নেপালে রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িতে আগুন, মন্ত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে সেনাবাহিনী
রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ এবং হামলা-অগ্নিসংযোগের জেরে মন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে নেপালের সেনাবাহিনী। জেন-জিদের তীব্র আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলিসহ আরও তিনজন মন্ত্রী।
কাঠমান্ডু পোস্ট জানায়, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুর ঝুঁকিপূর্ণ ভাইসেপতিপাড়ার বিভিন্ন বাসভবন থেকে মন্ত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো। তাদেরসহ সুরক্ষা দিতে সামরিক ব্যারাকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও। সংসদ ভবন পাহারা দিতে মোতায়েন রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংসতা-সংঘর্ষের জেরে রূপ নিয়েছে সরকার পতনের আন্দোলনে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে মন্ত্রী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাড়িসহ সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন ছাত্র-তরুণ বিক্ষোভকারীরা। ললিতপুরে বিক্ষোভকারীরা যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুংয়ের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ভাইসেপতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বিষ্ণু পাউডেলের বাসভবনেও হামলা চালানো হয়। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখকের পদত্যাগের একদিন পর তার বাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
দুপুরের পর রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন লক্ষ্য করে ব্যাপক পাথর নিক্ষেপ এবং অগ্নিসংযোগে আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষমতাসীন নেপালি কংগ্রেস দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আগুন ধরিয়ে দেয়া ছাড়াও পাথর ছোঁড়া হয়েছে বিরোধীদলীয় নেতা ও সিপিএন চেয়ারম্যান পুষ্প কামাল দাহালের বাসভবনেও। রাজধানী কাঠমান্ডু ছাড়াও ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ চলছে দেশজুড়ে প্রাদেশিক মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়িতেও। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি জেলায় মুখ্যমন্ত্রী, প্রাদেশিক মন্ত্রী এবং অন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
কাঠমান্ডু থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে প্রথমদিনেই কারফিউ জারিসহ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে ১৯ জন নিহত ছাড়াও আহত হন কমপক্ষে ৩৪৭ জন বিক্ষোভকারী, যাদের অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের ব্যাপক সমালোচনার পর সোমবারই পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। আর মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন কৃষি ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী রাম নাথ অধিকারী এবং পানি সরবরাহমন্ত্রী প্রদীপ ইয়াদব।
সহিংসতার মুখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর বিতর্কিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েও আন্দোলন দমাতে পারছে না সরকার।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে