যতীন সরকার
কর্মের মধ্যে কমরেড যতীন সরকার বেঁচে থাকবেন
অধ্যাপক যতীন সরকার আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি তেমন বিত্তবান ঘরের সন্তান ছিলেন না; কিন্তু জ্ঞানের ঐশ্বর্যে তিনি ছিলেন বিত্তবান। ছিলেন প্রান্তজন। ছোটবেলা থেকেই খুব কষ্ট করে বড় হয়েছেন। লেখাপড়াও করেছেন খুব কষ্টের মধ্যে; কিন্তু চিন্তার দিক থেকে তিনি যখন মার্কসবাদ চিন্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হন, তখন তার বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হয়। আমৃত্যু তিনি মার্কসবাদ, লেলিনবাদী দর্শনে বিশ্বাস করতেন; কিন্তু চর্চার দিক থেকে তিনি ছিলেন লোকজ। চর্চার দিক থেকে তিনি কোনো ডগমেটিক ছিলেন না। মতান্ধ ছিলেন না। নতুনকে ধারণ করার ক্ষমতা ওনার মধ্যে ছিল প্রবল।
মাস্টার রূপেই আমি সফল, লেখক রূপে নই
প্রাবন্ধিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার (১৮ আগস্ট ১৯৩৬-১৩ আগস্ট ২০২৫) জ্ঞানসাধনায় ঋদ্ধ পুরুষ। যিনি আপন মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখেন সমগ্র পৃথিবীর সূর্যোদয়। ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু-দর্শন’ তার সৃষ্ট আত্মজৈবনিক বই পাঠ করে আমরা সহজেই জানতে পারি কী করে তিনি যতীন সরকার হয়ে উঠলেন। যতীন সরকার ‘দ্বান্দ্বিক ও ঐতিহাসিক বস্তুবাদী’ দর্শনের অনুসারী। আর সে চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে তার ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’ বইয়ে। যদিও তিনি মনে করেন তার ‘প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন’ বইটিতেই তিনি ভিন্নধর্মী ও স্বতন্ত্র চিন্তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। পঞ্চাশ বছর বয়সে ১৯৮৫ সালে যতীন সরকারের প্রথম বই ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’ প্রকাশিত হয়। সব ধরনের বই মিলিয়ে এ পর্যন্ত তার প্রায় অর্ধশতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) এই মহান চিন্তাবিদ মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুর অনেক আগে একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে ছিলেন কবি শিশির রাজন। সেই সাক্ষাৎকারটি যতীন সরকারের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হলো।
বৈষম্য নিরোধ না হলে স্বাধীনতার মূল্যবোধের জাগরণ ঘটবে না
বাংলাদেশের যে লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আমরা কি তা থেকে আরও দূরে সরে গেছি? আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ কি ইতিবাচক দিকে হয়েছে? দুর্বলতা কোথায়, ভবিষ্যৎই-বা কী।