হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ আজ
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ দেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এ বিষয়ে আদেশ দেবেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গত ৭ জুলাই শুনানি শেষে এই মামলার আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান বর্তমানে পলাতক। তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আমির হোসেন।
শুনানিতে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের অব্যাহতির আবেদন করেন আইনজীবী আমির হোসেন। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, 'জুলাই-আগস্টে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়। কেননা ট্রাইব্যুনালটি গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের অপরাধের বিচারের জন্য। জুলাই-আগস্টে দেশে কোনো যুদ্ধ সংগঠিত হয়নি। তাই এ আইনে এ মামলা চলতে পারে না।'
তিনি আরও বলেন, 'মামলার অভিযোগগুলো সঠিক নয়। আবু সাঈদ হত্যার সময় শেখ হাসিনা দেশে ছিলেন না। বরং হত্যাকাণ্ডের পর দেশে ফিরে তিনি আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেছিলেন। এই ঘটনায় তিনি বাকরুদ্ধ ছিলেন।'
আসাদুজ্জামান খান কামাল সম্পর্কে তিনি বলেন, 'তিনি ছিলেন ভালো মানুষ, দেশের উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। গণহত্যার সাথে তার বা শেখ হাসিনার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।'
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ নিয়ে আইনজীবী বলেন, 'শেখ হাসিনা ‘রাজাকারের বাচ্চা’ শব্দটি এভাবে বলেননি। তার বক্তব্যকে অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। যদি তিনি সত্যিই রাজাকারের নাতি-পুতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাইতেন, তাহলে অনেক আগেই নিতে পারতেন।
এ ছাড়া শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে কথিত অডিও কল সম্পর্কেও তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য ডকুমেন্ট দাখিল করা হয়নি।'
পুলিশ সদস্যদের হতাহতের প্রসঙ্গে তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, 'শেখ হাসিনা এ মামলায় সুপিরিয়র কমান্ডার ছিলেন না। তিনি তখন দেশের উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা তাকে মামলাটি থেকে অব্যাহতির আবেদন করছি।'
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই পলাতক শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। আজ সেই মামলার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আদেশ দেয়া হবে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে