১৯৭০
ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান : স্মৃতি, সত্তা ও ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন একটি ক্ষুরের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হয়। আমার কাছে সংস্কৃতি শুধু গানবাজনা-নাচনাটক ইত্যাদি নয়, তা মানবের এই ভূপ্রকৃতির ওপর যা কিছু কর্ম, নির্মাণ ও পরিবর্তন, তার সব কিছু। কৃষিও সংস্কৃতি, রন্ধনও সংস্কৃতি, ফলে মৎস্য শিকারও সংস্কৃতি। তাই সম্প্রতি যে ৯৫ জন নিশানা ভুলে বাংলাদেশের সমুদ্রে চলে গিয়ে ওদেশের পুলিশের হাতে বন্দি হয়েছিলেন এবং শুনলাম প্রচুর পিটুনি খেয়ে ফিরে এসেছেন- সেটাকে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের অংশ হিসেবে দেখব কি না জানি না। হলেও ‘বৈধ’ আর দুই দেশের পরস্পরের ইচ্ছাধীন আর অভিপ্রেত আদান-প্রদানের উদাহরণ হিসেবে নিশ্চয়ই নয়।
গুপ্ত রাজনীতির অপচর্চা
বাংলার রাজনীতিতে যেন নতুন এক নাট্যমঞ্চের জন্ম হয়েছে। একসময় রাজনীতি মানেই ছিল প্রকাশ্য লড়াই- কে কত জোরে স্লোগান দিতে পারে, কে কত বড় মিছিল নামাতে পারে, কে কতটা উঁচু কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’ কিংবা ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে জনতাকে মাতিয়ে তুলতে পারে। তখন রাজনীতিকরা পরিচয় লুকাতেন না, বরং গর্ব করতেন- ‘আমি অমুক দলের কর্মী, আমি অমুক মতের অনুসারী।’ কিন্তু সময় বদলেছে। সেই সরল ঘোষণা আজ সেকেলে মনে হয়। রাজনীতির মঞ্চে এখন নতুন ঢেউ- প্রকাশ্যে যা নয়, আড়ালে সেটাই আসল; নাম তার গুপ্ত রাজনীতি।
প্রখর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শেখ মুজিব
শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ছিল অনন্য সাধারণ। আপনজনকে তো অবশ্যই, শত্রুপক্ষের লোকরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে তার প্রতি আকৃষ্ট হতেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর উচ্চপদের লোকদেরও কেউ কেউ তার অবস্থানের প্রতি নমনীয় ছিলেন। যে জন্য গণহত্যা শুরুর আগে পূর্ববঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে কর্তব্যরত সাহাবজাদা ইয়াকুব খান পদত্যাগ করেন এবং নৌবাহিনীর এস এম হাসানকে সরিয়ে দিয়ে টিক্কা খানকে গভর্নর ও সামরিক শাসক হিসেবে আনা হয়। টিক্কা খান ‘বেলুচিস্তানের কসাই’ উপাধি পেয়েছিলেন; যে উপাধির তিনি অযোগ্য ছিলেন না এবং পূর্ববঙ্গেও তিনি এসেছিলেন ‘কসাই’ হিসেবেই।