ইনশাআল্লাহ ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরব: তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই দেশে ফেরার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেছেন। বিজয় দিবস উপলক্ষে লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, 'ইনশাআল্লাহ, আগামী ২৫ ডিসেম্বর আমি দেশে ফিরে যাবো। দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর আপনাদের সঙ্গে কাজ করেছি।'

দেশে ফেরার সময় লন্ডনের বিমানবন্দরে যেন কোনো ধরনের হট্টগোল না হয়- সে জন্য নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বিমানবন্দরে না যাওয়ার অনুরোধও জানান তিনি।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে তারেক রহমান বলেন, প্রায় দুই মাস পর দেশে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণকে সচেতন করা এবং তাদের সামনে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আমি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, আমি আছি পরিকল্পনার মধ্যে।' শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি অতীতে সংকটময় সময়ে দেশকে খাদ্যসংকটের কিনারা থেকে উদ্ধার করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনেও জনগণের সমর্থনে সরকার গঠন করতে পারবে বিএনপি। তবে সামনে পথ অত্যন্ত কঠিন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই কঠিন পথ অতিক্রম করতে সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি দলের ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার ও উন্নয়ন কর্মসূচির বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেন।

তারেক রহমান জানান, দেশের অসচ্ছল পরিবারের জন্য মাইক্রোচিপ সংযুক্ত ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করা হবে, যা পরিবারের গৃহকর্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ‘কৃষক কার্ড’ চালুর পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

শিক্ষা খাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ জোরদার, মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি। সরকার গঠন করলে শিশুদের জন্য ‘কুঁড়ি’ টেলিভিশন অনুষ্ঠান নতুনভাবে সাজানো হবে এবং সেখানে খেলাধুলা অন্তর্ভুক্ত করার কথাও জানান।

এ ছাড়া প্রবাসীদের জন্য ভাষা শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবায় রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া এবং স্বাস্থ্য খাতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ চালুর পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, এসব উদ্যোগের সুফল তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যেই জনগণ পেতে শুরু করবে।

কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আয় বাড়াতে সরকারি সহায়তা, ছোট ওয়ার্কস্পেস, ফ্রি ওয়াই-ফাই সুবিধা এবং ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলেই একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।

যুক্তরাজ্য বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব খসরুজ্জামান খসরুর সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহিদুর রহমানসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।

উল্লেখ্য, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছিল। সর্বশেষ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরছেন।