চিপ যুদ্ধ
শত্রুর শত্রুই মিত্র: কোরিয়ার উত্থান
লি বিয়ং-চুল ছিলেন এক জন্মগত ব্যবসায়ী। তার হাতে যেন জাদু ছিল- তিনি যে ব্যবসায় হাত দিতেন তাতেই সফল হতেন। ১৯৩৮ সালে যখন চারদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে, কোরিয়া জাপানের শাসন থেকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে, তখন তিনি শুরু করলেন তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান স্যামসাং।
ভয়ই যেখানে প্রেরণা: যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল ইন্টেল
ইন্টেলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডি গ্রোভ ছিলেন এক তেজি মানুষ। তার জীবন ছিল এক কঠোর লড়াইয়ের গল্প। তিনি ছিলেন হাঙ্গেরির এক শরণার্থী, যিনি সোভিয়েত ও নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। ভয় আর শৃঙ্খলাই ছিল ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তার মূলমন্ত্র। তার বিখ্যাত বই ‘অনলি দ্য প্যারানয়েড সারভাইভ’-এ তিনি লিখেছেন: প্রতিযোগিতার ভয়, দেউলিয়া হওয়ার ভয়, আর ব্যর্থ হওয়ার ভয়- এসবই মানুষকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এক শক্তিশালী প্রেরণা জোগায়।
জাপানের সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর যুদ্ধ: সিলিকন ভ্যালির কঠিন লড়াই
এএমডির সিইও জেরি স্যান্ডার্স চিপ ব্যবসায় প্রবেশ করেছিলেন এক যুদ্ধংদেহি মনোভাব নিয়ে, বিশেষ করে তার পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টেলের বিরুদ্ধে; কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে ইন্টেল নয়, জাপানই হয়ে উঠেছিল তার নতুন, আরও ভয়ংকর প্রতিদ্বন্দ্বী।
ইন্টেলের বিপ্লবীরা: সিলিকনের এক নতুন যুগ
১৯৬৮ সাল, বিশ্ব তখন বার্কলির ছাত্র আন্দোলন আর বেইজিংয়ের কমিউনিস্ট উত্তালতায় কাঁপছে। এরই মধ্যে ‘প্যালো অল্টো টাইমস’ একটি ছোট্ট অথচ যুগান্তকারী খবর ছাপে, যার শিরোনাম ছিল: ‘ফেয়ারচাইল্ড ছাড়লেন প্রতিষ্ঠাতারা; গড়ছেন নিজেদের ইলেকট্রনিকস কোম্পানি।’ বব নয়েস ও গর্ডন মুর, ফেয়ারচাইল্ডের করপোরেট হস্তক্ষেপে বিরক্ত আর সীমিত স্টক অপশনে অসন্তুষ্ট হয়ে নতুন কিছু গড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এশিয়ার ট্রানজিস্টর গার্লদের সস্তা শ্রমের হাত ধরে বিশ্ব চিপ শিল্পের উত্থান
আধুনিক সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের একেবারে গোড়ার দিকে, চিপ তৈরির বিপ্লবে এশিয়ার নারী শ্রমিকরা এক অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন। যদিও ট্রানজিস্টরের ডিজাইন নিয়ে মূলত পুরুষ কাজ করতেন; কিন্তু সেই ডিজাইন করা চিপকে হাতে ধরে বাস্তব পণ্যে রূপান্তর করার জন্য দরকার ছিল এমন একগুচ্ছ দক্ষ হাত, যা হবে দ্রুত, নিখুঁত এবং একই সঙ্গে সাশ্রয়ী। এই অভাব পূরণ করেছিলেন নারীরা, বিশেষ করে অ্যাসেম্বলি লাইনে কাজ করা নারী শ্রমিকরা।