গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়াল
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। সর্বশেষ রোববার (১৩ জুলাই) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও অন্তত ৯৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
সোমবার (১৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলি বাহিনী আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে। হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল গাজা শহরের একটি জনবহুল বাজার এবং মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি পানি সংগ্রহকেন্দ্র।
গাজার বাজারে চালানো হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হন, যাদের একজন গাজার পরিচিত চিকিৎসক ডা. আহমেদ কান্দিল। অপরদিকে, পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের ওপর হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন, যাদের বেশিরভাগই শিশু। এছাড়াও অন্যান্য এলাকায় হামলায় আরও বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশুরা পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাকালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়। ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তাদের লক্ষ্য ছিল একজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা; তবে 'কারিগরি ত্রুটির' কারণে ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ দাবির পক্ষে কোনও স্বাধীন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাজায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে পানির ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ পানিশোধন ও নিষ্কাশন কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু নির্দিষ্ট পানিকেন্দ্রে যেতে হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৮ হাজার ২৬ জন, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন।
এদিকে, শিশুদের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটি জানায়, শুধু জুন মাসেই ৫ হাজার ৮০০-এর বেশি শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে প্রায় ১ হাজার শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রোববার অপুষ্টিজনিত কারণে আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। সংস্থাটির মতে, 'শিশুদের দেহ গলে যাচ্ছে। এটি কেবল একটি পুষ্টির সংকট নয়, বরং শিশুদের বেঁচে থাকার জন্য এক জরুরি বিপর্যয়।'
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে