শ্রমিক হত্যার বিচার দাবি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদের
নীলফামারী ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শ্রমিক হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক পরিষদ। এ ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ বিচার নিশ্চিতেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
পরিষদের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে, নিহত শ্রমিকের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষতিপূরণ ও আজীবন ভরণপোষণের নিশ্চয়তা, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, ভাত ও বেঁচে থাকার অধিকার বাস্তবায়ন এবং ‘ফ্যাঁসিস্ট দমননীতি ও শ্রমিক-জনতার ওপর গুলিচালনার নীতি’ বন্ধ করা।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) পরিষদের আহবায়ক রোকেয়া প্রাচী ও সদস্য সচিব এফ এম শাহীন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভাতের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নামা শ্রমিক হত্যা কেবল একটি জীবনের অবসান নয়, শ্রমিক শ্রেণীর রক্তে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রের প্রতি প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জও’।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, শ্রমিকের ন্যায্য দাবি কখনোই রাষ্ট্রদ্রোহ নয়, বরং তা মানবাধিকারের প্রশ্ন, বেঁচে থাকার প্রশ্ন। অথচ সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালিয়ে রাজপথকে রঞ্জিত করেছে শ্রমিকের রক্তে। এ হত্যাযজ্ঞ আসলে শ্রমিক-জনতার প্রতি প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণা’।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পী, লেখক, গণমাধ্যমকর্মী, চিকিৎসক, শিক্ষক, আইনবিদ, মানবাধিকারকর্মী ও সমাজকর্মীসহ সুশীল সমাজের ৭১ জন প্রতিনিধি। তারা বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এই হত্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। কারণ, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল শ্রমিক-কৃষক-জনতার মুক্তির শপথ নিয়ে। শ্রমিক হত্যার মাধ্যমে রাষ্ট্র জনগণের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ভাতের অধিকারকে বুলেটে রক্তাক্ত করা মানে সমগ্র জাতিকে রক্তাক্ত করা’।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘বাংলার সংস্কৃতি ও জীবন শ্রমিকের সংগ্রামের সঙ্গে একাকার। শ্রমিকের রক্ত আমাদের গান, কবিতা, শিল্পকে শানিত করেছে বারবার। তাই আমরা ঘোষণা করছি, এই রক্তের ঋণ আমরা ভুলবো না। এই রক্তই হবে আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির আগুন এবং সব অপশক্তির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রেরণা’।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, লেখক ও সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, কবি ও সাহিত্যিক সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, কবি ও চিকিৎসক মিল্টন হাসনাত, কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. মাসুদ পথিক, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফজলুল বারি, সাংবাদিক ও বিশ্লেষক তৌফিক মারুফ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব খন্দকার ইসমাইল, প্রবাসী সাংবাদিক দস্তগীর জাহাঙ্গীর, সঞ্চালক ও গণমাধ্যমকর্মী দীপান্বিতা রায় মার্টিন, সমাজকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মী শায়লা আহমেদ লোপা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী ও চিত্রকর তাজুল ইমাম, সংগঠক ও চিত্রশিল্পী মো. মনিরুজ্জামান, সংগঠক ও সঙ্গীতশিল্পী আল আমীন বাবু, অভিনেতা ও পরিচালক তমাল মাহবুব, চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক, অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র পরিচালক অরুণা বিশ্বাস, চলচ্চিত্র প্রযোজক খোর্শেদুল আলম খসরু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এলবার্ট খান, অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক ও গবেষক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ, আইসিএসএফের ট্রাস্টি ড. রায়হান রশিদ, লোকসাহিত্য গবেষক সামশুল আরেফিন, সেক্যুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট ইউকে’র সভাপতি পুষ্পিতা গুপ্ত, সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন, সম্পাদক ও প্রকাশক ভায়োলেট হালদার, সমাজকর্মী ফেরদৌসী হাসান, মানবাধিকার কর্মী অনামিকা প্রিয়ভাষিনী, জুরি জাজ আক্তার জামান, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক শেলিনা আফরোজ জামান, ইঞ্জিনিয়ার সাইফ সামস, সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়াঙ্কা এলফফ্রস্ট, ব্যবসায়ী মুরাদ খান, মুক্তিযোদ্ধা ওমর সেলিম শের, নাট্যকর্মী অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে