ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যেই ইরান পারমাণবিক ইস্যুর ‘স্থায়ী সমাধান’ চান ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক বিরোধের একটি ‘স্থায়ী সমাধানের' আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে আলোচনা করতে সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তাদের পাঠানো হতে পারে। কারণ ইসরায়েল-ইরান আকাশ সংঘাত এই নিয়ে পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে।
সোমবার কানাডায় অনুষ্ঠিত গ্রুপ অব সেভেন (জি-৭) সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর মধ্যরাতে কানাডা ছাড়ার সময় ট্রাম্প এসব কথা বলেন বলে এক সিবিএস নিউজ সাংবাদিক তার এক্স হ্যান্ডেলে - পোস্ট করে জানিয়েছেন।
ইসরায়েল তাদের হামলা বন্ধ করবে না বলে ভবিষ্যদ্বাণী করে ট্রাম্প বলেন, “আপনারা আগামী দুই দিনের মধ্যে সবকিছু জানতে পারবেন। এখন পর্যন্ত কেউ থামেনি,”।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ বা ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে ইরানের সঙ্গে আলোচনার জন্য পাঠানো হতে পারে কি না—জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, “সম্ভবত পাঠানো হবে।”
ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলমান সামরিক উত্তেজনা সত্ত্বেও ট্রাম্প এখনো ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জি-৭ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা এই অঞ্চলের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে চলমান সর্বোচ্চ উত্তেজনাপূর্ণ এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। তারা ইরানকে অস্থিতিশীলতার উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন এবং জোর দিয়ে বলেন, ইরান যেন কখনো পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে না পারে। পাশাপাশি তারা ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকেও সমর্থন জানান।
মধ্যপ্রাচ্যের সংকট বেড়ে যাওয়ায় ট্রাম্প সম্মেলন ছেড়ে আগেভাগেই ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হন। তবে তিনি অস্বীকার করেন যে, এই সফর সংক্ষিপ্ত করার কারণ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা নয়। এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে সোমবার রাতে লেখেন,
“ভুল! সে জানেই না আমি কেন এখন ওয়াশিংটনের পথে। কিন্তু এটা নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধবিরতির জন্য নয়। এটা আরও অনেক বড় কিছু।”
ইসরায়েল তাদের বিমান হামলা শুরু করে একটি আকস্মিক অভিযানের মাধ্যমে, যাতে ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রায় পুরো শীর্ষ নেতৃত্ব ও প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন বলে দাবি করেছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের আকাশসীমায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং আগামী দিনগুলোতে হামলা আরও বাড়ানো হবে।
ট্রাম্প বারবার বলেছেন, ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর শর্ত অনুযায়ী তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আনতে সম্মত হয়, তাহলে এই হামলা দ্রুতই শেষ হতে পারে।
তিনি বলেন, “সরল ভাষায় বললে—ইরান পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না। আমি বারবার এটা বলেছি! সবাই যেন এখনই তেহরান ছেড়ে চলে যায়!”—সোমবার এমন সতর্কতা দেন ট্রাম্প।
এর জবাবে, ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, তারা ইসরায়েলের দিকে “আরও শক্তিশালী” নতুন এক ধাপের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
একজন শীর্ষ ইরানি সেনা কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েলের ওপর একটি নতুন ধাপের ড্রোন হামলাও চালানো হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (১৭ জুন) ইরানি সংবাদ সংস্থা নূরনিউজ জানিয়েছে ইসরায়েলের এক হামলায় ইরানের কেন্দ্রীয় শহর কাশানে তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে