ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের জানাজায় শোকাবহ তেহরান
ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারানো ইরানের সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের স্মরণে আজ শনিবার তেহরানের ইনকিলাব (বিপ্লব) স্কয়ারে বিশাল জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ভোর থেকেই হাজারো মানুষ কালো পোশাক, জাতীয় পতাকা ও শহীদদের ছবি হাতে নিয়ে সমবেত হন। এ সময় ইরানিদের ‘আমেরিকার ধ্বংস চাই’, ‘ইসরায়েলের ধ্বংস চাই’, ‘আমরা ভুলব না, ক্ষমা করব না’- প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
জানাজায় ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ বাহরাইন, ইরাকসহ কয়েকটি আরব দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। আল-মায়েদিন
নিহতদের কফিন জাতীয় পতাকায় মোড়ানো অবস্থায় সারিবদ্ধ হয়ে ইনকিলাব স্কয়ার থেকে আজাদি (স্বাধীনতা) স্কয়ার পর্যন্ত মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হয়। ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর তেহরান অঞ্চলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান হাসানজাদে একে ‘জাতীয় ঐক্যের প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেন।
শহীদদের তালিকায় আছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি ও আইআরজিসির সাবেক প্রধান হোসেইন সালামি। মোট ৩০ জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও চার শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২৭ জন নিহত ও ৪ হাজার ৮৭০ জন আহত হয়েছেন।
জানাজায় বক্তারা হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ত্রাণের ঘাটতি ও অবরোধের মাঝেও ইরান আত্মমর্যাদা অটুট রেখেছে।
তেহরানের ইসলামি উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদের প্রধান মোহসেন মাহমুদি বলেন, ‘ইসলামি ইরান ও বিপ্লবের ইতিহাসে আজকের দিনটি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেছেন, তিনি নাকি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে ‘ভয়াবহ মৃত্যু’ থেকে বাঁচিয়েছিলেন। ট্রাম্পের এসব মন্তব্যকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ‘অপমানজনক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেন এবং ‘হার না মানা ইরানি জাতিকে’ হুমকি দিয়ে থামানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করেন।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায়; পরে যুক্তরাষ্ট্রও তিনটি ইরানি পরমাণু স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করে। এর জবাবে ইরান পাল্টা হামলা চালালে দুই পক্ষই শেষে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে বাধ্য হয়।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে