Views Bangladesh Logo

তত্ত্বাবধায়কের কথা প্রথমে জামায়াতই বলছিল: বিএনপির আইনজীবী

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে করা আপিলের ৫ম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে। বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বিভাগ বেঞ্চে এ শুনানি শেষ হয়। শুনানিতে বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা জামায়াতে ইসলামী প্রথম উপস্থাপন করেছে। এরপর আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি উপস্থাপন করে। পরে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। অথচ এখন জামায়াত বলছে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা এখনই নয়।’

এর আগে গতকাল ২৮ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের চতুর্থদিনের শুনানি শেষ হয়। এদিন জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি শেষ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

তিনি শুনানিতে বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘সংসদ ভেঙে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের কথা বলা আছে। এখন তো কোনও সংসদ নেই। সংসদ ভেঙে গেছে এক বছরের বেশি সময় আগে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ চালাচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু বিষয় রয়েছে। এ কারণে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন নির্বাচনে এটি সম্ভব নয়।’

গত ২৩ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের তৃতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। গত ২২ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। ওইদিন রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। তার আগের দিন ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ ৫ জন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ ওই রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।

এর বিরুদ্ধে করা আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।

ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। এরপর আরেকটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ