Views Bangladesh Logo

চাঁদাবাজি থামাতে গিয়ে পুলিশও যদি মার খায় জনগণ যাবে কোথায়?

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুরবস্থা নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে দেশ হয়ে গেছে ত্রাসের রাজত্ব। চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই-ধর্ষণ, খুন-চাঁদাবাজি বেড়েই চলেছে উত্তর-উত্তর। ছিনতাইকারীর ভয়ে এখনো দিন-দুপুরেও খোদ ঢাকা শহরেই কেউ একা বের হতে চান না। মফস্বলের অবস্থা তো আরও নাজুক। শোনা যায়, গ্রামাঞ্চলে সন্ধ্যার পরই সবাই বাড়ি ফিরে আসেন আর দুয়ার লাগিয়ে বসে থাকেন। আর হবেই-বা না কেন, সঙ্গে কিছু না পেয়ে জামা-কাপড় খুলে নেয়ার মতো ঘটনাও তো ঘটেছে।


এর মধ্যে গত ৪ অক্টোবর (শনিবার) সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, নরসিংদীতে যানবাহন থেকে চাঁদা তোলার সময় আটক দুই ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বেলা ১১টার দিকে নরসিংদী পৌর এলাকার আরশীনগর রেলক্রসিং সংলগ্ন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত নরসিংদী সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজধানীর রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে আরশীনগর মোড়ে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে চাঁদা আদায়ের সময় দুজনকে আটক করে পুলিশ। আটক দুজনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালান একদল লোক। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা হয়।


এতে সহজেই অনুমান করা যায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা নাজুক। পুলিশ এখন আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অন্যায়ে বাধা দিতে গেলে পুলিশও শিকার হচ্ছেন দুর্বৃত্তকারীদের হামলায়। বস্তুত গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই পুলিশকে এক প্রকার নিষ্ক্রিয় বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এর সুযোগ নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা; কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে তা দেশের জন্য মঙ্গল হবে না। প্রশাসনকে অবশ্যই দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে এবং শাস্তির আওতায় আনতে হবে। হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেন, হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে আমরা শিগগিরই জানতে চাই। সরকার যদি গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনার বিচার না করে তাহলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন- চাঁদাবাজি থামাতে গিয়ে যদি পুলিশই মার খায় তাহলে জনগণ যাবে কোথায়? কঠিন বিচার না হলে এ ধরনের অপরাধীরা আরও উৎসাহ পাবে এবং সাধারণ জনগণ তাদের হাতে জিম্মি হয়ে থাকবে।

মতামত দিন

মন্তব্য করতে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে

ট্রেন্ডিং ভিউজ