ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৫ জন ফিলিস্তিনি, দুর্ভিক্ষে ২ জন
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে একই পরিবারের ১৪ জন সদস্যও রয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০৫ জন। এছাড়া চাপিয়ে দেয়া দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন একজন শিশুসহ আরও দুজন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু নিউজ জানায়, এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত ২৩ মাসে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৮০৩ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৬৪ হাজার ২৬৪ জন। এর মধ্যে গত ২৭ মে ইসরায়েল ও মার্কিন-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণকেন্দ্রে মানবিক সহায়তা সংগ্রহে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের ড্রোন হামলা ও নির্বিচার গুলিতে মারা গেছেন দুই হাজার ৪৬৫ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ হাজার ৯৪৮ জন।
‘হতাহত অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। ফলে উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। তাই প্রকৃত হতাহত আরও বেশি’ হবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষপীড়িত উপত্যকাটিতে অনাহারজনিত মৃত্যু ঘটেছে ৪১৩ জনের, যাদের ১৪৩ জনই শিশু। এর মধ্যে জাতিসংঘ-সমর্থিত ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা (আইপিসি) গতমাসে গাজাকে দুর্ভিক্ষ অঞ্চল ঘোষণা করার পর মারা গেছেন ২৮ জন শিশুসহ ১৩৪ জন। আর ২ মার্চ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজার সমস্ত সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়ায় এই অঞ্চলের ২৪ লাখ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে।
ফিলিস্তিনের জাতীয় বার্তা সংস্থা ওয়াফার বরাতে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতদের ৪৮ জনই উত্তর গাজা সিটিতে এবং বাকি ১৭ জন উপত্যকাটির অন্য স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। গাজায় এখনো ৪৮ জন বন্দি রয়েছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারের কথা বলেই ইসরায়েল সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে গাজাজুড়ে।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ১৮ মার্চ থেকে ফের সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১২ হাজার ২৫৩ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৫২ হাজার ২২৩ জন।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে