অশ্রুসিক্ত চোখে বাংলাদেশি দিদারুলকে বিদায় জানাল নিউইয়র্কের হাজারো মানুষ
গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে কর্তব্যরত অবস্থায় বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এনওয়াইপিডি (নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ) কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। তার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামিয়া মসজিদে জড়ো হন প্রায় ২০ হাজার মানুষ। পরে তাকে নিউ জার্সির লোরেল গ্রোভ কবরস্থানে দাফন করা হয়হাজারো মানুষ।
ইমাম ড. জাকির আহমেদের পরিচালনায় দিদারুলের জানাজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে দিদারুলকে নিউ জার্সির লরেল গ্রোভ কবরস্থানে দাফন করা হয়ে।
জানাজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর ক্যাথি হোচুল, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস, পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ, এবং দিদারুলের স্ত্রী জামিলা বেগম। তারা দিদারুলের পেশাগত নিষ্ঠা, আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
মেয়র অ্যাডামস বলেন, ‘একজন মানুষ হাজারো মাইল দূর থেকে এসেছেন এই শহরকে সেবা দিতে। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে তিনি তার জীবন দিলেন। নিউইয়র্ক তাকে কখনও ভুলবে না।’
পুলিশ কমিশনার টিশ বলেন, “দিদারুল ছিলেন নির্ভীক, নিঃস্বার্থ এবং অত্যন্ত দায়িত্বশীল। তার আত্মত্যাগ চিরকাল হৃদয়ে থাকবে।”
জানাজা শেষে আমেরিকার পতাকায় মোড়ানো দিদারুলের কফিন যখন মসজিদ থেকে বের করা হচ্ছিল, তখন আকস্মিক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। অনেকে এটিকে প্রকৃতির পক্ষ থেকে সাহসী এই পুলিশ কর্মকর্তার প্রতি সম্মান জানানো বলে ব্যাখ্যা করেন।
জানা গেছে, বিদায়কালে সহকর্মীরা দিদারুল ইসলামকে শেষ সালাম জানান এবং কালিমা পাঠ করা হয়। এছাড়া মরণোত্তর পদোন্নতি দিয়ে তাকে ‘ফার্স্ট গ্রেড ডিটেকটিভ’ পদে উন্নীত করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারে জন্ম নেয়া দিদারুল মাত্র ২০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ২০১৯ সালে তিনি এনওয়াইপিডিতে স্কুল সেফটি এজেন্ট* হিসেবে যোগ দেন এবং দ্রুতই বিভাগটির অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল কর্মকর্তায় পরিণত হন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৮ জুলাই নিউইয়র্কের পার্ক অ্যাভিনিউতে একটি বাণিজ্যিক ভবনে হামলার ঘটনাটি ঘটে। সে সময় বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে তিনিসহ পাঁচজন নিহত হন। পরে বন্দুকধারী নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে