বাণিজ্যযুদ্ধ নিরসনে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠক
বাণিজ্য বিরোধ নিরসনে একটি ভঙ্গুর সাময়িক শান্তিচুক্তি বজায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল গত সোমবার লন্ডনে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছে।
বাকিংহাম প্যালেসের কাছে অবস্থিত ২০০ বছরের পুরোনো ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ভাইস প্রিমিয়ার হি লিফেং।, তাঁর সঙ্গে ছিলেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক, ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার।
মঙ্গলবার পর্যন্ত চলতে পারে এই বৈঠক, যা গত মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত আলোচনার ধারাবাহিকতা।
জেনেভা বৈঠকে উভয় দেশ ১২ মে ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা পারস্পরিকভাবে ১০০% এর বেশি শুল্ক আরোপের বেশিরভাগ ক্ষেত্র ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করবে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছিল।
বিশ্বের বৃহত্তম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। চীনের বাণিজ্য তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের রপ্তানি গত বছরের তুলনায় ৩৫% কমেছে।
জেনেভা আলোচনার পর থেকে উভয় দেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত উন্নত সেমিকন্ডাক্টর, আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ছাত্রদের ভিসা এবং গাড়ি নির্মাণ শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ "রেয়ার আর্থ" খনিজ নিয়ে তীব্র বাক্য বিনিময় করেছে।
সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টায় গত বৃহস্পতিবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পরদিন ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা দেন যে, লন্ডনে বাণিজ্যযুদ্ধ নিরসনে আলোচনা পুনরায় শুরু হবে।
"রেয়ার আর্থ" খনিজ এই বৈঠকের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত এপ্রিলে চীন সরকার সাতটি রেয়ার আর্থ উপাদান রপ্তানির জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করে। এর ফলে সৃষ্ট ঘাটতি বিশ্বব্যাপী অটোমেকারদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করে। এদিকে মজুদ কমে যাওয়ায় কেউ কেউ উৎপাদন বন্ধের আশঙ্কা করছেন।
শনিবার বেইজিং ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর উদ্বেগের সমাধান করছে।
সোমবার মার্কিন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট সিএনবিসি-কে বলেন, তিনি রেয়ার আর্থ নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক এবং “বড়, শক্তিশালী হ্যান্ডশেক” আশা করছেন।
যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা শুধুমাত্র বৈঠকের স্থান এবং সরবরাহের ব্যবস্থা করছে, আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না। তবে রোববার ব্রিটিশ ট্রেজারি প্রধান র্যাচেল রিভস বেসেন্ট এবং হি’র সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য সচিব জোনাথন রেনল্ডস ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, “আমরা মুক্ত বাণিজ্যের পক্ষে একটি দেশ এবং সবসময় বলে আসছি যে বাণিজ্য যুদ্ধ কারও স্বার্থে নয়। তাই আমরা এই আলোচনাকে স্বাগত জানাই।”
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে