আইসিটি
লিথোগ্রাফি নিয়ে ঐতিহাসিক লড়াই
সালটা ছিল ১৯৯২। একদিন ইন্টেলের প্রযুক্তি গবেষক জন ক্যারাদারস এক অদ্ভুত অনুরোধ নিয়ে হাজির হলেন কোম্পানির সিইও অ্যান্ডি গ্রোভের কাছে। তিনি এমন একটি প্রযুক্তির গবেষণার জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলার তহবিল চাইলেন, যা তখনো কাজ করবে কি না কেউ নিশ্চিত ছিল না। সেই প্রযুক্তির নাম এক্সট্রিম আলট্রাভায়োলেট (EUV) লিথোগ্রাফি। এই লিথোগ্রাফি হলো সিলিকনের ওপর ইলেকট্রনিক সার্কিট বসানোর এক অতি সূক্ষ্ম নির্মাণ প্রক্রিয়া। তখন ইন্টেল ছিল বিশ্বের শীর্ষ চিপ নির্মাতা, আর গ্রোভের হাতে ছিল নগদ অর্থের বিশাল ভান্ডার। তবুও তিনি বেশ সন্দিহান ছিলেন। কারণ, EUV প্রযুক্তিতে ১৩ দশমিক ৫ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো ব্যবহার করা হতো, যা তখনকার প্রযুক্তির চেয়ে বহু গুণ অগ্রসর।
চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের শুরু
১৯৮৭ সালে এশিয়ায় জন্ম নিল দুটি ভিন্ন স্বপ্ন। তাইওয়ানের মরিস চ্যাং লক্ষ্য নিলেন TSMC নামে একটি কোম্পানি গড়ার যা বিশ্বের সেরা চিপ তৈরি করবে। একই সময় চীনের শেনজেনে রেন ঝেংফেই শুরু করলেন হুয়াওয়ে, একটি ছোট্ট ব্যবসা যা হংকং থেকে সস্তা টেলিকম সরঞ্জাম কিনে চীনের বাজারে বিক্রি করত।
সেমিকন্ডাক্টরে তাইওয়ানের উত্থান এবং টিএসএমসির জন্ম
১৯৮৫ সালের এক দুপুরে তাইওয়ানের প্রভাবশালী মন্ত্রী কে টি লি তার অফিসে আমন্ত্রণ জানালেন মরিস চ্যাংকে। প্রায় দুই দশক আগে লি-ই টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্টসকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাইওয়ানে প্রথম চিপ ফ্যাক্টরি খুলতে রাজি করিয়েছিলেন; কিন্তু এবার তিনি আরও বড় কিছু চাইছিলেন।
কম্পিউটার চিপ: উপসাগরীয় যুদ্ধের আসল নায়ক
১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি। ভোরবেলা সৌদি আরবের বিমানঘাঁটি থেকে মার্কিন এফ-১১৭ বোমারু বিমানগুলো নিঃশব্দে উড়াল দিল। তাদের সবার লক্ষ্য- বাগদাদ।
শত্রুর শত্রুই মিত্র: কোরিয়ার উত্থান
লি বিয়ং-চুল ছিলেন এক জন্মগত ব্যবসায়ী। তার হাতে যেন জাদু ছিল- তিনি যে ব্যবসায় হাত দিতেন তাতেই সফল হতেন। ১৯৩৮ সালে যখন চারদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে, কোরিয়া জাপানের শাসন থেকে চীনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে, তখন তিনি শুরু করলেন তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান স্যামসাং।
ভয়ই যেখানে প্রেরণা: যেভাবে ঘুরে দাঁড়াল ইন্টেল
ইন্টেলের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডি গ্রোভ ছিলেন এক তেজি মানুষ। তার জীবন ছিল এক কঠোর লড়াইয়ের গল্প। তিনি ছিলেন হাঙ্গেরির এক শরণার্থী, যিনি সোভিয়েত ও নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে এসেছিলেন। ভয় আর শৃঙ্খলাই ছিল ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে তার মূলমন্ত্র। তার বিখ্যাত বই ‘অনলি দ্য প্যারানয়েড সারভাইভ’-এ তিনি লিখেছেন: প্রতিযোগিতার ভয়, দেউলিয়া হওয়ার ভয়, আর ব্যর্থ হওয়ার ভয়- এসবই মানুষকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এক শক্তিশালী প্রেরণা জোগায়।
আশির দশকের ক্রুড অয়েল যুদ্ধ
পালো আল্টোর (ক্যালিফোর্নিয়ার একটি শহর) এক হিমেল সন্ধ্যায় মিংস চাইনিজ রেস্টুরেন্টের উষ্ণ পরিবেশে সমবেত হয়েছিলেন মার্কিন চিপশিল্পের তিন কিংবদন্তি- বব নয়েস, জেরি স্যান্ডার্স এবং চার্লি স্পর্ক। এক সময় ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডাক্টরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলেও, পরবর্তীতে তারা নিজেদের কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন; কিন্তু সেদিন সন্ধ্যায় তাদের সামনে ছিল এক অভিন্ন, বিশাল চ্যালেঞ্জ: জাপানের অপ্রতিরোধ্য উত্থান। তাই তারা একমত হলেন যে, সরকারের প্রতি আর উদাসীন থাকা যাবে না; এবার তাদের সরকারের দ্বারস্থ হতেই হবে।
জাপানের সঙ্গে সেমিকন্ডাক্টর যুদ্ধ: সিলিকন ভ্যালির কঠিন লড়াই
এএমডির সিইও জেরি স্যান্ডার্স চিপ ব্যবসায় প্রবেশ করেছিলেন এক যুদ্ধংদেহি মনোভাব নিয়ে, বিশেষ করে তার পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টেলের বিরুদ্ধে; কিন্তু ১৯৮০-এর দশকে ইন্টেল নয়, জাপানই হয়ে উঠেছিল তার নতুন, আরও ভয়ংকর প্রতিদ্বন্দ্বী।
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে আইটি কর্মশালা
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় বাস্তব অভিজ্ঞতার গুরুত্ব দিয়ে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের (ইউএপি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে বিশেষ আইটি কর্মশালা করেছে আইটি কোম্পানি ‘সার্ভিসিং২৪’।
সিলিকন ভ্যালির সংকট: জাপানের উত্থান ও আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা
আশির দশক। আমেরিকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্প যা একসময় সিলিকন ভ্যালির অহংকার ছিল, হঠাৎ করেই এক তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়ল। জাপানি কোম্পানিগুলো যেন অপ্রতিরোধ্য এক ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছিল। এই গল্পের এক নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নায়ক ছিলেন হিউলেট-প্যাকার্ড (এইচপি)-এর নির্বাহী রিচার্ড অ্যান্ডারসন। এইচপির জন্য কোন মেমরি চিপ কেনা হবে তার কঠিন মানদণ্ড তিনিই ঠিক করতেন। তাই, সেমিকন্ডাক্টর বিক্রেতাদের ভাগ্য অনেকটাই তার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করত।