ত্রে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের শক্তিশালী বয়ান প্রতিষ্ঠিত ছিল। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় ২০২৪ সালে ভিন্ন আঙ্গিকে দিনটি পালিত বা উদযাপিত হবে। সামনে আসবে নতুন আলোচনা নতুন তথ্য, নতুন সমীকরণ, নতুন ব্যাখ্যা। সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে আসুন একটু নির্মোহভাবে জানার চেষ্টা করি ঠিক কী ঘটেছিল ওই কয়েকদিন।