Views Bangladesh Logo
author image

যতীন সরকার

  • প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ

  • থেকে

লেখক: প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ
মাস্টার রূপেই আমি সফল, লেখক রূপে নই
মাস্টার রূপেই আমি সফল, লেখক রূপে নই

মাস্টার রূপেই আমি সফল, লেখক রূপে নই

প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার (১৮ আগস্ট ১৯৩৬-১৩ আগস্ট ২০২৫) জ্ঞানসাধনায় ঋদ্ধ পুরুষ। যিনি আপন মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখেন সমগ্র পৃথিবীর সূর্যোদয়। ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু-দর্শন’ তার সৃষ্ট আত্মজৈবনিক বই পাঠ করে আমরা সহজেই জানতে পারি কী করে তিনি যতীন সরকার হয়ে উঠলেন। যতীন সরকার ‘দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদী’ দর্শনের অনুসারী। আর সে চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে তার ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’ বইয়ে। যদিও তিনি মনে করেন তার ‘প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন’ বইটিতেই তিনি ভিন্নধর্মী ও স্বতন্ত্র চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। পঞ্চাশ বছর বয়সে ১৯৮৫ সালে যতীন সরকারের প্রথম বই ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’ প্রকাশিত হয়। সব ধরনের বই মিলিয়ে এ পর্যন্ত তার প্রায় অর্ধশতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) এই মহান চিন্তাবিদ মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুর অনেক আগে একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে ছিলেন কবি শিশির রাজন। সেই সাক্ষাৎকারটি যতীন সরকারের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হলো।

ইংরেজি বিদ্যায় বাঙালির হালচাল
ইংরেজি বিদ্যায় বাঙালির হালচাল

ইংরেজি বিদ্যায় বাঙালির হালচাল

বাঙালি ইংরেজি শিখতে শুরু করেছে কবে থেকে? নিশ্চয়ই যখন থেকে ইংরেজি শিক্ষাটা তার বৈষয়িক স্বার্থের অনুকূল রূপে দেখা দিয়েছে। সে সময়টা অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধ। ১৭৫৭-তে পলাশীর ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার মধ্য দিয়ে বাংলার স্বাধীনতার অবসান ঘটলো যদিও, তবু এদেশে ইংরেজের রাজত্ব গুছিয়ে নিতে কয়েক বছর সময় লেগেছিল অবশ্যই। তাই, তখনই ইংরেজের ভাষা এ দেশে রাজভাষা হয়ে ওঠেনি এবং বাঙালি সন্তানদের পক্ষেও রাজানুগ্রহ লাভের জন্য ইংরেজি ভাষা রপ্ত করার প্রয়োজন দেখা দেয়নি। ১৭৭৪ সালে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বোঝা গেল যে, পুরোনো কেতায় আর জীবন চলবে না; ইংরেজ আর এখন শুধু বণিক নয়- রীতিমতো বণিকরাজ, সে বণিকরাজের প্রসাদভোগী হওয়ার জন্য তার ভাষাটা আয়ত্ত করা প্রজাকুলের একান্ত প্রয়োজন।

নববর্ষ উৎসব বাঙালির সরলরেখার ঐকতান
নববর্ষ উৎসব বাঙালির সরলরেখার ঐকতান

নববর্ষ উৎসব বাঙালির সরলরেখার ঐকতান

নববর্ষের শুরুতে সবাই কেবল মঙ্গল শুভেচ্ছাই প্রকাশ করে। আমি কিন্তু শুভেচ্ছার পাশাপাশি ঘৃণার কথা বলি। ঘৃণা, ঘৃণা, ঘৃণা! রুদ্র, প্রচণ্ড, প্রকট, প্রচুর, পবিত্র ঘৃণা! হ্যাঁ, বর্ষ শুরুতে অন্যের মতো আমিও শুভেচ্ছা জানাই বটে। তবে পাত্র-অপাত্র-নির্বিশেষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে রাজি নই। বন্ধুর জন্য আমি শুভেচ্ছার ডালি উজাড় করে দিই; কিন্তু শত্রুর জন্য শুভেচ্ছা নয়, তাকে কেবলই ঘৃণা। ঘৃণা জানাই তাদের যারা নববর্ষের মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক উৎসবকে বিভিন্ন রং মাখিয়ে বিতর্ক তৈরি করে নিজেদের সুবিধা হাসিল করে। তাই নববর্ষের দিনেও এদের যদি আমরা ক্ষমা করে দিই, তবে সে ক্ষমাকে তারা আমাদের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ বলেই ধরে নেবে এবং শত্রুতা সাধনে আরও প্রচণ্ড হিংস্র হয়ে উঠবে।

রাষ্ট্রীয় সব কাজ মাতৃভাষায় প্রকাশ করতে হবে
রাষ্ট্রীয় সব কাজ মাতৃভাষায় প্রকাশ করতে হবে

রাষ্ট্রীয় সব কাজ মাতৃভাষায় প্রকাশ করতে হবে

আমি তো মনে করি, শত্রু কখনো কখনো শত্রুতা সাধন করতে গিয়ে মিত্রের কাজ করে বসে। শত্রু যখন শত্রুতা সাধনে বিরত থাকে কিংবা কিছু উদারতা প্রদর্শন করে, তখন বরং নানা রকম বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়, শত্রুর প্রতি মনোভাব অনেক নরম হয়ে আসে। শত্রুর এরকম অবস্থান শুধু বিভ্রান্তিকর নয়, ক্ষতিকরও। শত্রু বুদ্ধিমান হলেই এমন ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে সুখের কথা এই, বুদ্ধিমান শত্রুরও মাঝে মাঝে বুদ্ধিবিভ্রম ঘটে থাকে। সে রকম বুদ্ধিবিভ্রমের শিকার শত্রুই মিত্রের চেয়েও বড় মিত্র হয়ে যায়। সেভাবেই বাঙালি ও বাঙালিত্বের মহাদুশমন এবং পাকিস্তান-স্রষ্টা একান্ত ধূর্ত ও অতি বুদ্ধিমান দুই ‘কায়েদ’ কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও কায়েদে মিল্লাত লিয়াকত আলী খান বাঙালি জাতির পরম মিত্রতা সাধন করেছিলেন।

বৈষম্য নিরোধ না হলে স্বাধীনতার মূল্যবোধের জাগরণ ঘটবে না
বৈষম্য নিরোধ না হলে স্বাধীনতার মূল্যবোধের জাগরণ ঘটবে না

বৈষম্য নিরোধ না হলে স্বাধীনতার মূল্যবোধের জাগরণ ঘটবে না

বাংলাদেশের যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আমরা কি তা থেকে আরও দূরে সরে গেছি? আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ কি ইতিবাচক দিকে হয়েছে? দুর্বলতা কোথায়, ভবিষ্যৎই-বা কী।