কূটনীতি
ভারত পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ যুদ্ধের সম্ভাবনা
৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত চার দিন শুধু উপমহাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যেই ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করেছে। এই চার দিন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি যে মিসাইল, ড্রোন ও বিমান হামলা চলেছে তা দুই পরমাণু শক্তিধর দেশকে ফুল স্কেল ওয়ারের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী এত আতঙ্ক সত্ত্বেও যুদ্ধ শুরুর পর প্রথম তিন দিনে দুপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কাউকে দেখা যায়নি। তখন ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ের বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই কোনো আপোষের চিহ্ন ছিল না। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের এক উক্তি বিশ্বব্যাপী শান্তিপ্রিয় মানুষকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বলেছিলেন, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ আমাদের বিজনেস নয়।
ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ: পরমাণু অস্ত্রের আতঙ্ক এবং শক্তিধর দেশগুলোর ভূমিকা
পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে ৭ তারিখ থেকে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তা নিয়ে সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো, এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে কোনো শক্ত মধ্যস্থতা, অথবা ডি-এক্সলেশনের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। হ্যাঁ, চীন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইরান মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি এরই মধ্যে দুদেশ সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুই দেশের সঙ্গেই টেলিফোনে যোগাযোগ রাখছেন। তারপরও দুই পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন দেশের মধ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার উদ্যোগ পর্যাপ্ত মনে হচ্ছে না।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বন্ধ হবে?
আজ ২৮ এপ্রিল, ২০২৫। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৩ বছর ৩ মাস ৫ দিনে গড়াল। অর্থাৎ ১ হাজার ১৫৯ দিনে। হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির দিক দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ যুদ্ধ ইউরোপের সবচেয়ে ভয়াবহ। ক্ষতিটা যদিও সবচেয়ে বেশি হয়েছে ইউক্রেনের; কিন্তু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে এ যুদ্ধ সারা বিশ্বকেই নানাভাবে ভোগাচ্ছে; বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ ও এশিয়াকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন এবং তার সহযোগিতায় যুদ্ধ বন্ধের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন।
চীন-ভারত ঘনিষ্ঠতা, ট্রাম্পের উদ্বেগ ও দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণ
২০২৫ সালে এসে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এমন এক মোড় নিয়েছে যেখানে ‘কৌশলগত অবিশ্বাস’ নতুন ধরনের ‘অস্থায়ী মিত্রতা’ তৈরি করছে। চীন ও ভারতের মধ্যকার ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও সাম্প্রতিক ঘনিষ্ঠতা, মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ব্যবহৃত হওয়া, আর দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব- এই সমীকরণগুলো দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। চীন ও ভারতের মধ্যে ২০২০ সালের গ্যালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিল তিক্ত; কিন্তু বিগত এক বছরে ব্রিকস (BRICS) শীর্ষ বৈঠক, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO), এবং দ্বিপক্ষীয় সীমান্ত আলোচনা চীন-ভারত সম্পর্ককে নতুন এক ‘পরিকল্পিত সহাবস্থান’-এ পরিণত করছে।
ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন ফাটলে রূপ নিচ্ছে
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দান থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের শুরু। আত্মপ্রকাশ ঘটে ভূরাজনৈতিক ব্লকের। যুদ্ধ-পরবর্তী বিশ্বে সমাজতান্ত্রিক ব্লক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাড়-বাড়ন্তে উদ্বেগ বাড়তে থাকে ওই ব্লকের। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। শুরু হয় একে অপরের মধ্যকার বহুমাত্রিক প্রতিযোগিতা। উভয় ব্লকেরই দাবি ছিল, বিপরীত ব্লক তাদের ভেতরকার ঐক্য ধ্বংস করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল যেমন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে অবস্থান নিতে পারত না, তেমনি সোভিয়েত ট্যাঙ্কগুলোও প্রুশিয়ান ময়দানে প্রবেশ করতে পারত না যুক্তরাষ্ট্রের কারণে। তখন ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিচ্ছিন্ন করার এই প্রক্রিয়াকে তখন ‘ডিকাপলিং’ বলা হতো। উভয় ব্লকের কয়েক দশকের দ্বন্দ্ব যা করতে পারেনি, তা এখন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ইসরায়েলি লেখকদের
চলতি বছরের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও মার্চেই তা ভেঙে পড়ে। ইসরায়েলি বাহিনী এখনো গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অমানবিক যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, যুক্তরাষ্ট্র, মরোক্ক, তুরস্ক, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এবার প্রতিবাদকারীদের দলে যোগ দিলেন খোদ ইসরায়েলের লেখক-কবি-সাংবাদিকরা। ইসরায়েলি নেতাদের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে এক চিঠিতে সই করেছেন ইসরায়েলের কমপক্ষে ৩৫০ জন লেখক।
বিদেশি ব্র্যান্ডের ওপর হামলা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে
ইসরায়েলের বোমার আঘাতে এখন আর কেবল বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয় না, ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনকণার সঙ্গে মানবদেহও আকাশে উড়ছে। অকল্পনীয় ও হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ইসরায়েলকে কেউ থামাতে পারল না, পারবেও না। অসহায় সাধারণ মুসলমান অহর্নিশ সৃষ্টিকর্তার করুণা ভিক্ষা করছে, দোয়া করছে, প্রার্থনা করছে বিগত ৭৬ বছর ধরে। ছিয়াত্তর বছর ধরে ভিটেবাড়ি ছাড়া ফিলিস্তিনিরা, ২০ লাখ অধিবাসীর গাজা বিগত পনেরো মাস ধরে আমেরিকা আর ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হচ্ছে, প্রতিদিন লোক মরছে, আহত হচ্ছে, অসংখ্য লাশ ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছে, খাবার নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। এত লাশ, কবর দেয়ার জায়গা নেই। স্বজন, সম্পদ, আশ্রয় সব হারিয়ে নিঃস্ব গাজাবাসী। এমন রোমহর্ষক দৃশ্য দেখেও জগতবাসী নির্বিকার। মনে হচ্ছে ফিলিস্তিনিরা মানুষ পদবাচ্য নয়, মানুষ হলে শত শত শিশুর মৃত্যুতে যুদ্ধ এতদিনে থেমে যেত। জগতে সৃষ্ট প্রজাতির মধ্যে মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে হিংস্র প্রাণী, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে দিয়ে তা প্রমাণ করা সহজ।
দ্বৈত মানদণ্ডভিত্তিক জাতিগত শুদ্ধিকরণই নীতি
যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতির বিশ্বাসযোগ্যতা এখন প্রশ্নের মুখে। যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ সামরিক মহড়া এবং ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ার শঙ্কার মাঝেই ট্রাম্পের উত্তরাধিকার মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ সংঘাত, বিশেষ করে গাজা ও এর বাইরের অঞ্চলগুলোতে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।
পর্দার আড়ালে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কৃতিত্ব
ঝগড়াপূর্ণ মিটিং শেষ হতেই জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস স্টাফরা সাফ জানিয়ে দিলেন, মি. প্রেসিডেন্ট, আপনি এখন চলে যান। ডিনারটাও হলো না! এবং জেলেনস্কি কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই দ্রুত হোয়াইট হাউস ছেড়ে ইউরোপের উদ্দেশে রওয়ানা হলেন। তিনি এসেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং ব্রিটেন তাকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অভ্যর্থনা দিল। কিং তৃতীয় চার্লস তাকে নরফোক বাসভবনের স্যানড্রিংহাম স্যালুনে অভ্যর্থনা জানিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা করলেন। ব্রিটেনের এই উষ্ণতার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রকেও জানিয়ে দেয়া হলো যে শুধু ব্রিটেনের সরকার নয়, স্বয়ং রাজাও জেলেনস্কি তথা ইউক্রেনকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন।
বালুচিস্তানের বিদ্রোহ কী পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে পারবে
বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান সফলভাবে শেষ করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। গোষ্ঠীটি বালুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন ছিনতাই করে। সেখানে জিম্মি প্রায় ৪০০ জন যাত্রীর ৩৪৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কুয়েটা থেকে পেশাওয়ার যাওয়ার পথে সিবি শহরের কাছে ট্রেনটি হামলার শিকার হয়। এ হামলার দায়ও দাবি করে বিএলএ। একদিনেরও বেশি সময় ধরে সংঘাতের পর নিরাপত্তা বাহিনী ৩৩ জন হামলাকারীকে হত্যা করে। তবে ২১ জন যাত্রী এবং চারজন আধা-সামরিক সদস্যের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।