Views Bangladesh Logo

৪ আগস্ট ড. ইউনূসকে নতুন সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, গত বছরের ৪ আগস্ট সরকার পতনের আগে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নতুন সরকারের প্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, “গত ৪ আগস্ট আমরা সংবাদ সম্মেলন করে সকল রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবি তুলি এবং অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানাই। আমরা আরও স্পষ্ট করি, কোনো ধরনের সেনাশাসন বা সেনা সমর্থিত শাসন আমরা মেনে নেব না।”

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ শেখ হাসিনা ও দুই অন্য আসামির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় ৪৭তম সাক্ষীর শেষ দিনে নাহিদ ইসলাম এসব তথ্য জানান। সকাল সোয়া ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারপতি গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।

জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, আন্দোলনের পুরো সময় পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালানো ও নির্যাতন চালিয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা দায়ী। নাহিদ বলেন, “শেখ হাসিনা ও কামালের নির্দেশেই এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। তারা ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”

নাহিদ আরও উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার এবং নেথাল ওয়েপন ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রার্থনা করেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

জবানবন্দির একপর্যায়ে নাহিদ বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ৪ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ করা হয়। সেই দিনই ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তবে সরকার কারফিউ ঘোষণা করে দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞ চালায়। নাহিদ জানান, “৬ আগস্ট কর্মসূচি ব্যর্থ করার জন্য সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট বন্ধ করার পাশাপাশি আমাদের হত্যা বা গুমের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এ জন্য মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়।”

তিনি বলেন, “মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি সফল করতে আমরা অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে সমন্বয় করছিলাম। নতুন সরকার গঠনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করা হয় এবং তাকে নতুন সরকারপ্রধান হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়।”

এর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নাহিদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলেছিল। যেহেতু শেষ করা সম্ভব হয়নি, তাই আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয় ট্রাইব্যুনাল।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ