জেলেনস্কির দাবি রাশিয়া যুদ্ধ থামার পথ জটিল করছে, চুক্তি মেনে নেয়ার আহ্বান ট্রাম্পের
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধবিরতিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলছে। শনিবার (১৬ আগস্ট) এক্সে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছে। এখনো তারা সিদ্ধান্ত নেয়নি কবে হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করবে—এটাই পরিস্থিতিকে জটিল করছে।’
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্তিচুক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে জানিয়েছেন, তিনি জেলেনস্কিকে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে উৎসাহিত করবেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, তিনি যুদ্ধবিরতির বদলে স্থায়ী শান্তিচুক্তির পথে যেতে চান।
ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এটাই যুদ্ধ থামানোর সবচেয়ে ভালো উপায়। কারণ বেশিরভাগ সময় যুদ্ধবিরতি টেকে না।’
বৈঠকের পর জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। সেই কথোপকথনে জেলেনস্কি ‘বাস্তব ও টেকসই শান্তির’ প্রয়োজনীয়তার কথা জানান এবং হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবি তোলেন। পরে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য কয়েকটি শর্তও তুলে ধরেন, যার মধ্যে ছিল—নিরাপত্তা নিশ্চয়তা এবং রুশ বাহিনীর দখলে থাকা অঞ্চল থেকে অপহৃত শিশুদের ফেরত দেয়া।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ট্রাম্পের শান্তি বিষয়ক সাম্প্রতিক মন্তব্য তার আগের অবস্থান থেকে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। কারণ বৈঠকের আগেও তিনি দ্রুত যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু শীর্ষ বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের জানিয়েছেন, তার মূল লক্ষ্য ছিল একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুতিন ট্রাম্পকে একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে সরে গেলে রাশিয়া জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলে অগ্রসর হবে না। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দোনবাস অঞ্চল রাশিয়াকে দেয়া হবে না, কারণ ভবিষ্যতে তা আরও হামলার জন্য ব্যবহার হতে পারে।
সিবিএস জানিয়েছে, ইউরোপীয় কূটনীতিকদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে, ট্রাম্প জেলেনস্কিকে রাশিয়ার দেয়া শর্তগুলো মেনে নিতে চাপ দিতে পারেন। ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, ‘একটা চুক্তি করুন। রাশিয়া একটি বড় শক্তি—আর ইউক্রেন তা নয়।’
রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে নেয় এবং ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করে। বর্তমানে রাশিয়া দোনেৎস্কের প্রায় ৭০ শতাংশ ও লুহানস্কের অধিকাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ থামানো ও একটি কার্যকর শান্তিচুক্তির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে