Views Bangladesh Logo
author image

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

  • ইমেরিটাস অধ্যাপক

  • থেকে

ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য
বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য

বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো বৈষম্য

আমাদের যত যত সমস্যা ও ব্যর্থতা তার পেছনে যে দারিদ্র্য রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে কী? যেমন, পরিবার পরিকল্পনা। ছোট পরিবার সুখী পরিবার-এটা সত্য; কিন্তু তারও চেয়ে বড়ো সত্য হচ্ছে ধনী পরিবার মানেই ছোট পরিবার। পরিবার ছোট হলেই যে সুখী হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। অসুখ-বিসুখ, ঝগড়া-কলহ, মনোমালিন্য, অধিক আদরে ছেলে-মেয়ে নষ্ট-ইত্যাদি সমস্যা থাকতেই পারে। থাকেই। অনেকে তো বিয়েই করতে পারেনি, নিজেই নিজের পরিবার এবং পরিবার পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে আদর্শ বটে; কিন্তু তেমন পুরুষ কিংবা মহিলা, বিশেষ করে মহিলা, নিজেকে আদর্শ মানুষ কিংবা স্বর্গসুখ ভোগকারী ব্যক্তিত্ব বলে মনে করেন এমনটা মনে হয় না।

সাহিত্যের রাষ্ট্রবিরোধিতা
সাহিত্যের রাষ্ট্রবিরোধিতা

সাহিত্যের রাষ্ট্রবিরোধিতা

কবিতা না লিখলেও প্লেটো যে একজন কবি ছিলেন তা তার গদ্য রচনার পরতে পরতে প্রমাণিত। উপমায়, রূপকে, শব্দ চয়নে ওই দার্শনিক তার অন্তর্গত কবির কল্পনা ও সৌন্দর্যবুদ্ধি উভয়কেই ব্যবহার করে গেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে কবিতার গুণ ও আবেদন তিনি যে জানতেন তাতেও সন্দেহ করবার অবকাশ নেই; কিন্তু তিনি তার আদর্শ রাষ্ট্রে কবিদের জন্য কোনো জায়গা রাখেননি। জায়গা রাখবেন কি, নির্দেশ দিয়েছেন তাদেরও বের করে দেবার জন্য। কবিদের সম্মান দেয়া হবে, মালা ও সুগন্ধী দিয়ে তাদের সজ্জিত করা যাবে; কিন্তু তাদের সবিনয়ে বলতে হবেঃ মহাশয়বৃন্দ, আপনাদের জন্য আমাদের রাষ্ট্রে কোনো স্থান নেই।

রবীন্দ্রনাথ: নায়ক একবারই আসেন, বারবার নয়
রবীন্দ্রনাথ: নায়ক একবারই আসেন, বারবার নয়

রবীন্দ্রনাথ: নায়ক একবারই আসেন, বারবার নয়

আপনি, রবীন্দ্রনাথ, রাষ্ট্রে বিশ্বাস করতেন না; বিশ্বাস করতেন সমাজে। ভারতবর্ষে সমাজই বড়, রাষ্ট্র এখানে একটি উৎপাত বিশেষ- এ আপনার ধারণার অন্তর্গত ছিল। রাষ্ট্র ছিল বাইরের। সমাজ আমাদের নিজস্ব। সমাজকে আমরা নিজের মতো গড়ে তুলব- এই আস্থা আপনার ছিল; কিন্তু রাষ্ট্রের উৎপাত কমেনি, ক্রমাগত বেড়েছে। রাষ্ট্র হয়ে দাঁড়িয়েছে শোষণ ও লুণ্ঠনে অতিশয় বিশ্বস্ত যন্ত্র। যন্ত্র সে শাসকদের হাতে। শাসকরা অধীন সাম্রাজ্যবাদের হাতে। আমরা দেখছি, রাষ্ট্র আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক দক্ষ ও সর্বগ্রাসী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি আছে এনজিও। এরা অনেকটা মিশনারিদের মতো।

গণঅভ্যুত্থানের সাত মাসের মাথায় দেশের এ কী হাল!
গণঅভ্যুত্থানের সাত মাসের মাথায় দেশের এ কী হাল!

গণঅভ্যুত্থানের সাত মাসের মাথায় দেশের এ কী হাল!

এই ২০২৫-এর মার্চেও দেশে চলছে নারী ও শিশু নির্যাতন। সংবাদপত্রে ছাপা হচ্ছে নিষ্ঠুর সব বিবরণ। আহা, নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাত মাসের মাথায় দেশের এ কী হাল! কোথায় সরকার? কোথায় আইনের শাসন

ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছরে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ কেন করতে হবে!
ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছরে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ কেন করতে হবে!

ভাষা আন্দোলনের ৭২ বছরে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ কেন করতে হবে!

ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছরে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ নিয়ে বলতে হচ্ছে, স্বাধীন দেশে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে যে মর্যাদা বাংলার পাওয়ার কথা, তা সে পায়নি। বাংলা যে আজও তার সঠিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারল না, এর পেছনে দেশে একই সঙ্গে তিন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমান থাকা, উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার না হওয়া, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া ইত্যাকার নানাবিধ কারণের কথা বলা যাবে। তবে মূল কারণ অন্বেষণের জন্য আমাদের আরেকটু গভীরে তাকাতে হবে।

রাষ্ট্র যখন বৈষম্যের সন্তান এবং বৈষম্যের প্রতিপালক
রাষ্ট্র যখন বৈষম্যের সন্তান এবং বৈষম্যের প্রতিপালক

রাষ্ট্র যখন বৈষম্যের সন্তান এবং বৈষম্যের প্রতিপালক

আপনি, রবীন্দ্রনাথ, রাষ্ট্রে বিশ্বাস করতেন না; বিশ্বাস করতেন সমাজে। ভারতবর্ষে সমাজই বড়, রাষ্ট্র এখানে একটি উৎপাত বিশেষ- এ আপনার ধারণার অন্তর্গত ছিল। রাষ্ট্র ছিল বাইরের। সমাজ আমাদের নিজস্ব। এই সমাজকে আমরা নিজের মতো গড়ে তুলব, এই আস্থা আপনার ছিল; কিন্তু রাষ্ট্রের উৎপাত কমেনি, ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্র হয়ে দাঁড়িয়েছে শোষণ ও লুণ্ঠনে অতিশয় বিশ্বস্ত যন্ত্র। যন্ত্র সে শাসকদের হাতে। শাসকরা অধীন সাম্রাজ্যবাদের হাতে। আমরা দেখছি রাষ্ট্র আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক দক্ষ ও সর্বগ্রাসী হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি আছে এনজিও। এরা অনেকটা মিশনারিদের মতো। নতুন ধর্ম প্রচার করছে, সেটি হলো পুঁজিবাদ। রাষ্ট্র নিজে পুঁজিবাদী ও আমলাতান্ত্রিক; এনজিওদের সাহায্য দানও পুঁজিবাদী; তাদের লক্ষ্য মানুষকে বিশ্ব পুঁজিবাদের অংশ করে ফেলা। রুশ বিপ্লবের পর, রবীন্দ্রনাথ, আপনি সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন। গিয়ে মনে হয়েছিল আপনার যে আপনি তীর্থ দর্শনে এসেছেন। মানব-মুক্তির নব আয়োজন আপনাকে অভিভূত করেছিল। সেই সোভিয়েত এখন আর নেই। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এখন সেখানে বিদেশি বণিক ও স্বদেশি মতলবীদের দানবীয় পদচারণায় নতুন মানুষ সৃষ্টির সমস্ত উদ্যমসহ সবকিছুই লন্ডভন্ড।