সংবিধান, মৌলিক অধিকার ও প্রতিকার
সংবিধান একটি দেশের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে। সংবিধান হচ্ছে সে সব মৌলিক নিয়মকানুন এবং প্রথার সমষ্টি যা কোনো রাষ্ট্রের সরকারের বিভিন্ন বিভাগ অর্থাৎ আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে।
সংবিধান একটি দেশের মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে। সংবিধান হচ্ছে সে সব মৌলিক নিয়মকানুন এবং প্রথার সমষ্টি যা কোনো রাষ্ট্রের সরকারের বিভিন্ন বিভাগ অর্থাৎ আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে।
প্রত্যেক দেশের আইন ব্যবস্থায় নিজস্ব কিছু সক্রিয়তা রয়েছে। প্রত্যেক দেশ তার নিজস্ব রূপে এবং স্বাধীনভাবে তাদের কৃষ্টি,সংস্কৃতি,প্রকৃতি ও প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে Legal system (আইন ব্যবস্থা) প্রণয়ন করে থাকে। এটা স্বীকৃত যে, প্রত্যেক দেশ আইন ব্যবস্থা ব্যতীত প্রাণহীন দেহ। যা কোনো রকম কার্য সম্পাদন করতে পারে না। বিভিন্ন দেশে আইন ব্যবস্থার অভ্যুদয়ে বিভিন্ন উপাদানের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যেমন: প্রথা,ধর্ম,আদালত ইত্যাদি। এ কারণেই বিভিন্ন আইনের প্রকাশভঙ্গি বিভিন্ন রাষ্ট্রে বিভিন্ন রকমের এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের আইনের উপাদান সমূহের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।
'টর্ট' শব্দটি ল্যাটিন শব্দ 'tortum' হতে উদ্ভূত, যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বাঁকা। অতএব, টর্ট বলতে সোজা পথ হতে বিচ্যুতি বা বাঁকা চলন বোঝায়। নরম্যান বিজয়ের পর থেকে এ শব্দটি ব্রিটিশ আইনে অনুপ্রবেশ করে। ইংরেজি ভাষায় এর প্রতিশব্দ হচ্ছে 'Wrong' এবং রোমান ভাষায় বলা হয় 'delict'। বাংলা ভাষায় সকলের ব্যবহারযোগ্য কোনো প্রতিশব্দ এখন বের হয়নি। তাই কেউ একে 'দেওয়ানি ক্ষতি', কেউ 'নিম চুক্তি' আবার কেউ একে 'ব্যক্তিগত অপকার' হিসেবেই আখ্যায়িত করেছেন।
আরবি ‘হিজানাত’ শব্দ থেকে অভিভাবক তথা গার্ডিয়ান শব্দটি এসেছে। হিজানাত শব্দের অর্থ লালন-পালন, তত্ত্বাবধান ও দায়িত্ব গ্রহণ। অভিভাবক বলতে সে ব্যক্তিকে বুঝায়, যে ব্যক্তির কাছে কোনো নাবালক কিংবা নাবালিকার শরীর, সম্পত্তি বা উভয়ের তত্ত্বাবধান রয়েছে এবং প্রতিপাল্য বলতে তাকে বুঝায়, যার শরীর সম্পত্তি বা উভয়ের জন্য অভিভাবক রয়েছে। মুসলিম আইনের ৩৪৮-৩৬৮ ধারায় এবং ১৮৯০ সালের অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইনে অভিভাবক ও প্রতিপাল্য বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। সাধারণত অভিভাবকত্ব নাবালক-নাবালিকার শরীর, সম্পত্তি ও বিয়ের ক্ষেত্রে বিবেচিত হয়। মুসলিম আইনে ১৫ বছরে পদার্পণ করেনি এমন কোনো নাবালক-নাবালিকাকে বুঝালেও অন্যান্য আইনে নাবালক-নাবালিকা বলতে, যার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি এমন কাউকে বুঝায়। উল্লেখ্য, কোনো নাবালক-নাবালিকার শরীর ও সম্পত্তির বিষয়ে অভিভাবক নিযুক্ত হয়ে থাকলে তার বয়স ২১ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নাবালক বা নাবালিকা হিসেবে বিবেচিত হবে। (ধারা-৩৪৮)।
সুশাসনের অন্যতম উপাদান হচ্ছে আইনের শাসন। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা, বিচারকদের বিচারিক মন, আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয় ন্যায়বিচার। আইনের শাসন বলতে আইনের চোখে সবাই সমান এবং সবকিছুর উপরে আইনের প্রাধান্যের স্বীকৃতিকে বোঝায়। আইনের শাসন এর অর্থ হচ্ছে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি এবং ছোটো-বড়ো নির্বিশেষে সবাই আইনের কাছে সমান।