Views Bangladesh Logo

গাজায় একদিনে ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত, অনাহারে আরও ২ জনের মৃত্যু

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েল সৃষ্ট অবরোধের কারণে তীব্র খাদ্য সংকটে অনাহারে মারা গেছেন আরও দুই ফিলিস্তিনি।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ইসরাইলি হামলায় নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন গাজা সিটিতে মারা গেছেন বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরও দুই ফিলিস্তিনি অপুষ্টিতে মারা গেছেন। এর ফলে ইসরাইলের চলমান যুদ্ধের পর থেকে শুধু ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ জনে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রোববার ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজার উত্তরাঞ্চল কেঁপে ওঠে। রেমাল ও তেল আল-হাওয়া এলাকায় ব্যাপক বিস্ফোরণে ৩০টিরও বেশি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে, যেখানে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, নতুন করে হাজার হাজার মানুষকে এই অঞ্চল থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তারা ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন।

এদিকে, অবিরাম হামলার মুখে পরিবারগুলো আবারও দক্ষিণের আল-মাওয়াসির দিকে ছুটছে। ইসরায়েল এই অঞ্চলকে “নিরাপদ অঞ্চল” বলে ঘোষণা করলেও সেখানে বারবার হামলা চালানো হয়েছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, গত চার দিনেই গাজা সিটিতে তাদের ১০টি ভবন হামলার শিকার হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি স্কুল ও দুটি ক্লিনিকও রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি লিখেছেন, “গাজায় কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। কেউ নিরাপদ নয়।”

বাস্তুচ্যুত আহমেদ আওয়াদ বলেন, শনিবার উত্তর গাজা থেকে তিনি মর্টার হামলার মধ্যে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, “মধ্যরাতে এসে দেখি পানি নেই, টয়লেট নেই, কিছুই নেই। পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ।”

ইউনিসেফ সতর্ক করে বলেছে, আল-মাওয়াসির পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। সংস্থার মুখপাত্র টেস ইঙ্গ্রাম আল জাজিরাকে বলেন, “গাজায় কোথাও নিরাপদ নয়, এমনকি এই কথিত মানবিক অঞ্চলও না। প্রতিদিন শরণার্থী শিবিরে মানুষের ভিড় বাড়ছে।” তিনি একজন নারীর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন, যিনি গাজা সিটি থেকে উচ্ছেদের পর রাস্তার ধারে সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হন। ইঙ্গ্রাম বলেন, “এ রকম হাজারো পরিবার এখানে এসেছে এবং এখন টিকে থাকার জন্য ন্যূনতম চাহিদাগুলো মেটাতে সংগ্রাম করছে।”

অন্যদিকে চলমান সংঘাতের মধ্যেই রোববার ইসরায়েল সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বাকি বন্দিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ইসরাইলে পৌঁছেই রুবিও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নিয়ে জেরুজালেমের পশ্চিম প্রাচীর পরিদর্শন করেন। এসময় নেতানিয়াহু মন্তব্য করেন, রুবিওর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে পশ্চিম দেওয়ালের পাথরের মতোই শক্তিশালী ও টেকসই করেছে। গণমাধ্যমে রুবিওকে ইসরাইলের অসামান্য বন্ধু হিসেবেও আখ্যা দেন তিনি।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ