এবার খামেনিকে সরাসরি হত্যার ‘হুমকি’ দিলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে সরাসরি হত্যার ‘হুমকি’ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। চলমান ক্রমবর্ধমান সংঘাতের সপ্তম দিনে বেয়ারশেবার সোরোকা মেডিকেল সেন্টারে ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তিনি বলেন, ‘খামেনিকে তার অপরাধের জন্য মূল্য দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে ওই হামলার পর দক্ষিণ ইসরায়েলের হাসপাতালটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, এতে হাসপাতাল ভবনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় কাটজ ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে নতুন কৌশলগত স্থানগুলো লক্ষ্য করে হামলা শুরু করবে।এর লক্ষ্য, ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের মুখোমুখি হুমকি দূর করা এবং আয়াতুল্লাহদের শাসনের ভিত্তি কাঁপানো’।
দুদিন আগে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে খামেনিকে ‘সাদ্দাম হোসেনের মতো পরিণতির’ হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েল কাটজ।
কাটজের সর্বশেষ মন্তব্যটি খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি সরকারের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দেয় কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে হাসপাতাল ও বেসামরিক জনপদে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনিও বলেছেন, ‘তেহরানের শাসকদের এ অপরাধের পুরো মূল্য দিতে হবে’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য তেহরানের সঙ্গে সম্ভাব্য কূটনৈতিক আলোচনার জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়ার পক্ষে থাকায় খামেনিকে হত্যার মতো পদক্ষেপ অনুমোদন করতে অনিচ্ছুক বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
তবে, কিছু বিশ্লেষক কাটজের মন্তব্যকে নীতিগত পরিবর্তনের পরিবর্তে বাকবিতণ্ডার ক্রমবর্ধমান রূপ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। তারা মনে করেন, সম্ভবত ইরানের নেতৃত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সময় দেয়ার উদ্দেশ্যেেই এ ধরনের হুমকি দিলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
ইরানের শাসনব্যবস্থাকে ‘কাঁপিয়ে’ ফেলার প্রতিশ্রুতিটি শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পক্ষে সমর্থনের কাছাকাছি পদক্ষেপেরও ইঙ্গিত দেয়। তবে, বেশিরভাগ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইসরায়েলের ইসলামী প্রজাতন্ত্রটিকে অস্থিতিশীল বা উৎখাতের ক্ষমতা নিয়েও সন্দিহান, যার নেতৃত্ব গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন রয়েছে।
বিপরীতে, ফিলিস্তিনের গাজায় দেশটির দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অভিযানের পরেও দুর্বল বলে চিহ্নিত হামাস এখনো রাজনৈতিক ও সামরিক- দু’দিকেই কাজ করে চলেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইরানের শাসনব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে আরও স্থিতিস্থাপক ও জটিল, দেশজুড়ে যার বিস্তৃত প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন এবং অনুগত ভিত্তি রয়েছে।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে