ভারতে বাবার গুলিতে উদীয়মান টেনিস তারকার মর্মান্তিক মৃত্যু
ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গন এক হৃদয়বিদারক ঘটনার সাক্ষী হলো। উদীয়মান টেনিস তারকা রাধিকা যাদব (২৫) নিজ বাসভবনে বাবার গুলিতে নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে গুরগাঁওয়ের সেক্টর-৫৬ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গুরুতর আহত অবস্থায় রাধিকাকে দ্রুত স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনার সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব।
রাধিকা যাদব আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশন (আইটিএফ) সার্কিটে অংশ নিয়েছেন ৩৬টি সিঙ্গলস এবং ৭টি ডাবলস ম্যাচে। ২০২৪ সালের মার্চে ছিল তার শেষ প্রতিযোগিতা। এরপর তিনি মন দেন নিজের গড়ে তোলা টেনিস একাডেমিতে কোচিংয়ে।
তবে এ একাডেমিই হয়ে ওঠে পারিবারিক দ্বন্দ্বের উৎস। পুলিশ জানিয়েছে, রাধিকাকে একাডেমি বন্ধ করতে বহুবার অনুরোধ করেন তার বাবা দীপক যাদব; কিন্তু নিজের স্বপ্নের প্রতি অনড় ছিলেন রাধিকা। এ নিয়েই বাবা-মেয়ের মধ্যে বাড়তে থাকে দূরত্ব ও উত্তেজনা।
স্থানীয়রা জানায়, রাধিকার আয়ে সংসার চলা নিয়ে দীপক যাদব সামাজিকভাবে অপমানবোধ করতেন। এই মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে নিজের লাইসেন্সকৃত বন্দুক দিয়ে মেয়েকে লক্ষ্য করে তিনটি গুলি ছুড়েন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন দীপক।
গুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনোদ কুমার জানান, ‘দীপক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। প্রতিবেশীদের মন্তব্য তাকে আরও দুর্বল করে তোলে। অনেকবার রাধিকাকে একাডেমি বন্ধ করতে বলেন তিনি, কিন্তু সে রাজি হয়নি।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, দীপক যাদব পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমি পেছন থেকে তিনটি গুলি চালিয়েছি, কারণ সে একাডেমি বন্ধ করেনি।’
রাধিকা যাদব ছিলেন ভারতের সম্ভাবনাময় ক্রীড়াবিদদের একজন। শুধু টেনিস কোর্টেই নয়, জীবনের প্রতিটি ধাপে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছিলেন তিনি; কিন্তু এক করুণ ঘটনায় অসময়ে থেমে গেল তার সব লড়াই।
মতামত দিন
মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে