Views Bangladesh Logo

শিশু ইভানের দৃষ্টিশক্তি হারানোর ক্ষতিপূরণ চেয়ে বাবার আইনি নোটিশ

চিকিৎসকদের অবহেলায় চার বছরের শিশু আবরার হোসেন ইভানের ডান চোখের দৃষ্টি স্থায়ীভাবে নষ্ট হওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতাল এবং এর চারজন ডাক্তারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তার বাবা মো. সাইফুল ইসলাম। এতে ১৫ দিনের মধ্যে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা অথবা এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তার পক্ষে নোটিশটি পাঠান অ্যাডভোকেট মুবিনুল ইসলাম।

আইনি নোটিশে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. নিয়াজ আবদুর রহমান, শিশু চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. কাজী সাব্বির আনোয়ার এবং ভিট্রিও-রেটিনা বিশেষজ্ঞ ডা. আইরিন হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

নোটিশে অভিযোগে বলা হয়েছে, জন্ম থেকেই ইভানের ডান চোখে দৃষ্টিশক্তি কম ছিল। ২০২২ সালের ৩১ জুলাই তাকে বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালের ধানমন্ডি শাখায় আনা হয়। সেখানকার ডাক্তাররা ছানি রোগ নির্ণয় এবং লেন্স ইমপ্লান্টেশনে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। পরদিন ডা. কাজী সাব্বির আনোয়ার অপারেশনটি করেন। তবে, প্রক্রিয়া চলাকালীন জটিলতা দেখা দেয়। পরিবারের দাবি, ডা. আইরিন হোসেনের পরবর্তী মূল্যায়নে অস্ত্রোপচারের সময় রেটিনা কেটে ফেলা হয়েছে বলে জানানো হয়, চিকিৎসার অবহেলায় ঘটেছে।

প্রথম অস্ত্রোপচারের একমাসের মধ্যে দুটি এবং ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইভানের চোখে আরেকটি অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসকরা। মে মাসে পঞ্চম অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেয়া হলেও চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং আরও অস্ত্রোপচার করাতে অস্বীকৃতি জানান শিশুটির বাবা।

নোটিশে বলা হয়েছে, বারবার অস্ত্রোপচারে ক্রমাগত ব্যথা, চোখ সঙ্কুচিত হওয়া এবং ক্রমাগত তরল পদার্থ নির্গত হওয়াসহ ইভানের শরীরে গুরুতর কষ্ট দেখা দেয়। অবশেষে, ইভান তার ডান চোখের সমস্ত দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে।

দ্বিতীয় মতামত পেতে হিকমাহ চক্ষু হাসপাতালের একজন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করেন সাইফুল ইসলাম। তিনিও ডান চোখটি স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরবর্তী অস্ত্রোপচারে নিরুৎসাহিত করেন।

নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রাথমিক অস্ত্রোপচারটি অবহেলার কারণে করা হয়েছিল এবং পরের অস্ত্রোপচারগুলো অপ্রয়োজনীয় ছিল। এটি শিশু ইভান ও তার পরিবারের জন্য দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণা এবং মানসিক আঘাতের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ছাড়াও আর্থিক কষ্ট ও মানসিক যন্ত্রণার মুখোমুখিও হওয়ার দাবি করেছে পরিবারটি। ক্ষতির পরিমাণ আর্থিকের বাইরেও হওয়ায় নোটিশে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ অথবা বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশের জবাবে হাসপাতালটিকে ১৫ দিনের মধ্যে বিদেশে চিকিৎসা শুরু বা পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া অথবা মীমাংসার জন্য আলোচনা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়েছে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ