জামায়াতে ইসলামী
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতির অবসান হোক
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কথা দিয়ে লেখা শুরু করি; তিনি বলেছেন, ‘আমরা এমন নির্বাচন চাই, যা দেখে অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মা তৃপ্তি পাবে।’ তার মতে এই নির্বাচন হবে এমন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ যা জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, মানুষের ন্যায়বিচার, সমতা, স্বাধীনতা, মর্যাদা নিশ্চিত করতে এবং গণতন্ত্রে মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার প্রতিটি কথায় বিন্যস্ত ছন্দের শৈল্পিক দোলা থাকা, শ্রোতা মুগ্ধ হয়, ভক্তের সংখ্যা বাড়ে; কিন্তু বিশ্বাস হয় না।
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে গণআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি
পিতা চলে গেলেই পিতৃতান্ত্রিকতা যে বিদায় হয়, তা নয়। পিতৃতান্ত্রিকতার অবসান ঘটানোর জন্য একটি সামাজিক বিপ্লব আবশ্যক। আমাদের দেশে সে বিপ্লব আজও ঘটেনি। মানুষের সঙ্গে মানুষের অধিকারের সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণও যে সহসা ঘটবে এমন আশা নেই। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর নিশ্চয়তা-প্রাপ্তি দূরের সুখস্বপ্ন বটে। আর সামাজিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যেহেতু ব্যক্তি মালিকানার জায়গাতে সামাজিক মালিকানার প্রতিষ্ঠা ঘটেনি, তাই বৈষম্য উৎপাদনের প্রকৃত ক্ষেত্রটি অক্ষুণ্নই রয়ে গেছে।
মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে কেন এমন অপরাজনীতি
গত ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় যখন একের পর এক কোমলমতি শিশুদের মৃতদেহ ও দগ্ধ আহতদেহ বেরিয়ে আসছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যস্ত ছিল তাদের উদ্ধার তৎপরতায়, অ্যাম্বুলেন্সগুলো আহত শিশুদের নিয়ে ছুটছিল হাসপাতালে হাসপাতালে, ডাক্তার-নার্সরা ছোটাছুটি করছিল এসব যন্ত্রণাকাতর শিশুদের কত দ্রুত সেবা দেয়া যায় তখনই আমরা দেখলাম দেশের কতিপয় রাজনীতিবিদ হাসপাতালে গিয়ে ভিড় করেছেন। তাদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের চারপাশে ভিড় আরও বেড়ে যায়। আহতদের নিয়ে যাতায়াত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকের প্রশ্ন, এ সময় রাজনীতিবিদরা হাসপাতালে কী চান? তারা কি প্রচারণার জন্য এসেছেন? জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
ভোট, ব্যালট, ব্যঙ্গ: একটি গণতান্ত্রিক অনিশ্চয়তার প্রতিকৃতি
বাংলাদেশের নির্বাচনি রাজনীতি এখন এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, যেখানে সংবাদ পড়া আর কৌতুক শোনা প্রায় একই অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন কবে হবে? বলা যায় এ নিয়ে 'ট্যাগ অব ওয়ার' চলছে রাজনৈতিক দল, বিশেষত বিএনপি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে। কেউ বলছেন, এগুলো রাজনৈতিক নাটক। কেউ বলছেন, এটি গণতন্ত্রের শেষ স্তবক। কিন্তু যেটাই বলা হোক না কেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে একজন সাধারণ নাগরিকের মনে যা গভীরভাবে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, তা হলো: ভোটে কি আদৌ কিছু বদলায়?
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়ানো কতটা সহজ?
যে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে- সেই দলটি দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫৩ বছর পর গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হলো- তার পেছনে অন্তত বিশটি কারণ আছে। এখানে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা বিদেশি ইন্ধনের অভিযোগ যতই থাকুক, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ যে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল- সেটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই।
অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারে দৃষ্টান্ত স্থাপন না করলে, আর হবে না!
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কারের ওপর অত্যধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘ঠুনকো সংস্কার না, লোক দেখানো সংস্কার না, একদম ফান্ডামেন্টাল সংস্কার। এটা এমনভাবে করব আর কেউ পাল্টাতে পারবে না।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘আমার একটাই কথা- সংস্কার। সংস্কারে কী কী বিষয় হবে, সেটা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা করেন; কিন্তু সংস্কার না করে যেন নির্বাচন না করি।… এই সুযোগ হারাবেন না।’ তিনি চমৎকার বলেন; কিন্তু তা তিনি বাস্তব অবস্থা বিচার করে বলেন না। তিনি স্বপ্ন দেখেন; কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে গিয়ে হতাশ হন। কেউ যাতে সংস্কার পাল্টাতে না পারে সেই ব্যবস্থা তিনি নেবেন- এই কথাটি বাস্তবতা বিবর্জিত আবেগের কথা।
সত্য বললে আর নির্বাচন চাইলে বলে ভারতের দালাল
রাজনীতির চারণকবিখ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। সাবেক সংসদ সদস্য, কিশোরগঞ্জ-৩। কিশোরগঞ্জ জেলা মুজিব বাহিনীর প্রধান ছিলেন তিনি। দেশ, মাতা, রাজনীতি, রাষ্ট্রীয় যে কোনো সংকট-দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে তিনি আবির্ভূত হন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে। সর্বোচ্চ সোচ্চার থাকেন ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আপসহীন এ ব্যক্তিত্ব কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের করনসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। সম্প্রতি ভিউজ বাংলাদেশের মুখোমুখি হন বরেণ্য এ রাজনীতিবিদ। কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী বাংলাদেশ, রাজনীতি, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানসহ সমসাময়িক বিষয়ে। তিন পর্বের সাক্ষাৎকারের আজ প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় পর্ব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী এই সংগঠন শিগগিরই একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। দল গঠনের এই উদ্যোগকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আপাতদৃষ্টিতে এটি একটি ছাত্র আন্দোলন মনে হলেও, বাস্তবে এর রাজনৈতিক অভিসন্ধি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য চান জামায়াত আমির ও চরমোনাই পীর
দেশের ইসলামী দলগুলোর ঐক্য প্রশ্নে জনসাধারণের কাছে দোয়া চেয়েছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। ইসলামী দলগুলো ভোটকেন্দ্রে একটি বাক্স পাঠাতে চায় বলে জানিয়েছেন দুই দলনেতা।
সব দলীয় সরকারই অন্য সরকারের অবদানকে কেন অস্বীকার করে?
জুলাই এবং আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিজয়ে বড় ভাগ বসাতে চায় বিএনপি; জামায়াতে ইসলামও চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জামায়াতকে স্বীকৃতি দিলেও বিএনপিকে বেশি কৃতিত্ব দিতে আগ্রহী নয়। তাই দুপক্ষের মধ্যে মাঝে মাঝে বাকযুদ্ধ হয়। বিএনপি মনে করে তারা পনেরো বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে, তাদের সংগ্রাম অব্যাহত না থাকলে শুধু জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন সম্ভব হতো না। কথাটি মিথ্যা নয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়ার ফলে ১৬ ডিসেম্বরে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে।