Views Bangladesh Logo

ইউরোপ থেকে ৫২ বাংলাদেশি ফেরত

প্রবাসী শ্রমিকদের সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিন

কদিকে দেশে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিরাপত্তা-অনিশ্চয়তা যার কারণে দেশ ছেড়ে বহু মানুষ এখন একটু নিশ্চিত জীবনের খোঁজে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন অন্যদিকে বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে বিদেশ থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশিদের। গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাসের অভিযোগে ইতালি, অস্ট্রিয়া, গ্রিস ও সাইপ্রাস থেকে ৫২ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার চার্টার্ড ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম দফায় ৩২ জন ফেরত আসার কথা। ফেরত আসা সবাই পুরুষ। বাকি ২০ জন কবে ফিরবেন তা এখনো জানা যায়নি।

পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন ধরেই চিঠি চালাচালি করেছে। বুধবার বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ফেরত পাঠানোদের নাম, ঠিকানা ও পাসপোর্ট নম্বরসহ তথ্য ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের হাতে এসেছে। যাচাইবাছাই শেষে বিমানবন্দরে তাদের গ্রহণ করা হবে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও একাধিক দফায় বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।

২০২৪ সালের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্তত ১৮৭ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের চিহ্নিত করছে ‘ফ্রন্টেক্স’- ইউরোপের সীমান্ত রক্ষাবাহিনী। বাংলাদেশে ফেরার পর ব্র্যাক তাদের গ্রহণ, আর্থিক সহায়তা ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করছে। ব্র্যাকের গবেষণা বলছে, ২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে ৩১ থেকে ৩৫ বছরের সংখ্যা বেশি। ফেরত আসা অধিকাংশের বাড়ি মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লায়।

আমরা জানি কত স্বপ্ন বুকে নিয়ে, কত কষ্ট করে, অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও বাংলাদেশের শ্রমজীবীরা বিদেশে পাড়ি জমান। যাত্রাপথে দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে মৃত্যুবরণের খবরও আসে প্রায়ই। এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর আমেরিকায় অবৈধ প্রবাসীদের জীবন দুরূহ করে তুলেছেন। পাশাপাশি ইউরোপীয় দেশগুলোও কঠোর আচরণ শুরু করেছে।

তাহলে উপায় কী? প্রথমত অনেকের পক্ষেই বৈধ কাগজপত্র জোগাড় করা অসম্ভব; কিন্তু তারা দেশেও টিকতে পারছেন না, বিদেশেও টিকতে পারছেন না। তারা করবেন কী? এর জন্য দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি বিদেশে যাওয়ার বৈধ উপায়ও সরকারকে খুঁজতে হবে। এর জন্য একটি সুষ্ঠু-সুন্দর-অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ আজ যে অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছেন এসব তারই নিদর্শন। আমাদের মনে রাখতে হবে এই প্রবাসী শ্রমিকরাই রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন। তাই সরকারকে অতি দ্রুত প্রবাসী শ্রমিকদের সমস্যা ও সংকট মোকবিলায় যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ