কার্নিশে ঝুলে থাকা আমিরকে গুলি: অভিযোগ গঠন বৃহস্পতিবার
জুলাই গণআন্দোলনে রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রীতে ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থী আমির হোসেনকে গুলি এবং একই এলাকায় অন্য দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠনের আদেশের দিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পুনর্নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলাটির পাঁচজন আসামির মধ্যে পলাতক চারজন হলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান ও খিলগাঁও জোনের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান ও সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) তরিকুল ইসলাম ভূইয়া। গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা রামপুরা থানার সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ও রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) মামলাটিতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষ হয়। অভিযোগ গঠন চেয়ে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। আর গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানান তার আইনজীবী সারওয়ার জাহান নিপ্পন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত বছরের ১৯ জুলাই ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময় রামপুরায় তার ফুফুর বাসায় যাচ্ছিলেন তরুণ শিক্ষার্থী আমির হোসেন। বনশ্রী-মেরাদিয়া সড়কের দুই পাশে পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি দেখে ভয় পেয়ে প্রাণ বাঁচাতে বনশ্রীর একটি নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের ছাদে উঠে পড়েন তিনি। পুলিশ তাকে অনুসরণ করে। জীবন বাঁচাতে আমির হোসেন ভবনটির ছাদের কার্নিশের রড ধরে ঝুলে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু একজন পুলিশ সদস্য তাকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি ছোড়েন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আমির হোসেন তিনতলায় পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
একইদিন রামপুরার বনশ্রী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নাদিম ও মায়া ইসলাম নিহত হন। একইসঙ্গে মায়া ইসলামের ছয় বছর বয়সী নাতি বাসিত খান মুসা গুলিবিদ্ধ হয়। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিলেও এখনও কথা বলতে পারছে না এই শিশু।
৩১ জুলাই চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। ৭ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল-১ এ পাঁচজন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ।
আসামিদের মধ্যে ২৬ জানুয়ারি সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ২৮ জানুয়ারি তাকে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। ২৫ আগস্ট পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে