Views Bangladesh Logo

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস ও নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন বাতিলের দাবি নারী মৈত্রীর

Press Release

প্রেস রিলিজ

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ফিলিপ মরিসকে নিকোটিন পাউচ উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে নারী মৈত্রী। সংগঠনটি বলেছে, এই অনুমোদন সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার প্রচেষ্টার পরিপন্থী। একইসঙ্গে তারা দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাসেরও আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ই-সিগারেটসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম (ENDS) পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এরপর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এসব পণ্যের উৎপাদনের অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) সম্প্রতি বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ফিলিপ মরিসকে নারায়ণগঞ্জে নিকোটিন পাউচ উৎপাদন কারখানা স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে।

নারী মৈত্রীর সভাপতি মাসুমা আলম বলেন, ‘বিশ্বের বহু দেশ জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি বিবেচনায় নিকোটিন পাউচ নিষিদ্ধ করেছে। অথচ বাংলাদেশে এর উৎপাদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে—এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি। তাই এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী হলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী পাস হলে তা জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বড় পদক্ষেপ হবে।’

উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি ফাহমিদা আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নিষেধাজ্ঞার পরও এই অনুমোদন দেওয়া সরকারের নীতি ও সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। এটি তরুণ, নারী ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।’

হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী বলেন, ‘জনগণের কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে নীতিনির্ধারকরা যখন নিকোটিন পাউচের মতো ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদনের অনুমোদন দেয়, তখন সেটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।”

উইমেন জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক লাবিন রহমান বলেন, ‘এটি এক নিন্দনীয় সিদ্ধান্ত। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ করে দিচ্ছে সরকার। এই অনুমোদন বাতিল করা জরুরি।’

নারী মৈত্রী ইয়ুথ ফোরামের সদস্য আশরাফিয়া জান্নাত বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো নিকোটিন পাউচকে নিরাপদ বা চিকিৎসাগত পণ্য হিসেবে অনুমোদন দেয়নি। তবুও এটির উৎপাদনের অনুমতি দেয়া মানে ইচ্ছাকৃতভাবে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করা।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান নিকোটিন পাউচ উৎপাদনকে বৈধ ব্যবসা বলে দাবি করেছেন। অথচ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা জারির পর এটি কীভাবে বৈধ হয়? এটি জনস্বাস্থ্য ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী আরও শক্তিশালী করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে রয়েছে— পাবলিক স্থানে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল, তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণ, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা বিক্রি বন্ধ, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং প্যাকেটের সতর্কবার্তা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা।

সংবাদ সম্মেলনে নারী মৈত্রীর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন নারী মৈত্রী টিচার্স ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো, মাদারস ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকো ও ইয়ুথ ফোরাম এগেইনস্ট টোব্যাকোর সদস্যরা।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ