শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী মামুনকে জেরা শুরু

শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তাকে জেরা করছেন পলাতক ওই দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী (স্টেট অব ডিফেন্স) মো. আমির হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে জেরা শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে হত্যা-গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগের মামলাটিতে তিন নম্বর আসামি ছিলেন সাবেক আইজিপি মামুন। তবে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই আসামির  বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) তাকে আংশিক জেরা করা হয়।

সাক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ও দলাদলির তথ্য প্রকাশ করেন মামুন। গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে ‘গণহত্যায়’ জড়িত থাকার কথা স্বীকার ও অনুশোচনা প্রকাশ করে ক্ষমাও চান তিনি। আগের ৩৫ জনের মতোই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ হত্যায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান মামলাটির গুরুত্বপূর্ণ এই সাক্ষী।

১০ জুলাই মামলাটির অভিযোগ গঠনের দিন ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হওয়ার আবেদন জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ওই দিন তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয় ট্রাইব্যুনাল-১ এ। ৩ আগস্ট সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেমেন্ট) উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সেদিনই শুরু হয় মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ।

১ জুন তিন আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের দেয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি মোট ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র ২ হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি ৪ হাজার ৫ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২ হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।