ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না ইরান: আরাঘচি
ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমেরিকানরা বারবার আলোচনা চেয়েছে, বার্তা পাঠিয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, ইসরায়েলের আগ্রাসন থামার আগে কোনো আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। এই অপরাধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি অংশীদার, তাই তাদের সঙ্গে এখন আলোচনা সম্ভব নয়।’ বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্যা জানিয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত অষ্টম দিনে গড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার (২০ জুন) জেনেভায় ইউরোপীয় দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন আরাঘচি। এটি হবে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইরানের প্রথম সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা।
আজকের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও জেনেভা সফরে যাচ্ছেন এবং তিনিও এই আলোচনায় অংশ নেবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাসেরও বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো ইরানকে তার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি থেকে স্থায়ীভাবে বিরত রাখা।
এক্স -এ দেয়া এক পোস্টে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের ভয়াবহ পরিস্থিতি থামানোর এটাই সময়। এই উত্তেজনা কারো জন্যই সুফল বয়ে আনবে না।’
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে ল্যামি বলেন, ‘ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।’ তারা দীর্ঘমেয়াদে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে একটি কূটনৈতিক সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান পাওয়া যেতে পারে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে জড়াবে কি না—সে বিষয়ে তিনি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। তবে এতটুকু বলতে পারি—ইরান বড় সমস্যায় আছে এবং তারা আলোচনায় ফিরতে চায়।’
এর আগে কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, ট্রাম্প ইরানে সামরিক হামলার অনুমোদন দিয়েছেন, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেননি। তবে বৃহস্পতিবার তিনি এসব খবর অস্বীকার করেছেন এবং বলেন, ‘আমি এটা করতে পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে চাই।’
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে