৫০ হাজার কিটের ছাড়পত্র নিয়েছে স্টারলিংক, সংযোগ সক্রিয় ৫৯৪
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা শুরুর ঘোষণা দিতে যাচ্ছে মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সহযোগী কোম্পানি স্টারলিংক। ইতোমধ্যে দেশে ৫৯৪টি কিটের মাধ্যমে স্টারলিংক ইন্টারনেট সংযোগ সক্রিয় করেছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে ৫০ হাজার ইন্টারনেট সংযোগের কিট আমদানির ছাড়পত্র পাওয়ার পর এই সেবা সম্প্রসারণের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছেন। দলে আরও রয়েছেন স্পেসএক্সের আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস। তারা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং বিকাল ৫টায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা দেবেন। এছাড়া রাতে ঢাকার হাতিরঝিলে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তারা। প্রতিনিধিদলটি ১৯ জুলাই দেশে ফিরে যাবেন।
স্টারলিংক বাংলাদেশে তিনটি নতুন ট্যারিফ প্ল্যান চালু করেছে: রোম, লোকাল প্রায়োরিটি এবং গ্লোবাল প্রায়োরিটি। এই প্ল্যানগুলো বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য যেকোনো স্থানে একই দামে প্রযোজ্য।
রোম প্ল্যানের ক্ষেত্রে ৫০ জিবি ডেটার জন্য ৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রোম আনলিমিটেড প্যাকেজের ক্ষেত্রে ১২,০০০ টাকা এবং গ্লোবাল রোম প্যাকেজের (বৈশ্বিক ব্যবহার) ক্ষেত্রে ৫৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
লোকাল প্ল্যানে ৫০ জিবির জন্য ৪ হাজার ৬০০ টাকা, ৫০০ জিবির জন্য ১১ হাজার ৮০০ টাকা রাখা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত ডেটা ব্লক ৫০ জিবির জন্য ১ হাজার ৮০০ টাকা, ৫০০ জিবির জন্য ৯ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। যেখানে স্পিড থাকবে ৫০ হতে ২২০ এমবিপিএস ডাউনলোড এবং ১০ হতে ৩০ এমবিপিএস আপলোড।
গ্লোবাল প্ল্যানটি সমুদ্রপথসহ বিশ্বের যেকোনো স্থানে ব্যবহারের জন্য। এটির দাম ৫০ জিবির ক্ষেত্রে ৩২ হাজার টাকা এবং ৫০০ জিবির ক্ষেত্রে ৮৪ হাজার টাকা। অতিরিক্ত ব্লক ৫০ জিবির জন্য ১৩ হাজার টাকা, ৫০০ জিবির জন্য ৬৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে রেসিডেন্স এবং রেসিডেন্স লাইট নামে দুটি প্ল্যান চালু করেছিল স্টারলিংক। রেসিডেন্স প্ল্যানে মাসিক চার্জ ৬,০০০ টাকা এবং রেসিডেন্স লাইটে ৪,২০০ টাকা। উভয় প্ল্যানের জন্য গ্রাহকদেরকে ৪৭,০০০ টাকা দিয়ে এককালীন সরঞ্জাম কিনতে হয়।
গত ২০ মে থেকে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সংযোগের অর্ডার গ্রহণ শুরু হয়। এর কয়েকদিন আগে বিটিআরসি থেকে পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক সেবা দেয়ার অনুমোদন পায় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দেশে ৫৯৪টি সংযোগ সক্রিয় থাকলেও ৫০ হাজার কিট আমদানির ছাড়পত্রের মাধ্যমে স্টারলিংক তাদের সেবা আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্টারলিংকের এই উদ্যোগ বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে, বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহের ক্ষেত্রে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে