জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া
রাজধানীসহ সারা দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পর ঘোষিত এই সনদকে ঘিরে নানা মত ও প্রতিক্রিয়া উঠে এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতাদের কাছ থেকে। কেউ একে নতুন সম্ভাবনার সূচনা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ প্রশ্ন তুলেছেন এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূচনা হলো।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এক প্রতিক্রিয়ায় ভিউজ বাংলাদেশকে বলেন, ‘জুলাই সনদে ২৪-এর অভ্যুত্থান-পরবর্তী ঐকমত্য কমিশনের প্রতিফলন ঘটেছে। জুলাই সনদ সংবিধানের বর্ধিত সংস্করণ। ’
তার মতে, এই সনদ কেবল একটি রাজনৈতিক ঘোষণাই নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনার নতুন দিকনির্দেশনা। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ একে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রকে আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখছি, পাশাপাশি সরকার নির্বাচনের ঘোষণাও করেছে। এখন প্রত্যাশা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, দেশ নির্বাচনমুখী হবে এবং দেশে একটি ভালো নির্বাচন হবে।’
তবে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স। ঘোষণাপত্রকে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেয়া হয়েছে সেটা আমার বিবেচনায় একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। এটা কার কার সঙ্গে আলাপ করে করা হয়েছে জানি না, আমাদের সঙ্গে এটা নিয়ে আলাপ করা হয়নি। জুলাই ঘোষণাপত্র হওয়া উচিত ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের ইতিহাসের সব অর্জনগুলোকে সন্নিবেশিত করে। সেটা হয়নি। এই ঘোষণাপত্রে কি বলতে চাওয়া হয়েছে সেটাই বোধগম্য নয়। অতএব, এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা আমাদের কাছে নেই।’
এদিকে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই ঘোষণাপত্র ২৪-এর জুলাইয়ের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানেরই অর্জন, সে কারণে এর আকাঙ্ক্ষাকে আমরা পূর্ণভাবে ধারণ করি। মুক্তিযুদ্ধসহ এ দেশের মানুষের শত বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে আমরা মনে করি; কিন্তু এই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন না করা হলে অতীতের মতোই পুরোনো বন্দোবস্ত আবারও ফেরত আসবে, জনগণকে অধিকারহীন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানাব, প্রতিটি মানুষ যেন এক হয়ে জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের বিচার, শহীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ায় জাগ্রত পাহারাদার হয়ে থাকেন। ন্যায়বিচার, সংস্কার, নির্বাচনের পথেই যা অর্জিত হবে। সংগঠিত মানুষই ইতিহাসের নির্মাতা, তারা জেগে থাকলে ফ্যাসিবাদ আর ফেরত আসতে পারবে না।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে