এনবিআর
দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি রাজনৈতিক-সংস্কৃতির অংশ
চাঁদাবাজি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ একটি নিরেট সত্য কথা বলেছেন; কথাটি হচ্ছে চাঁদাবাজি এবং চাঁদার মাত্রা চব্বিশের ৫ আগস্টের পর বেড়েছে এবং চাঁজাবাজি, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট প্রয়োজন। কারণ চাঁদাবাজ শুধু চাঁদাবাজই নয়, সে রাজনীতিও করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে তার সঙ্গে আমার সরাসরি কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত বলে তিনি একজন নির্লোভ ব্যক্তিও। পাকিস্তান আমলের সিএসপি আমলা, তাই দক্ষও। অর্থ উপদেষ্টা হয়েই তিনি বলেছিলেন, দেশের অর্থনীতির অবস্থা যত খারাপ বলা হয়, তত খারাপ নয়; কিন্তু ক্ষমতায় বসেই দলীয় সরকারের রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজি হচ্ছে, আগের সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা।
মার্কিন শুল্ক যুদ্ধে বাংলাদেশের জয়-পরাজয়
তিন দফা আলোচনা শেষে বাংলাদেশ মার্কিন বাজারে তার পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি শুল্কের হার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করতে পেরেছে। এটা দেশের অর্থনীতির জন্য যেমন ইতিবাচক, তেমনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য কূটনৈতিক সাফল্যও বটে। কারণ গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল ট্রাম্প যখন প্রথমবার বিভিন্ন দেশের ওপর বাড়তি শুল্কের পরিমাণ ঘোষণা করলেন, তখন বাংলাদেশের পণ্য থেকে ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক নেয়ার কথা বলেছিলেন। পরে সেই শুল্ক স্থগিত হয়ে যায়। ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়ে ট্রাম্প জানান, ৩৭ নয়, ২ শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের ওপর শুল্কের পরিমাণ করা হচ্ছে ৩৫ শতাংশ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কিছু কথা
আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য জাতীয় বাজেট প্রণয়নের প্রাথমিক কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুন মাসের ৫ তারিখ প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বর্তমানে যেহেতু জাতীয় সংসদ কার্যকর নেই, তাই আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের কাছে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে সামরিক শাসনামল এবং ২০০৭-০৮ এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছর ছাড়া প্রতি বছরই বাজেট জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়েছে। চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট নানা কারণেই ভিন্নতর হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক সরকার আমলে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা থাকে। সেখানে দলীয় নেতাদের তোষণ করার জন্য এমন কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয় বাস্তবে যার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না।
নির্ধারিত সময়ের দ্বারপ্রান্তেও জমা পড়েনি কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন
রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমায় ভোগান্তি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে নাকাল দেশের সাধারণ মানুষ। তাই নির্ধারিত সময়ের দ্বারপ্রান্ত চলে এলেও জমা পড়েনি কাঙ্ক্ষিত রিটার্ন।
প্রতিবাদের পর ইন্টারনেটের শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের নিরবিচ্ছন্ন প্রতিবাদের পর মোবাইল ফোনে কথা বলা, ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি সেবায় ২৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে পূর্বের ২০ শতাংশ শুল্ক পুনঃস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
অতিমাত্রায় বিদেশি ঋণ জাতির আর্থিক স্বাধীনতা বিপন্ন করে
গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। সেই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মার্কিন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কেন হচ্ছে না, সে সম্পর্কে তার গুরুত্বপূর্ণ মতামত উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো মার্কিন অধ্যাপকের বক্তব্য শ্রবণ করছিলেন। এমন সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক তরুণ শিক্ষক দাঁড়িয়ে মার্কিন অর্থনীতিবিদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমাদের অর্থনীতির ওপর নানাভাবে হস্তক্ষেপ করছেন বলেই আমরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উন্নয়ন অর্জন করতে পারছি না। মার্কিন অর্থনীতিবিদ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর তরুণ অধ্যাপকের উদ্দেশে বলেন, যে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ৮০ শতাংশ অর্থ আমরা জোগান দিই, সেই অর্থনীতি কি আপনাদের নাকি আমাদের? আপনার যদি নিজস্ব উৎস থেকে উন্নয়ন কাজের অর্থায়ন করতে পারতেন তাহলে আমাদের পরামর্শ দেবার কোনো প্রয়োজন হতো না। তার এই বক্তব্য শুনে বাংলাদেশি তরুণ অধ্যাপক আর কোনো কথা না বলে বসে পড়েন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে আকস্মিক শুল্ক-কর বাড়ানো কেন?
গত দুই বছর ধরে লাগামহীন উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশের জনগণ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, গেল বছর গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের উপরেই। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশে।
রেস্তোরাঁ-ইন্টারনেট ও পানীয়সহ শতাধিক পণ্যে বাড়ল শুল্ক-ভ্যাট
মোবাইলফোনে কথা বলা, ইন্টারনেট, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, সিগারেট, কোমলপানীয়সহ শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক এবং মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়াল সরকার।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে কেন হঠাৎ বাড়তি করারোপ?
শীতের মাঝামাঝি সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য এখনো লাগামছাড়া। চাল-ডাল-তেলের মূল্য নাগালের বাইরে। কিছুদিন আগে বেড়েছে মুরগির দাম। এর মধ্যে নতুন বছরের শুরুতেই ভোক্তাদের জন্য দুঃসংবাদ: ৬৫ পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। আকস্মিক এই ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে আইএমএফের চাপে। আবার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে হঠাৎই ভ্যাট, সম্পূরক শুল্কসহ বিভিন্ন ধরনের কর বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৬৫ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হবে। এমন খবর মূল্যস্ফীতির জাঁতাকলে পিষ্ট সাধারণ মানুষের জন্য উদ্বেগজনক।
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পক্ষান্তরে রাজস্ব বাড়াবে
শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পক্ষান্তরে রাজস্ব বাড়াবে