Views Bangladesh Logo

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বৈঠক

বাংলাদেশের সঙ্গে টানাপোড়েন কমিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ভারতের সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি সম্প্রতি একটি দীর্ঘ বৈঠক করেছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের নেতৃত্বে হওয়া এই বৈঠকে অংশ নেন চারজন গুরুত্বপূর্ণ বিশেষজ্ঞ— যাদের মধ্যে ছিলেন ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শংকর মেনন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু। বৈঠকটিতে দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভারতের ‘হারানো অবস্থান’ পুনরুদ্ধার করার কৌশল নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিশেষজ্ঞ ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ‘সামনে এগিয়ে নেয়ার’ জোরালো সুপারিশ উঠে এসেছে।

বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের ইতিহাস, ভাষা ও সংস্কৃতির একটি গভীর যোগসূত্র রয়েছে। এই সম্পর্ক নষ্ট করা উচিত নয় বরং তা আরও জোরদার করতে হবে। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে পাকিস্তানের মতো শত্রুপ্রতিম সম্পর্ক ধরে দেখা অনুচিত। বরং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা বাড়ানো এখন বেশি জরুরি।

এই আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বলা হয়। সংসদ সদস্যরা বলেন, যেহেতু বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির একটা বড় অংশ দুই বাংলার মানুষের মধ্যে মিল রয়েছে, তাই পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কূটনীতি চালু করা যেতে পারে। এ ধরনের উদ্যোগ দুই দেশের সম্পর্ক সহজ করতে সাহায্য করতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখা হয়েছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। বলা হয়, ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্টে যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন, তখন থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। সেই সম্পর্ক কীভাবে আবার মেরামত করা যায়, তা নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হয়। সংসদ সদস্যদের একজন বলেন, সবাই আন্তরিকভাবে বাংলাদেশকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চান এবং সম্পর্ক ঠিক করতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন।

এছাড়াও, বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা, অবৈধ অভিবাসন ও সাম্প্রতিক কুনমিং বৈঠক নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য এখনই সময়। সেই লক্ষ্যে তারা কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সব পথ খোলা রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ