দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর মুখে পাঁচ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি
ইসরায়েল সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় প্রাণ গেছে তিনজন শিশুসহ আরও ১৩ জন ফিলিস্তিনির। এ নিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষপীড়িত উপত্যকাটিতে জোরপূর্বক অনাহার ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ জনে, যাদের ১৩০ জনই শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু করে গাজাবাসীর হাসপাতালসহ চিকিৎসা সুবিধা, স্কুল, অবকাঠামো এবং বেকারি ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ ছিটমহলটিতে সাহায্যের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি খাদ্য সহায়তা চাওয়া ফিলিস্তিনিদেরও লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করে চলেছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ফিলিস্তিনি এখন দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে ছয় লাখ ৪১ হাজারে পৌঁছাবে বলে শঙ্কা রয়েছে।
বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর ২২ আগস্ট গাজার কিছু অংশে পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে মারা গেছেন ১৫ জন শিশুসহ ৮৩ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। কেবল আগস্ট মাসেই গাজায় এই সংখ্যা ১৮৫ জন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ৫৫ হাজারেরও বেশি গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীর সাথে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪৩ হাজার শিশুও অপুষ্টিতে ভুগছে। গর্ভবতী নারীদের দুই-তৃতীয়াংশ রক্তাল্পতায় ভুগছেন, যা বছরের পর বছর ধরে সর্বোচ্চ। মা ও নবজাতকরা অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত গাজায় ৬৩ হাজার ৬৩৩ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী, আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ৬০ হাজার ৯১৪ জন। এর মধ্যে গত ২৭ মে ইসরায়েল ও মার্কিন-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র জিএইচএফ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সেগুলোতে খাবার চাইতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের এলাপাতাড়ি গুলিতে মারা গেছেন দুই হাজার ৩০৬ জন, আহত হয়েছেন আরও ১৬ হাজার ৯২৯ জন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে