ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েই চলেছে
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার ফলে বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আবারও বেড়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১.২৩ ডলার বা ১.৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪.৪৬ ডলারে। একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ১.০৮ ডলার বা ১.৫ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭২.৮৫ ডলার। যদিও দিনের শুরুতে উভয় চুক্তির দাম ২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছিল, পরে ট্রেডিংয়ের চাপে তা কিছুটা কমে আসে।
যদিও এখন পর্যন্ত তেল সরবরাহে বড় ধরনের বাধা দেখা যায়নি, তবুও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশটি আংশিকভাবে গ্যাস উৎপাদন স্থগিত করেছে। পাশাপাশি, ইরানের শাহরান তেল ডিপোতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলা ও পাল্টা হামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার এক দিনে তেলের দাম ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়, যা ২০২২ সালের মার্চের পর একদিনে সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি। শুধু গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এরইমধ্যে ইরানের একজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশটি হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়টি বিবেচনা করছে। বিশ্ববাজারে পরিবাহিত মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশই এই গুরুত্বপূর্ণ প্রণালিপথ দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।
বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস সতর্ক করেছে, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক শিপিং ও আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হরমুজ প্রণালির অচলাবস্থা বাংলাদেশের মতো রপ্তানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হলে বিদেশি ক্রেতারা চুক্তি বাতিল করতে পারেন, যা অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে