বিদেশি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের জন্য ভিসার সীমা নির্ধারণের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

বিদেশি শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক বিনিময়ে অংশগ্রহণকারী এবং বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য নতুন ভিসা বিধি-নিষেধের প্রস্তাব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। লাখ লাখ আন্তর্জাতিক দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করতে এ উদ্যোগ নিচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
ট্রাম্প প্রশাসনের অবৈধ অভিবাসনবিরোধী ব্যাপক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যেই এই উদ্যোগ নেয়া হলো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আদর্শিক কারণে ছাত্র ভিসা ও গ্রিন কার্ডসহ লাখ লাখ অভিবাসীর আইনি অবস্থা বাতিল করা হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো আইনি অভিবাসন পদ্ধতি কঠোর করার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। নতুন নিয়মগুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ‘এফ ভিসা’, সাংস্কৃতিক বিনিময়ে অংশগ্রহণকারীদের ‘জে ভিসা’ এবং বিদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের ‘আই ভিসা’কে প্রভাবিত করবে। এর সবগুলোই এখনকার ভিসাধারীদের তাদের প্রোগ্রাম বা অ্যাসাইনমেন্টের সময়কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতি দেয়।
প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালায় ছাত্র ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দর্শনার্থী ভিসার মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। সাংবাদিক ভিসা, যা আগে বেশ কয়েক বছর ধরে বৈধ থাকতো, এখন মাত্র ২৪০ দিন এবং চীনা নাগরিকদের জন্য মাত্র ৯০ দিনে সীমাবদ্ধ থাকবে। যদিও ভিসাধারীরা এখনও সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানাতে পারবেন, এই ধরনের নবায়ন আর স্বয়ংক্রিয় হবে না এবং পৃথক আবেদনের প্রয়োজন হবে।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা দপ্তর (ইউএসসিআইএস) ২২ আগস্ট ঘোষণা করেছে, নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আবাসিক পরীক্ষা ফের শুরু হবে, যা ২০২০ সালে চালু হয়ে পরের বছর পর্যন্ত কার্যকর ছিল। এর লক্ষ্য, বাসস্থান যাচাই এবং নৈতিক চরিত্র ও আমেরিকান মূল্যবোধের প্রতি আনুগত্য মূল্যায়ন করা।
মার্কিন সরকারের তথ্য অনুসারে, গত বছর প্রায় ১৬ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এফ ভিসায় দেশটিতে ছিলেন। অতিরিক্ত তিন লাখ ৫৫ হাজার বিদেশি সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং ১৩ হাজার বিদেশি সাংবাদিককে আই ভিসা দেয়া হয়।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেদেশে অবস্থানকালে ভিসাধারীদের তদারকি বাড়ানো এবং নজরদারি উন্নত করার লক্ষ্যে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত নীতি সম্পর্কে জনসাধারণের মন্তব্য ৩০ দিনের মধ্যে নেয়া হবে।
২০২০ সালে একই ধরনের ব্যবস্থা চালু করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে চার হাজার ৩০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্বকারী অলাভজনক সংস্থা নাফসাসহ আন্তর্জাতিক শিক্ষা অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো ওই নীতির বিরোধিতা করে। ব্যাপক সমালোচনার পর ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সেটি প্রত্যাহার করে নেয়।
নতুন প্রস্তাবকেও আন্তর্জাতিক শিক্ষা অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো চ্যালেঞ্জ করবে বলেও শঙ্কিত মার্কিন সরকার।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে