বিচারিক আদালত মনিটরিং কমিটি চূড়ান্ত, কার্যক্রম শুরু জুলাইয়ে
দেশের ৮টি বিভাগে চলমান সব বিচারিক আদালত মনিটরিংয়ের জন্য ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ কমিটি চূড়ান্ত করেছেন। দ্য সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ (হাইকোর্ট ডিভিশন রুলস), ১৯৭৩ অনুযায়ী ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন করা হয়েছে। আগামী জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকেই এ কমিটির কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দেশের চলতি জুন মাসের ২ তারিখে দেশের ৮টি বিভাগের জন্য পৃথক ১৩টি ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ চূড়ান্ত করেছেন। এই ১৩টি কমিটির প্রত্যেকটিতে হাইকোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের সাচিবিক সহায়তার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিচার বিভাগীয় ১৩ কর্মকর্তাকেও। প্রতিটি কমিটি তার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার প্রতিটি আদালতের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনে আইনিসহ সব ধরনের সহায়তা করবেন। এক্ষেত্রে দরকার হলে প্রধান বিচারপতিকে অবগত করে যে কোনো বিষয় সমাধান করবেন কমিটি প্রধান। এছাড়া সব বিচারিক আদালতের মামলা জট কমানো, মেডিয়েশন ও অলটারনেটিভ ডিসপুট রেজুলেশন বা এডিআর (Alternative Dispute Resolution) বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ও জটিল মামলা নিষ্পত্তিতে এই কমিটি কাজ করবে।
যাদের যেসব জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা হলেন- ১. বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল, বরিশাল বিভাগ (বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার বেগম মেফতাহুল জান্নাত। ২. বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিভাগ ঢাকা-১ (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী ও টাঙ্গাইল), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ মোস্তফা রপজা নূর। ৩. বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি, রাজশাহী-২ বিভাগ (বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সরকারি রেজিস্ট্রার মো. ওমর হায়দার। ৪. বিচারপতি মাহমুদুল হক, বিভাগ খুলনা-১ (খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর ও নড়াইল), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার বেগম সেলিনা খাতুন। ৫. বিচারপতি জাফর আহমেদ, বিভাগ খুলনা-২ (কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন গবেষণা ও তথ্য কর্মকর্তা রাগিব মাহতাব। ৬. বিচারপতি ফাতেমা নজীব, বিভাগ ঢাকা-২ (কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সরকারি রেজিস্ট্রার (রিসার্চ ইউনিট) সিরাজুম মুনিরা। ৭. বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিভাগ চট্টগ্রাম-১ (চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার শোভন শাহরিয়ার। ৮. বিচারপতি আহমেদ সোহেল, বিভাগ চট্টগ্রাম-২ (নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার (রিসার্চ ইউনিট) মো. মঈনউদ্দিন কাদির। ৯. বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর, বিভাগ রাজশাহী-১ (রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার বেগম সাদিয়া আফরীন। ১০. বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম, বিভাগ রংপুর-২ (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন রেজিস্ট্রার জেনারেলের একান্ত সচিব মো. হাসিবুল হোসেন লাবু। ১১. বিচারপতি শাহেদ নূরুদ্দিন, বিভাগ রংপুর-১ (রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মাহমাদুল হাসান খান। ১২. বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী, বিভাগ-সিলেট (সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার আকরামুল ইসলাম ও ১৩. বিচারপতির মো. মাহমুদ হাসান তালুকদার, বিভাগ- ময়মনসিংহ (ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর ও নেত্রকোনা), তাকে সাচিবিক সহায়তা করবেন সহকারী রেজিস্ট্রার এসএম সাদাকাত মাহমুদ।
এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ দেশের সব বিচারিক আদালত মনিটরিংয়ের জন্য ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন চূড়ান্ত করেছেন। ৮টি বিভাগের জন্য গঠন করা পৃথক ১৩টি কমিটি আগামী জুলাই মাসের শুরু থেকেই তাদের কার্যক্রম শুরু করবেন। প্রতিটি কমিটির প্রধান করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে। বিচার বিভাগীয় একজন করে কর্মকর্তা তাদের সাচিবিক সহায়তা করবেন। সব কমিটির কাজ তদারকি করবেন প্রধান বিচারপতি নিজে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি ‘মনিটরিং কমিটি ফর সাবঅর্ডিনেট কোর্টস’ গঠন চূড়ান্ত করেছেন। এটা বিচার বিভাগ ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য আাশীর্বাদ হবে। বিচারিক আদালতের মনিটরিং কার্যক্রম পুরোপুরি কার্যকর হলে দেশের বিচারিক কার্যক্রমে আরও গতি আসবে বলে আশা করছি।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে