বিএনপি-জামায়াত
জাতিসংঘের অধিবেশনে সর্বোচ্চ ৭ জন উপস্থিত থাকতে পারেন, তাহলে বিরাট লটবহর কেন?
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গিয়েছিলেন। উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পদমর্যাদার সাতজন ছাড়াও তিনটি রাজনৈতিক দলের ছয়জন নেতা- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের ও ড. নকিবুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হয়েছেন। প্রথমে ড. নকিবুর রহমান ও তাসনিম জারা প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না, জামায়াত এবং এনসিপির অনুরোধে তাদের পরবর্তীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বৈষম্য নিরসনের শপথ নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি থেকে দুইজন প্রতিনিধি নিয়ে যে বৈষম্য সৃষ্টি করেছিলেন তা এভাবে দূর করা হলো; কিন্তু বৈষম্য সম্পূর্ণ দূর হলো না। সংস্কার ইস্যুতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় অন্তত ৩০টি দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন; এই ৩০টি দলের মধ্য থেকে মাত্র ৩টি দলকে এই সফরে অংশীদার করায় বাকি দলগুলোর গুরুত্বের মাত্রা জনগণকে এভাবে বুঝিয়ে দেয়ার দরকার ছিল না, দরকার ছিল না ৩টি দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে বাকি ২৭টি দলের সঙ্গে বৈমষ্যমূলক আচরণ করার।
তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার ও বিএনপির রাজনীতির ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিবিসি বাংলাকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। দীর্ঘ সতেরো বছর নির্বাসনে থেকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারটি শুধু তার ব্যক্তিগত প্রত্যাবর্তনের বার্তা নয়; বরং এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে সম্ভাব্য নতুন সমীকরণের ইঙ্গিতও বহন করে। ক্ষমতার পালাবদলের অন্যতম দাবিদার বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্বের সংকট, দলীয় বিভাজন, দুর্নীতির অভিযোগ ও কার্যকর আন্দোলনের ব্যর্থতায় দুর্বল হয়ে পড়েছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে দলের শীর্ষ নেতার এই প্রকাশ্য রাজনৈতিক ভাষ্য নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে- কেউ এটিকে বিএনপির পুনর্জাগরণের সূচনা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ মনে করছেন এটি এখনো এক অনির্ধারিত প্রতিশ্রুতি।
জাতিসংঘের বার্ষিক অধিবেশন, ডিম নিক্ষেপ ও সচেতন নাগরিকদের কয়েকটি প্রশ্ন
প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে বসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (UNGA) বার্ষিক অধিবেশন। পৃথিবীর প্রায় সব রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা সরকারপ্রধান সেখানে সমবেত হন। রাষ্ট্রপ্রধানরা নিজেদের দেশের অবস্থান, সংকট ও অগ্রাধিকার তুলে ধরেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন এবং নানা বৈঠকে অংশ নেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই সফর ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব সরকারই এই সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।
নির্বাচন কেমন হবে সরকারকে কথায় নয়, কাজে প্রমাণ করতে হবে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে। সেটি হবে মহোৎসবের নির্বাচন, যদি আমরা ঐকমত্যের মাধ্যমে ফয়সালা করতে পারি। এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি হবে জাতির নবজন্ম।’ গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আবারও নিজের এই দৃঢ় অবস্থান ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগ-বিএনপি দুপক্ষের সঙ্গেই জামায়াতের হানিমুন পিরিয়ড গেছে
লেখক-গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। একাধারে তিনি ইতিহাসবেত্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতাযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লিখেছেন, বিশ্লেষণ করেছেন ও গবেষণা করেছেন তাদের অন্যতম তিনি। তিনি বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক লেখক, যিনি ১৯৭৩-এর নির্বাচন নিয়ে লিখেছেন ‘তিয়াত্তরের নির্বাচন’ নামে একটি বই। লিখেছেন ‘লাল সন্ত্রাস: সিরাজ সিকদার ও সর্বহারা রাজনীতি’, ‘প্রতিনায়ক সিরাজুল আলম খান’, ‘আওয়ামী লীগ বিএনপি কোন পথে’, ‘জাসদের উত্থান-পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি’ ইত্যাদি গ্রন্থ। সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে এখনো লিখে চলেছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য শুধু মুখে, কাজে নয় কেন?
আমাদের দেশের রাজনীতিতে এখনো পুরোপুরি ঐক্য দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর যথেষ্ট টানাপড়েন দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। তা ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। সংগত কারণেই নির্বাচন প্রসঙ্গটি সবার কাঙ্ক্ষিত হয়ে উঠছে। অথচ নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য থেকেই গেছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলো যথাযথ ভাবে জনগণের কাছে পৌঁছতে পারছে কি না কিংবা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। অথচ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রধান কাজ। দেশের সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য মাঝেমধ্যে এই ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয়েছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে।
অসমাপ্ত আত্মজীবনী বঙ্গবন্ধুরই লেখা
আবুল কাসেম ফজলুল হক। বাংলা ভাষার প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক, সমাজ বিশ্লেষক, সাহিত্য সমালোচক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক ‘ভিউজ বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে কথা বলেছেন সাম্প্রতিক কয়েকটি বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ‘ভিউজ বাংলাদেশ’-এর এডিটরিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট শাহাদাত হোসেন তৌহিদ।
সহিংসতাহীন নির্বাচন নিশ্চিত করতে আগেভাগে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন
নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে । ডাকসু নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে মাঠ গরম হয়ে গেছে। কিছুদিন আগে প্রধান উপদেষ্টা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবে ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোও উঠেপড়ে লেগেছে নিজেদের শেষ প্রস্তুতি নেয়ার জন্য। সে অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোড ম্যাপ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এবং তপশিল ঘোষণা হবে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে।
বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু এবং একটি দালিলিক এপিটাফ
সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকার বাংলাদেশের সৎ সাংবাদিকদের জন্য একটি বেদনার বার্তা রেখে গেছেন, যেটাকে বলা যেতে পারে তার নিজের লিখে যাওয়া এপিটাফ। যে এফিটাফ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশে পেশাদার সাংবাদিকতার দৈন্যদশার নিদারুণ দলিল।
সর্বদলীয় ঐক্য করে পাথর খাওয়া শেষ করে টিলাও খেতে হবে!
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হওয়া পাথর লুট বিগত এক বছরে গণহারে বিরামহীনভাবে চলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় এই লুটের কাহিনি প্রচার হলেও সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙেনি। ঘুম ভেঙেছে পাথর লুট শেষ হওয়ার পর। লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে যৌথবাহিনী ১৩ আগস্ট থেকে অভিযানে নামে এবং পাথরবোঝাই ১৩০টি ট্রাক জব্দ করে। জেলা প্রশাসকের বক্তব্য অনুযায়ী জব্দ করা পাথরগুলো যেসব এলাকা থেকে লুট হয়েছে সেসব এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হবে, অবশ্য এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে। পাথর হচ্ছে খনিজসম্পদ, তাই এই পাথরের ওপর কর্তৃত্ব খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের, পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদান বা উত্তোলন বন্ধ করার ক্ষমতা খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের। তবে পাথর উত্তোলনে পরিবেশের ক্ষতি হলে পরিবেশ মন্ত্রণালয় তাতে আপত্তি উত্থাপন করতে পারে।